সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯

বিকাশ চন্দ


বিকাশ চন্দ

জন্ম ছায়া  

আমরা সবাই একলা কখন একার অংশনামা
অদৃষ্ট কিছু শক্তি প্রতিদিন গলা ধাক্কা দেয়
স্বভূমি জীবন জীবীকা এলোমেলো
আড়ালে হাজারো যন্ত্রণা কেড়ে নেয় উৎসব কলরব।

হাতড়ে বেড়াচ্ছে পুরনো জন্ম ঠিকুজি দলিল দস্তাবেজ
কোথাও লালন ফকির ধরে আছে একতারা
বেপথু চৈতন্য দু'হাত তুলে দিব্যি দেশান্তরী
দেশে দেশে যার ঠিকুজি কুলুজি জানে রবীন্দ্র নজরুল।

কে জানে কখন ঘরের ভিত ভাঙে অজানা স্রোত
হঠাৎই ধমনী ছেঁড়ে বাস্তুহারা জমিতে জন্ম রক্ত বোধ
পেছনে দেয়ালে ঠেকেছে জীবন সামনে কাঁটাতার বেষ্টনি
বাকি আছে শুধু কোটি কোটি মানুষের জন্ম ছায়া খোঁজা।

বাম দিকের বুকে মা ডান দিকে বাবা অন্যসব পূর্বপুরুষ
কিভাবে বোঝাই এই দেশের মাটিতে আজ দত্তক জীবন
হাওয়া জল মাটি পর্বত মেঘ মায়া বৃষ্টি আলিঙ্গন
পুরনো সমূহ আখর জড়ানো স্বভাবে জীবন মৃত গর্ভিণী মা।






ডাক

অপার নীলিমায় কিছু গান কিছু সংলাপ
কিছু সবুজ মাথা তুলে থাকে,
কিছু ফুল দোলে উদার শাখে---
মনের আড়াল ভেঙে গাছে গাছে পাখির আলাপ।

কখনও রাত্রি নামে দিনের আড়াল জাগে
দোপাটি রঙের কথকতা সব,
যে জানে সে জানে রঙের উৎসব
দুঃখ কিংবা আনন্দ বোঝা যায় না জলের দাগে।

এদিক ওদিক খুনসুটি সব তবুও দৃষ্টি মোহন
শিশির বিন্দুর নরম রূপের
ঘুম ভেঙে যায় অন্ধকূপের
অরূপ সময় রতনের ঘরে না জানে সম্মোহন।

খণ্ড খণ্ড তুষার শুভ্র ভেসে যাচ্ছে আকাশে
কিছু ক্লান্ত মুখ খুঁজেছে মায়া,
কিছু গাছ যেন জলতল ছায়া
ত্রিনয়নী জানে নিলকণ্ঠ পাখির ডাক আসে।






পরাধীন পোট্রেট

নরকের দরজা চেনে না দেখা সকল শকুন
শুকনো নদী চেনে ভাঙ্গা সম্পর্কের সাঁকো---
সম্প্রতি বিপ্লব শেষ কিছু আছে ধ্বংংস অবশেষ,
সমকালীন রাজা রানি চোখে মুখে তৃপ্তির হাসি
মাখো মাখো, ইজেলে ছড়ানো কিছু দাগ চেনা সকালের
ভেসে ভেসে উড়ে যায় অজস্র ছায়া শরীর।

ক্ষয় রোগে আবিষ্ট বিষ যত দায় অমৃত সুধা
মাঠে মাঠে সুপুষ্ট রবি খন্দ
ক'দিন আগেই এসেছে অপরিচিতা আধো ঘোমটা মুখ
বোঝেনা তেমন জলজমি শস্যের অসুখ
অবাক চোখে জল ছুঁয়ে নেচে যায় জল ফড়িং
ভালোবাসায় উড়ে যায় সমুদ্র শালিক আর শঙ্খচিল
ছিঁটে ফোঁটা নোনা জল শুকনো মরা গাঙে
শুয়ে আছে নৌকা ফাঁকা খোল।

ধুলো মাটি পথ জানে ইতিহাস যাত্রার কথা
সকল অরন্যের গাছ জানে বর্ষা মুখ রোদন কাল
ঘরবার সচেতন পা কোঁচড়ে উন্মুখ পার্বণ
শ্রাবণী পূর্ণিমা জানে ভাদুরে কোটাল উপক্রম
দু'চোখে আনন্দ স্নান যাত্রা জানে সে ঘরনি
অবিশ্বাসী রাত তবু দিনের চোখাচোখি
হাতে হাত দু'জনে জড়িয়ে পুড়ছিল দরপোড়া দুপুর
ওড়াবে ঘূর্ণি সময় ভরা বর্ষা জলছবি পরাধীন পোট্রেট।