বিমল দে
প্রেয়সী
আঁচল ওড়ানো হাওয়া এসে ঢুকে গেল ঘরে
বিবর্ণ দেয়ালের পিঠে অতীত আলাপন,
রঙ-বেরঙের গোপন কথাগুলি নড়েচড়ে এখনও,
সব ব্যথা কেড়ে নেয় আপনজন।
ঢাকা ছিল যৌবনের উচ্ছসিত কথা
অভিমানে গাঁথা একান্ত এক-দিনলিপি,
কয়েক যুগের ছোঁয়ান জিয়নকাঠির ব্যথা,
ঢেকে রাখা বাল্মীকির উঁচু ঢিপি।
স্বপ্নেরা ডেকে আনে সহসা মেঘ-মল্লার
থমকে থাকা মেঘে বৃষ্টি এসে তাই;
ঢেকে থাকা বাল্মীকির ধুয়ে গেল দ্বার,
জেগে দেখি প্রেয়সী কোথাও নাই।
হাঁটব শুধু নিজে
এবার থেকে হাঁটব শুধু নিজে
বৃষ্টি এলে আসুক যাব ভিজে;
রাস্তা থাকুক উঁচু-নিচু যত
হৃদয় হোক ক্ষত-বিক্ষত।
বন্যা এসে ভাসিয়ে নিলে নেবে
কষ্ট আমায় আরও কষ্ট দেবে;
বৃষ্টি যদি আসে যাব ভিজে, তবু-
এবার থেকে হাঁটব একা নিজে।
ভাববে তুমি ডাকবে আমায় জানি
রাখবে হাতে থাকবে ফুলদানি,
স্বপ্নে গড়া ফুল বাহারের তোরা
সেই ফুলেরই হব বর্ন-চোরা।
হৃদয় আমার থাকবে তোমার বুকে
ভাববে তুমি যেথায় আছ সুখে,
এবার থেকে হাঁটব শুধু নিজে
বৃষ্টি এলে আসুক যাব ভিজে।
জাত
রক্তে নেই জাতধর্ম
জাত যায়না কর্মে,
মেরুদন্ড থাকলে সোজা
কি এসেযায় চর্মে।
জাত যায়না ট্রেনে-বাসে
কিংবা বাজার হাট,
পাহাড়-নদী-জংগলে
যায়না কারও জাত।
স্কুল-কলেজ খেলার মাঠে
নেইরে জাত-পাত,
জাত তৈরি মানুষ করে
নেই ভাগ্যের হাত।
টাকা-পয়সায় জাত নেই
ঘোরে সবার হাতে,
টাকায় যেমন মানুষ বাঁচে
টাকা মারে ভাতে।
রঙিন ফুলের জাত নেই
জাত মানাটাই ভুল,
কবর-শ্মশানে,শুভ কাজে
তাইতো থাকে ফুল।
মায়ের দুধে জাত নেই
কিংবা মায়ের কোলে,
ছোট্ট শিশু উর্দ্ধে সবার
হাসি মুখে খ্যালে।
জাত-ধর্মের জিগির তুলে
ওড়ায় কারা ফানুস,
জাতের বিচার কেউ করোনা
সবার আগে মানুষ।