দেলোয়ার হোসেন
বাড়িয়ে রেখেছি হাত
আমি যাবো কোথাও
নিশ্চিত যাবোই যাবো আজ বা কাল
কোথাও যেতে মন খুব চায়!
হাত ছুঁয়ে আছে মেঘ
ঝাপসা দৃষ্টির কার্ণিশে আছড়ে পড়ে সমুদ্রের নোনা জল!
লাটাইয়ের অবশিষ্ট সুতোর প্যাচ খুলে উড়াল ঢাউস ঘুড়ি
ডানায় আঁকশি রেখে পূর্ণিমাচাঁদ পাড়ে!
সুকান্তের মতো, পূর্ণিমা চাঁদের গতরে ঝলসানো রুটির ক্ষুধাগন্ধ
পাই!
হাতজুড়ে কবোষ্ণ গোলাপ
বুকে বিষধর শঙ্খচূড় ফোঁসায় রমণের অধির নৃত্যে!
স্তন-উরুসন্ধি শরীরের
গোপন সব ভাজ ভাদ্রের নক্ষত্রে পাঠ করি
বীজ ধান পুঁতে দেই ফালা ফালা চাষ করা অবোধ জমিনে
নিষ্কুলশিশ্নে বিষ যন্ত্রণা খুব!
আমি যাবোই যাবো কোথাও
মরার আগে সাপশঙ্খে কামোজ বীর্যস্খলন হবেই হবে
যতটা চাও
তারচে বাড়িয়ে রেখেছি হাত!
আমি সামনে যাবো
দুধদাঁত নড়ে চড়ে
ইঁদুরের গর্তে তবু খুঁজে নেয় অন্য জীবন!
কে তারে খুঁজে দেবে
টইটুম্বুর দিঘি
সানাইয়ে উপছে পড়া অথৈ ফাগুন?
কোন জলে ক্ষুধা মেটে সকলেই চেনে সেই ঘাট!
পিছনে ফেরা যায় না কখনো!
শতকরা, ঐকিক, পরিমিতি গাণিতিক সব হিসেবেই গরমিল
তবু, এখনো অনেক সময় পিছু ফিরে হাঁটি।
পথ ভুলে শৈশবে যাই। মায়ের আঁচল খুলে
এক স্তনে ক্ষুধা
আর অন্য স্তনে তৃষ্ণা মুছে ছুয়ে যাই আকাশের রঙ!
এক যুগ হলো বাবাকে দেখিনা!
দ্যাখা আর হবে
না কোনদিন!
বুকের গভীরে তাই ক্ষত পুষে রাখি, সেই সহজাত দুঃখ গুলো
উগরে দেয় কিছু
শিল্প, কিছু স্বপ্নবোধ! তাই
বাবার অভয় আঙুল আজো দূর পাহাড়ের চুড়ো ছুয়ে যায়
আমি রাতে-দিনে এগিয়ে যাই-
খা-খা স্বপ্নে
পুড়ে যায় যাপিত জীবন!
আমি সামনে যাবো
মায়ের স্তন বুকে আর বাবার আঙুল পিঠে ডিঙ্গাবো পাহাড়!
ফেরা
জলজ শরীর
জলের বিছানায় হাটুমুড়ে ডেকে আনে বৃষ্টি প্রহর ;
শরীরসর্বস্ব হাত-পা-লিঙ্গ জলের মূদ্রায় বুঝি
মাঝে মধ্যে অক্ষর কিনতে যায় মাছেদের হাটে!
আমি জলদাস বালকের সাথে ডুব সাঁতার খেলায় মেতে
পার করি বাড়ি ফেরার গোধূলী সময়!
তুমি কোন পথে হেঁটে যাবে?
যদি হাত ফসকে খুলে যায় ক্ষুধার্ত শরীর?
তবে তুমি কোন পথে
হেঁটে যাবে?
জন্মপথ স্বপ্নপথ
ভাষাপথ ছায়াপথ
এস.এম. সুলতানের তুলীর আঁচড়ে হয়ে গেছে বলিষ্ঠ কৃষকের বুক!
তুমি কোনপথে হেঁটে যবে?
ফসলের ন্যায্য দাম পেতে যে পথে হেঁটে যায় প্রতিবাদী চাষা?
আগুনে ঝলসে দেয় ধানক্ষেত?
সব পথ ধুলোর কাছে এখন!
তবে, তুমি কোন
পথে হেঁটে যাবে?
রাজপথ সংসদগৃহ না টুঙ্গীপাড়ায় জনকের সমাধিতে!