মন্দিরা ঘোষ
আভার্ত পাজারি
পঞ্চদশ শতকের সমসময়কাল।
সারা তুর্কীস্তান জুড়ে তাতার দস্যুদের অত্যাচার।
সেখানে মানুষ কেনা বেচার বাজার
আভার্ত পাজারি বা দাসবাজার।
পণ্য যেখানে মানুষ।
নগ্নতার আঁতুড়ঘরে শরীরে প্রাইস ট্যাগ ঝুলিয়ে
আলু পটলের মত নেড়ে চেড়ে প্রত্যঙ্গ পরীক্ষা।
পাশ হলে ঠাঁই হয়
কোন মহামান্যের সেবাঘরে।
শিশু থেকে কুমারী যুবতী প্রৌঢ়া টিপে টিপে
স্তন, যোনি
কিংবা নৃশংসতায় ডুবিয়ে দিত হাত মুখের ভেতর ।
পারলে খুবলে নেয় হৃৎপিণ্ডটা।
বাদ যায় না কেউ।কিছুই।
মানুষের বেচাকেনা মানুষেরই হাতে হাত রেখে।
হুররেম বা প্রিয়তমা
তাতার দস্যুর দল রোহাতিনের গোলাপ
তুলে এনে রেখেছিল দাসবাজারে।
রূপমুগ্ধ যুবরাজের পার্ষদ ইব্রাহিমের চোখ
কোন ভুল করেনি।নষ্ট করেনি সুযোগ।
খুশি করার জন্য সে তৎক্ষণাৎ সেই গোলাপ
উপহার দিয়েছিল যুবরাজ সুলেইমানকে।
ইস্তানবুলের হারেমে আগুন হয়ে জ্বলে ওঠে
রোহতিনের আশ্চর্য গোলাপ আনাস্তাসিয়া!
সুলেইমানের অন্তপুরের হুররেম!
আনাস্তাসিয়া
আনাস্তাসিয়া! রোহাতিনের আশ্চর্য গোলাপ!
কার্পাথিয়ান পর্বতমালার কোল তোমাকে
নরম আশ্রয়ে মুড়েছিল।
তাতার দস্যুদের নিষ্ঠুরতা ছুঁতে পারেনি
তোমার শরীরের আরব্য জ্যোৎস্না।
আভার্ত পাজারি
চোখ নামিয়েছিল তোমার পবিত্রতায়।
সেদিন ওদালিস্কের দুহাতে ছিল বিষণ্ণতার বিষ
আর প্রতিবাদের সুরাপাত্র।
তোমার নগ্নতার সৌন্দর্যে কুর্ণিশ
জানিয়েছিল তুর্কিস্তানের
হামাম।
সুলেইমানের হুররেম তুমি রোক্সেলানা!
ওটোমান সাম্রাজ্য তোমার পদতলে।
ইস্তানবুলের ইতিহাস তোমায় ছুঁয়ে আছে রোক্সেলানা!
প্রিয় হাসেকি সুলতান।