সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯

চন্দ্রানী মিত্র বোস


চন্দ্রানী মিত্র বোস

আজকাল ক্ষমা চাইতে লাগে বেশ..🙏

সংজ্ঞা বদলায় জীবনের ধাপে ধাপে ওঠে ..
অজস্র ভুলে ভরা সেই ছোটবেলা
উঁকি মারে যখন তখন ...
মাথা নিচু চোখে জল একটা শ্যামলা মেয়ে
স্মৃতির পাতায় দেখি অহরহ আজকাল
কত ভুল ....
অথচ আদরে কোলে টেনে নেওয়া সেই কিছু হাত
উঁকি মারে যখন তখন!

ভুল আর ঠিক ...
সংজ্ঞা বদলায় জীবনের ধাপে ধাপে উঠে
আজকাল ঠিক করা একরাশ কাজ
নিজেরাই অপেক্ষা করে ...
ফলাফল জানে ওরা!
তবু মনে মনে প্রতিবার আশা
যদি বলে দেয় কেউ...
কতটা ভুল বা কতটা ঠিক!!

ছোটবেলার একরাশ মেডেল ওই পুরোনো
আলমারি থেকে উঁকি মারে যখন তখন...
সংজ্ঞা বদলায় জীবনের ধাপে ধাপে উঠে ..

নাঃ ... আর অপেক্ষা করি না এই আমি..

আজকাল নিজেই নিজের মূল্যায়ন করি ..
পারা আর না পারার পারদ চড়ে... ওঠে ..
আমি খুঁজি বালির স্তূপে এক পরশ মণি
যদি ছুঁয়ে নেয় আমার পারা আর না পারা কে
বলে দেয় একবার ...
ঠিক ভুল নয় ...
তোমার চেষ্টাকে করি সেলাম!

 সংজ্ঞা বদলায় জীবনের ধাপে ধাপে উঠে!

কারণ ... সেই ক্ষমা না চাওয়া দুর্বিনীত উদ্ধত
শ্যামলা মেয়েটা ..
ভুল না করেও ক্ষমা চেয়ে নেয় বেশ!!
তবু আজও নিজের অজান্তে বালির স্তূপে পরশমণি খোঁজে যখন তখন!!

অলক্ষ্যে হাসে কেউ ...





আমার একটা তুমি চাই

সেই শেষ বিকেলে আমিও একটা চিঠি লিখেছিলাম ..
পড়ন্ত সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত ওই দূরের গাছটায় ..
তখন একে একে ফিরছিল নাম না জানা অনেক পাখি ..
আমি সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালিয়ে তুলসী তলায়
হাত জোড় করে চেয়েছিলাম তোমায় ..
বৃষ্টির অজস্র রূমঝুম জলের ফোঁটা মিশে
গেছিলো সেদিন আমার চোখের জলে ...
আমি বন্ধ চোখে ফিসফিসিয়ে বলেছিলাম
আমার অন্তরাত্মাকে...
শুনছো তুমি!!
আমার একটা তুমি চাই!!

শাঁখের আওয়াজ আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে
ওপরে উঠেছিল বাতাসের বুক চিরে
তুমি, তুমি, তুমি আমার একটা তুমি চাই..

কিন্তু জানো ফিরে আর আসে নি তো কেউ!
আজ এক যুগ পরে একরাশ কাশ ফুলের মাঝে
শিশিরের ছোট ছোট মুক্তো হাতছানি দিলো আমায় ...
আমি তাদের ছুঁয়ে চুপিসারে বলে চলে এলাম
" শুনছিস তোরা আমার একটা তুমি চাই "
ওরা মিলিয়ে যাবার আগে দিয়ে গেলো তোমার ঠিকানা ...

শেষ বিকেলে আমিও একটা চিঠি লিখেছিলাম
শেষ বিকেলে আমিও একটা তুমি চেয়েছিলাম
হাতজোড় করে আমার অন্তরাত্মা কে বলেছিলাম
শুনছো তুমি
"আমার যে একটা তুমি চাই!"

কি খুশী আমি আজ তাই
আবার সেই যুগের প্রতীক্ষা ...
যুগে যুগান্তরে সম্পর্কের সিঁড়ি বেয়ে উঠে
এমনই এক নির্জন সকালে ইচ্ছে নদীর পাড়ে
দাঁড়িয়ে আমি
বারে বারে চেয়ে নেবো শুধু তোমাকে!

থাকবে তুমি অন্য পাড়ে!
চোখের ছায়ায় আমার প্রতিচ্ছবি!
আর ফিসফিসিয়ে বলে দেবে তুমি
"আমার একটা তুমি চাই!"
ইচ্ছে নদী বয়ে যাবে মাঝখানে ..
দু পাড়ের মিলন হবে শুধু মনে মনে ...







সে তো আমি নই ...

তুমি সরে যাও আমার এ জানলা থেকে বন্ধু!
চলে যাও সেই তোমার পছন্দের দ্রুত গতিতে
আমি তো সে নই  যাকে তুমি চাও
তোমার খোঁজায় আমি তো নেই ..
তুমি তো খোঁজো তাকে যে
 রক্ষা করবে তোমায়, বাঁচাবেও হয়তো!
তুমি ভুল বা ঠিক যাই হও না কেন ...
সেই একজন যে তোমার জন্য সব বাধা পেরিয়ে
নতুন দিগন্তের হদিশ দেবে ..
কিন্তু আমি যে সে নই ... বন্ধু
না, না, না সে আমি নই
আমি তো সে নই,
যাকে তুমি আজও খোঁজো সবসময়..বন্ধু!

ধীরে ধীরে সরে যাও..
চলে যাও ধীরে ওই সুদূরে...
আমি তো সে নই যাকে তুমি খোঁজো..
আমি তো শুধু ব্যর্থ করবো তোমার জীবন
তুমি বলেছিলে তুমি কাউকে খোঁজো আজও..
যে প্রতিশ্রুতি দেবে কোনদিন না ছেড়ে যাওয়ার..
সে তোমার কল্পনায় চোখ বন্ধ করে নেবে
হৃদয়ে বসিয়ে হৃদয়ের দরজাও!
যে বারবার মরতে চাইবে শুধু তোমার জন্য
কিন্তু আমি যে সে নই ...বন্ধু!
না, না, না সে আমি নই!
আমি তো সে নই যাকে তুমি আজও খোঁজো সবসময় বন্ধু!

বিদায় নিয়ে মিলিয়ে যেও ওই রাতের মাঝে..
ভেতরে সবকিছু জমাট বাঁধা পাথর আজ!
আর কিছু যে নেই সাড়া দেবার
আর আমি তো একাকীও নই ..
তুমি বলেছিলে তুমি তাকে খোঁজো..
যে প্রতিবার হাত বাড়াবে ফুলের সন্ধানে তুমি পড়ে গেলে...

সে হবে শুধু তোমার সারা জীবনের ভালোবাসা
আর কিছু তো নয় ...
কিন্তু আমি যে সে নই বন্ধু
না, না, না সে আমি নই
আমি তো সে নই যাকে তুমি আজও খোঁজো
সবসময় ...বন্ধু!

রামধনুর লেখনীতে চন্দ্রানী