শীলা বিশ্বাস
পাথুরে চার্চ ও হৃদয় ভাষা
ব্যস্ততা থেকে সময় চুরি করে সমাধিক্ষেত্রে
জব চার্নকের পাশে কিছু সময় বসে থাকি। রক্তকাঞ্চন ফুল লেডি ক্যানিং-এর কানে কানে কি
বলে যায় সে আমি বুঝি না। চার্চে ট্যুরিস্ট আসার অপেক্ষা না করেই জন পূর্তির আঙুল পাইপ
অরগানে ক্যারলের সুর তোলে। ‘দ্য লাস্ট সাপার’ থেকে জুডাস নেমে এসে যীশুর প্রার্থনায়
বসে ! কাচের বাক্স থেকে লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংসের শূন্য চেয়ারটি বুঝি মাঝে মাঝে দুলে ওঠে । মুঠো ফোনে কাজের ঘন্টা বেজে
উঠলেই লাল মোরামের রাস্তায় ঝরে যাওয়া লাল ফুল হয়ে পড়ে থাকে আমার খোলা হৃদয় ও অব্যক্ত
ভাষা। প্রকৃতি পাঠক হয়ে সে ভাষা কুড়িয়ে নেয় ।
গাছ ভাষা
এখানে একদিন জলপাই রঙের গ্রাম ছিল।
তখনও মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের সবুজ খসে পড়েনি । এখন যুদ্ধের রক্তচিহ্ন নিয়ে
হাওয়া উড়ে বেড়ায় অন্ধগলিতে। গুপ্তহত্যার ইতিহাস
লেখা গাছের পাতারা কুঁকড়ে আছে। অশ্মখুরে ভস্ম ওড়ে; ধীবরের জালে উঠে আসে মানুষের অস্থি
। বিজ্ঞাপনের ফ্লেক্স টাঙানো অন্ধদের রাস্তায়
। জিভকাটাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া মাইক্রোফোন। সবুজের হাহাকার পৃথিবী জুড়ে। সৈন্যদের ব্যুহ ভেদ করে চলে যাচ্ছে শ্যেল। আবার
সবুজ ফিরিয়ে আনতে গ্রাম ছাড়িয়ে দেশ কালের সীমানা ছাড়িয়ে গাছেরা ঝরে পড়তে চায় সভ্যতার বুকে । চলো আমরা গাছ ভাষা
শিক্ষা করি। সে ভাষা পড়তে শিখুক আমাদের সন্ততি ।
দ্বিপদীগুচ্ছ
(১)
হর্সপাওয়ারে কাজের হিসাব লিপিবদ্ধ
করলে
ধ্বনি ও দ্যোতনা ভুল হয়ে যায় ।
(২)
দহন ও দোহন প্রণালীতে ঢেকে যায় কারুকৃতি
তবু মন উদার সঞ্চয়ী
(৩)
করোটি ও কমণ্ডলু সাজিয়ে বসে আছে
সাধক
ঈশ্বরের মুখ ঘোরানো
(৪)
বর্শা ও বর্ষায় হরিণীকে এক ফ্রেমে ধরেছেন চিত্রকর
ইহা দৃষ্টিবিভ্রম মাত্র