পৃথা
রায় চৌধুরী
নাগরিক
অভিমান
যে শহরের
গেট বন্ধ হয়ে গেল, তার বাইরে শুধু একাঘর। সেখানে স্নানকালে খানিক থেমে যাই হরিণের পানদৃশ্যে।
জলেদেরও নিজস্ব গান আছে, সেখান থেকে উঠে আসে প্রেম।
জলে ফাঁড়া
আছে বলে, শরীর ডুবিয়ে দেবার আগে খুঁজি গাছ আর আকাশ। তরল গাছ, তিরতিরে আকাশ দুহাতে সরাতে
সরাতে ডুবিয়ে দিই তার ভেতর ক্ষতসর্বস্ব কাঠামো।
বহুকাল
জোনাকি বা তারারা আসে না। গন্ধরাজ, জেদে ভেঙ্গে ফেলে আলগা আলস্য। বিকেল কিভাবে দেখতাম
না বলো তো? সন্ধ্যে হলে আবার খুলে বসি নিজের ভাঁজ... আনকোরা যা কিছু।
চেরিফলের
লাল ঘৃণ্য করে তুলেছি, বারোয়ারি চাঁদ!
আফ্রোদিতি
স্নানকালে
বাসী কাপড় ছেড়ে ফেলি। জলে মেঝে ঝিকিয়ে উঠলে আর নিজেকে দেখি না। বাইরের নারকোল ঝিরিছায়াকেও
সরাতে চাই শার্সি থেকে। এমনভাবে জল পুড়িয়ে যেতে পারে, তার কালক্ষণ ধার্য করে দিলো কে?
শ্যাম্পুর
আধখালি কৌটো ঝাঁকিয়ে ছুঁড়ে ফেলি ঘনিয়ে আসা দুটো চারটে চুলের রূপো। কি এমন স্লোগান ছিলো
মিছিলের, যাতে বন্যার মতো চোখে উঠে এল প্রোগ্রেসিভ লেন্স! বাবার কথার আর কখনো অবাধ্য
হবো না, একবার ফিরে যাই সেই বাধ্যমন্দিরে।
ঠিক জানা
নেই, ক'হাত দূরত্ব থাকলে তোমাদের বন্ধু ভাবা যায়। লিঙ্গভেদে গোনা হোক হাতের দূরত্ব,
ঠিক কতো ইঞ্চি হাসলে তাকে প্লাস্টিক বলে বুঝে ফেলবে না কেউ? মেটালিক কাস্তে আকাশ ফালা
করলে, শুরু রোম্যান্সের পয়লা ধাপ।
বেড়াবিনুনিতে
বা কলাবিনুনিতে ফিরতে চাইলে এখন বাধা দেয় বড়ে গুলাম আলি। বিরহ নিতে নিতে ভালোবেসে ফেলি
কোনো মিথপ্রেমিককে। ঝিনুকের খোলসে বা আয়নায়, ডলফিন বা রাজহংসীতে আমাকেই দেখেছিলে তুমি,
দীর্ঘশ্বাস।
সেইসব
এইসব দিন
সেদিনের
পর আর খোঁজ করা হয়নি,
ভালো আছো
জুলাই বাবদ রাফ খাতার আঁচড়?
দুলে দুলে
মুখস্থ করি তোমার বিন্দুবিসর্গ,
কাশের
স্বপ্ন দেখলেই এগিয়ে আসে বাবা
আমার বয়োবৃদ্ধ
রেখায় তুলে দেয় বালিকারঙ
ব্রেখটের
হাত ধরে নিয়ে গেছি মোমঘরে,
মসৃণতম
মঞ্চে তুলে ধরছি ছেঁড়া ছেঁড়া নখের বাখান।
বুঝে হাঁটো
বুক
গুণে রাখো
সুখ
পাইন আর
অলিভ তুলে রাখি এক বয়েমে।
ধনুকের
ছিলায় বেঁধেছি রাশিচুল
টুলটুলে
শিশিরফোঁটার নথ।
...ওঁ
শংভবে নমঃ
ওঁ পিনাকিনে
নমঃ
ওঁ শশিশেখরায়
নমঃ...
বৃষ্টি
হাসি, ঝরে পড়ে বিষ।
বাজারের
থলে হাতে
খুঁড়ে
ফেলেছি কাঁটাগাছের ঘরবাড়ি।
অবিশ্বাসী
মাস্তুলে বিলম্বিত ধারাপাত কষি।
নধর রাত,
আলেয়ার শরীরে
ফুটে ওঠে
পদ্মরাগমণি।
ওরে ভিন
বুকের সুর
আমার শরীর
ভরা পাখি
এই নিষেধের
সাদা
সাদায়
মরণ ধরে রাখি।
ল্যান্ডস্কেপে
আফিম মেশাতে মেশাতে
আতর আর
মারিজুয়ানা হয়ে বসেছি
চারপ্রহরের
পুতুল।