শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

অভিজিৎ পাল


অভিজিৎ পাল

মিথ্যে ১

ডাক্তারবাবু, আপনি নির্ভরযোগ্য নন।
একটার পর একটা ফাঁদ পেতে বসে আছেন
আমরা মূর্খ হাসির মতো গর্তে প্রবেশ করছি।
আপনি দেখছেন, একটা সুতলি দড়ি
ঝুলিয়ে দিয়ে বলছেন, “উঠে এসো
আমি তোমাকে বাঁচানোর জন্য বসে আছি।”
হাত বাড়াচ্ছি, প্রাণপণ চেষ্টা করছি এইটুকু
দড়ি ধরে উপরে উঠে আসার...
ডাক্তারবাবু, আপনি প্রতারক।
তবু বিশ্বাস করি আপনাকে উপায়হীন হয়েও।
আর আপনিও বিশ্বাস করুন,
আমি একদিন উঠে আসব সদলবলে
দাড়িয়ে বলব আমরা বেঁচে আছি বীরদর্পে!







মিথ্যে ২

সময়ের স্রোতে ভেসে যাব জানি
তবু শুনে রাখুন, আবার ফিরে আসব
মৃত্যুহীন ছত্রাক যেমন রক্তবীজের মতো বাড়ে।
হাজার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করুন, তবু বাঁচব।
আপনি দেখবেন আমার প্রাণশক্তি
লজ্জা হবে আপনার।
যে অন্ন সন্তানের মুখে তুলে দিচ্ছেন তাতে
আমার শরীরেরই রক্ত লেগে আছে
আপনি সম্পূর্ণ সুস্থ তবু দেখতে পাচ্ছেন না







মিথ্যে ৩

সময়ের বেড়াজালে প্রক্ষেপ কিছু নেই
প্রক্ষিপ্তও কিছু নেই
অসময়ের মধ্যে অসময় ছাড়া আর সব মিথ্যে
অজস্র হৈচৈ, তুমুল কোলাহল
হৃদ্যতা, আলিঙ্গন, চুম্বন, সঙ্গম, অনীহা
এতশত সব কিছুর পরেও
জেনে রেখো দিনান্তে যে মানুষটি
একা বসে থাকে,
তার থেকে একাকী পৃথিবীতে আর কেউ নেই।
বিরাট শূন্যের মাঝে বসে থাকে
ছোট ছিদ্র সম বিন্দুটি সেই আমিই






মিথ্যে ৪

প্রবঞ্চনা করিনি, বাসিনি মিথ্যে ভালোবাসা
অজস্র রাতের পর সুখটুকু পুঁজি করে
বসেছিলাম হারিয়ে যাওয়া সম্পর্কগুলোকে
একে একে খুঁজে পেতে, পাইনি সব
মুখগুলোও হারিয়ে গেছে কবে।
স্মরণের সরণী বেয়ে গড়িয়ে নামতে থাকে একটু
ঝাপসা হয়ে আসা কিছু মুখ
ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি ওদের
সব ভোলা গেলেও সুখস্মৃতি এখনও ভুলতে পারিনি
একে আমার দুর্বলতা বলেই না হয় জেনো
সবটুকু সত্যি মেনে নিতে চাইলে
বাঁচা বড় দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়!