রত্নদীপা
দে ঘোষ
খণ্ডন
ভব বন্ধন
৫১
ঈশ্বর
এক স্বভাব-বালক
দুষ্টু,
মহাচঞ্চল ছেলেটি। তার কোঁচড় বোঝাই স্বাতীতারা, বাতিতারা ...
আরো কতো
তারাপ্রদীপের দ্যুলোক। কখন যে তার মন হবে কার ওপরে কেউ জানে না। সে কি নিজেই জানে?
কখন কোন ঝুলিতে সে ঢেলে দেবে রত্নরাজি ... না চাইতেই ঢেলে দেবে যাবতীয় প্রহ্লাদ
... আবার কাউকে কোনোদিনই দেবেই না ... এক মুস্থি তণ্ডুলকণাও দেবে না ...
দুষ্টুমির
তো একটা সীমা থাকে ... তাই না ?
কিন্তু
তিনি যে অসীম বেদব্যাস... এইসব মহাবৈভব তাঁকেই মানায় ... এই দ্যাখোনা ... কেমন সামান্য
লতানো জলকাদা আর বরফের আগাটুকু দিয়েই তৈরি হয়েছে তাঁর সীমাহীন কেরামতি ...
৫২
ধ্যান
অবস্থায় অন্তরে, বাহিরেও ঈশ্বর
ধ্যান
কে? রঙফোয়ারার আলোলম্ফ যে।
রোশনাইয়ের
গুরুগৃহ, খনিজরোদ সে এক অভিযাত্রী।
অন্দর
ঈশ্বরবেড়া দিয়ে বাঁধা আর বাহির? তিন ইঞ্চি কিনারা ধরে এগোলেই পুষ্করিণী অবাধ।
একটা ফটক
উড়িয়ে দিলেই দোলমঞ্চ দেবতা। আরেকটি ফটক পার হলে রাসেস্বর অগাধ।
যেদিকেই
দ্যাখো শুধু তিনি। যে ভাবেই দ্যাখো তারই উপাচারে গড়া এই সাগরিকা।
ভরা নবদ্বীপ
আসলে দশঘন দ্বীপ। কাছে ডাকে দূরের কস্তূরী। ঝেঁপে আসে পিঙ্গলনীল কোমলসুনীল, দীঘল তিনি
আলোনন্দিনী। মেদুর চরাচরে বিলিয়ে দিতেছেন সুস্বাগতম। প্রবেশকালীন কনীনিকা।
তাঁর স্তনাংশে
স্বর্গের নাল। সাক্ষী মহাবিষুবের বিউগল। স্বাক্ষী, অনলের কিংশুকবোঁটা।
৫৩
তুমি সর্বস্ব
আমার হে প্রাণনাথ, সারাৎসার
তুমি,
তুমি কুণ্ডলিনী, শঙ্খলগ্নজাত এস্রাজকন্যা
তুমি চৈতন্য,
অচেতন আমাকে দান দিতেছ মোমরঙের চালচিত্র
তুমি কুটুম্ব,
কৃষিঘুঘুর নক্ষত্রগুণ ফলানো পেখমতোলা সোনা
তুমি তিলক-ঘরের
আরতি, তুমি বাহিরজলের মণ্ডপধারা
তুমি প্রাপ্তবয়স্ক
জন্মবোধি, অন্ন বস্ত্র আর লবনের লঙ্গরখানা
এত যে
গুণ গেয়েছি তোমার, চিদানন্দা হে তোমার বিশাখাগুলি যখন উপচে পড়ে
দূরদেশী
মানসগাঁয়ে, শিমূল-সমর্পণে ঝড় ওঠে... দেখি, অফুরান তুমি মেঘচুপ... চাউনিময় বাউলবালিকা...
তাবিজের ঘোড়ায় বসে... উড়ে চলেছ মৌটুসির অলকানন্দায় ...
সূর্যের
মুখের ওপরেই আস্ত একটা সূর্যোদয় দিতেছ এঁকে...