অঞ্জনা ঘোষ
হঠাৎ খেয়াল
ঝরা পাতার আলসে দুপুরে
মিষ্টি রোদ হয়ে তোর স্মৃতিরা হঠাৎ
আলতো আদরে ছুঁয়ে গেল আমায়।
অনেকদিন পর, এক চেনা -চেনা
ভালোলাগার গন্ধে ভরা বাতাস বয়ে গেল
মনের গুমোট ঘরের এক কোণ থেকে অন্য কোণে।
সেই ভালোলাগার বস্ত্র
পরে বসলাম গিয়ে ঘাটের পাড়ে.....
দুপুরের দুরপনেয় নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে
তোর স্মৃতির দৌরাত্ম্য নেমে এলো
আমার শান্ত পুকুর ঘাটে...........
জল ছিটিয়ে ভিজিয়ে দিয়ে গেল
আমার নিচোল.........।
আমার সাধের ফুল-বাগিচায়
ভ্রমর হয়ে তোর দুষ্টু
স্মৃতিরা খুনসুটি করে......
চন্দ্রমল্লিকার কপোলে
চুম্বন এঁকে উড়ে যায়,
আবার ঘুরে ফিরে জুড়ে
বসে.....
ঈর্ষায় জ্বলে যায় গোলাপের রং....।
এই ভাবে,আমার একলা -অলস দুপুর,
সেই পুরোনো কবিতার ফাঁকা খাতা
আর একবুক শূণ্যতাকে
কানায় কানায় পূর্ণ করে যায়
তোর স্মৃতিরা..............।
উপাশ্রয়
এইভাবে, ঠিক এইভাবেই তো থাকতে চেয়েছিলাম
তোমার করপুটে..... অহর্নিশি।
তোমার বনস্পতির নিবিড়
ছায়ে
গড়তে চেয়েছিলাম আমার নিরাপদ আস্তানা।
তোমার হৃদ-বৃক্ষের লতায় পাতায়
জড়িয়ে থেকে,
চেয়েছিলাম জীবনের যত স্বাদ,
সব চেটেপুটি উপভোগ করতে।
আপন, একান্ত আপন করে
পেতে চেয়েছিলাম তোমায়..........।
তবে, সব চাওয়া বোধহয় পূর্ণ হয় না জানো...!
যেদিন আমার দুরত্যয় লোভ.... আর
দুর্দম অহংকার, গৃহ শত্রুর মতো
আমার'পরে ভর করলো,
ঠিক সেই---সেইদিন থেকে তোমার আমার
তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্পর্ককে
কাটতে শুরু করলাম....... ,
নিষ্ঠুরতা আর স্বার্থের কুঠারটা নির্দ্বিধায়
চালাতে লাগলাম...... এলোপাতাড়ি।
সর্বশক্তি খরচ করলাম... ন্যগ্রোধকে বনসাই বানাতে।
তোমার রক্তে রাঙ্গিয়ে নিলাম আমার আজ।
প্রমাণ করতে চাইলাম
----তোমাকে ছাড়াও সুন্দর আমার জীবন।
চেয়েছিলাম ঐ রক্ত আবির ছড়িয়ে দিতে
ভবিষ্যতের দিকেও.......... ..................
আগামীকেও সাজাতে চেয়েছিলাম
তোমার রক্ত করবীর মালায়।
কিন্তু সব চাওয়া বোধহয়, পূর্ণ হয় না, জানো.....!
চারিদিক থেকে যখন শূন্য প্রান্তরের বিষন্নতা ,তপ্তমরুপথ
দাউ দাউ করে জ্বালাচ্ছে আমার অহমিকাকে.....,
আমি তখন অসহায়.....একটু শীতলতার
সন্ধানে...... ফিরে
আসতে চাইছি
তোমার কাছে।
জানি, তুমি এইভাবে,ঠিক
এইভাবেই আশ্রয় দেবে আমায়...........
তোমার করপুটে............ অহর্নিশি।।
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿
একতরফা ভালোবাসা
মনের সাদা ক্যানভাসে
স্বপ্নের তুলি দিয়ে,
আঁকছিলাম ভালোবাসার
ছবি ,
এঁকেই চলেছিলাম........
তোমাকে নিয়ে।
কোনো এক নির্জন বালুচরে
বসে
তোমার চোখের দুষ্টু
ইচ্ছাগুলোকে
আশকারা দিতে দিতে......
খুঁজে নেব তোমার
মনের ঠিকানা।
একদিন শপথের হাত ধরে
তোমায় সাথে নিয়ে পাড়ি দেব অন্তরীক্ষে।
মাখবো গায়ে বেদুঈনি
ঘ্রাণ......।
আবেগের আলগা স্রোতে ভাসতে ভাসতে
হঠাৎ একদিন তোমার হৃদয়ের অতলে তলিয়ে
যাবো আমি........
স্পর্শ করবো তোমার অন্তরের অনঘ আরশ,
ঠিক যেখানে আমার
নামটা লেখা
সবুজ দিয়ে...........
কিন্তু, এ কি!.. প্রত্যাশার গাঢ় রং ফুটে উঠতেই,
তুলিটা হাত থেকে পড়ে গেল --------------
বাস্তবের তীব্র আলোয় স্বপ্নজড়িম দূর হতেই,
ফিকে হয়ে গেল সব রং,
ক্যানভাস থেকে ঝরে
ঝরে পড়ছিল
প্রত্যাশার রঙ্গীন প্রলেপ।
এমন করে ভাবিনি কখনো
আগে.......
অবিরাম, প্রত্যাশাহীন একতরফা ভালোবাসাও..........
ভারী অসহ্য লাগে।