গৌতম কুমার গুপ্ত
উপসংহার
এই তো রেকাবে ছিল আদরে
আমাদের অভিরুচি
পায়েসের বীতরাগ ঈষৎ পলান্ন
অবিমিশ্র আনন্দ
সারা অন্ন জুড়ে ছিল মা মা স্নেহ উপাদেয় ঘ্রাণ
প্রিয় রন্ধন জুড়ে ছিল রকমারি,শান্তি ও সুখ
অতি সন্তান সন্ততি হয়ে উঠি তারপর
কখনো বীরদর্প কখনো বাগাড়ম্বর
নিজেকে দেখি বড়ো বেশী প্রিয়তম মুখে
চুলে আলবেট কখনো আমিরী সংলাপ
অতি শাহরুখ কখনো
বা
ঢেকুরে বিষাদ তুলি গহ্বরে কান্না জমাই
চোখের জলে মিশিয়ে দিই বৃষ্টিহীন মেঘের ক্লান্তি
উপসংহারে পড়ে থাকে কর্কশ গ্লানি
দুরূহ ভোগের ছিন্ন ক্লিন্ন রক্তপাত
এ তো আমাদেরই না চাওয়া প্রিয় উপার্জন
জন্মদিনে
চুলে এঁকেছি রূপান্বয় বসন্ত
জন্মদিনে খুঁজি প্রাঞ্জল পেলব
পাই না খুঁজে ফাটাফুটি ক্ষেত্রজ মুক্তাঞ্চল।
আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখি কষ্টার্পিত শ্রাবণ
ভাদরে ছিন্ন হল পরিযায়ী মুখ
শ্রাবণ ফেরে না কেন, মোহে থাকি আনমনা।
আয়না দেয় ফিরিয়ে তবু যাই বারবার
স্ফটিকস্বচ্ছতায় লেগে আছে বর্ষজীবী ঘামজল
মুছে দিতে চাই, হয় না শুভ্র সুষম।
বিনোদনে বাসন্তী টিপ খুঁজে দেখি কোথাও
মলয়চন্দনে অনাঘ্রাতা কেউ থাকে অকালে যদি
ফেরাবো না যেটুকু আছে সঞ্চয় অবচয়।
তুলে রাখি আস্তিনে পকেটের গোপন দেরাজে
আমি হয়ে জুড়ে থাকি আজ স্মার্ত যূথচারে।
সম্পর্ক
প্রশ্নের সামনে দুজনে দাঁড়িয়ে
তুমি উত্তর সাজালে,আমিও
কোনটা মনঃপূত নয়
তুমি জানো না, আমিও না
আমি বললাম আলো
তুমি বললে অন্ধকার
কখনো বললে পূবে
আমি বললাম পশ্চিমে
প্রত্যেকটা উত্তর আজ বিপরীত
পথের দুই বিষম মেরুতে
ছায়ার কাটাকুটি
কিছুতেই সঠিক উত্তর মিলছে না
ওদিকে সূর্যাস্ত হয়ে এল
পরাধীন
পথের পিচ্ছিলে পাতা ডোবা জল
নিমগ্ন হাঁটে চাঁদ ও বায়ু
প্রাঞ্জল হয় স্বকীয় রেণু ইতরবিশেষে।
এখনও ফেরি করে দুটো রুটি, গুড়জল
পায়ের নীচে কখনো নৃত্য ফোটে না
প্রতিবন্ধ পায়েল, কন্ঠ কুশলী নয়।
শতাব্দী শেষে শাসন রেখেছে জিম্মা
ঋজু হল না মেরুদন্ড
স্বেদ ও শ্র্ম বেঁকেচুরে আছে।
জব্বর জাবর কাটি বিচালী খইলে।
কেত্তন
চামড়া দিয়ে অ্যালো ভেরা ঘষে নিলে
গোলাপজলেও চমকে গেল বার্ণিশ
ঢ্যামনা রঙয়ের রকমফের কত গাত্রে
মিলছে কই এক এক্কে শরীরী নামতা?
ধারাপাত গুনে গুনে বলে দিতে পারো নাকি
গতকাল পর্যন্ত সহস্র কেতা ছিল গোঁফের তায়ে
এখন পুং সেজেও ফক্কা নিনাদ বৃন্দ বাতাস
নিজের বেলা অক্কা বাজালে টাইমপিসে
এখন পেঁচক চোখে নিশাচর প্রাণপতঙ্গ
প্রহর গুনছে অবেলার গৌরনিতাই কেষ্টরাধে
ধূলোট জমছে দ্যাখো অলিগলি বোল হরিবোল