বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
প্রতিকৃতি
এই যে আঁচিল তিল কাটাছেড়া দাগ
এসব দেখেই আমাকে রেখেছো মনে?
কালো রঙ পাঁচ ফুট তিন
এসবই আমার চিহ্ন আত্মপরিচয়
তার বেশি কিছু নই আমি ?
নীল সার্ট সাদা ম্লান
প্যান্ট
বুকপকেটে গিফট পাওয়া সস্তার কলম
চোখে কালো সানগ্লাস নির্বাসিত রোদের ঠিকানা
এসব ক্ষতের মাঝে কতদূর আলো পড়ে
তিলমাত্র অংশতও যায় কিছু জানা ?
পাতালঘর
এ শহরে বিষাদ নেই
কোন
বেদনার ধুলোবালি
কেউ যেন উড়িয়ে দিয়েছে এক ফুঁয়ে
চারদিকে খুশি খুশি মুখের মিছিল
প্লাষ্টার খসে যাওয়া বাড়ির গায়ে
দাঁত বের করা হাসি বিজ্ঞাপন ....
দেখো কেমন সজীব
চারপাশে ম্রিয়মাণ হয়ে যাওয়া
রাগ অভিমান প্রতিবাদ আর অসন্তোষ থেকে
ছিটকে আসছে কেবল হাসির টুকরো।
বাজ পড়া নিম গাছে জীবনের আশ্চর্য নিয়তি
গোরুর গাড়িতে চেপে
সব দুঃখ চলে গেছে
নিরুদ্দেশ আলোর কিনারে।
এই সচিত্র হাসির আড়ালে এক পাতালঘর
যেখানে জমা হয়ে উঠছে কালো ধোঁয়া
যেখানে মুদ্রিত হচ্ছে অপ্রকাশ্য ভয়
এক আশ্চর্য সকালে
শক্ত হাতে বন্ধ করা
পাতালঘরের দরজা খুলে যাচ্ছে ঝড়ে।
এই ঝড় দীর্ঘশ্বাসের যোগফল।
শিলালিপি
অপমান থেকে কেউ ফিরে আসছে ওই
তার চোখে দীঘিটির ছায়া
যে দীঘি শান্ত কিন্তু নিরুত্তেজ নয়
জলভারে ঢেউ দুলে উঠে
গরম বাতাস এসে ছুঁয়ে যায়
ঠোঁট জিভ চোখের উত্তাপ
ঝড় হয়
সোল্লাসে লাফিয়ে
ওঠে তামাদি আক্রোশ
কিন্তু কী শুদ্ধ
তার হজমক্ষমতা
সমস্ত চিবিয়ে নেয় মতিচ্ছন্ন সব বিরুদ্ধতা
তবু কোন শিলালিপি
লিখে রাখে
উপেক্ষার হিসেব নিকেশ।