হরিৎ
বন্দ্যোপাধ্যায়
মৃত্যু ---- ১
মৃত্যু এসে তোমার সদর
দরজায় দাঁড়াবে
তোমার নাম ধরে একবার
মাত্র
হ্যাঁ, একবারই মাত্র ডাকবে
তুমি শুনেও না শোনার ভান
করবে
যদিও তাতে কিছু যায় আসে
না
কারণ ডাক দেওয়ার সাথে
সাথে
তোমার চারপাশে একটা
অন্ধকারের বলয় তৈরি হয়ে যাবে
তুমি সব দেখেও কিছু
দেখতে পাবে না
তুমি আস্তে আস্তে
অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছ ।
মৃত্যু ---- ২
মৃত্যু এলে তুমি রেগে
যাবে কেন ?
তোমার ডাক তো নিয়ম
নির্দিষ্ট
আর তাছাড়া সে তো তার
কাজ করতে এসেছে
তুমি এতদিন যেভাবে তোমার
কাজ করে এসেছ ।
মৃত্যু ---- ৩
কতকাল কথা বলো নি
উঠোনটা কেমন ভিজে ভিজে
কোথাও কোথাও শ্যাওলা
জমাট বেঁধে আছে
কতকাল সূর্য উঠোনে দেয়
নি আল্পনা
তুমি তোমার মতো করে
সকালে ঘুম থেকে উঠে বলো
---- দিন
আমি দেখি তোমার উঠোনে
অন্ধকার তার জাল বিছিয়ে
দিচ্ছে ।
মৃত্যু --- ৪
প্রতিটা বাড়ির গায়ে ঝুল
লেগে আছে
দরজা, জানলা, বারান্দা
----- সব অন্ধকার
চারপাশ কী ভীষণ ঠাণ্ডা
যেন কেউ কোনোদিন এখানে
এসে দাঁড়ায় নি
অথচ এই সেদিনেই তো মাথা
চাড়া দিয়ে উঠল
এত তাড়াতাড়ি ঝুল বড়
আশ্চর্যের
মৃত্যু ---- ৫
পঞ্চাশটা বসন্ত পেরিয়ে
এলে
মানুষ এখনও তোমাকে
বিশ্বাস করতে পারে নি
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
নিজেকে কখনও দেখেছ?
কতখানি বিশ্বাস করতে
পেরেছ নিজেকে?
আজও তোমার নিজস্ব কোনো
পরিচয় নেই
এখনও নিজেকে পরিচয়
করিয়ে যাচ্ছো
কার জন্যে তুমি পথ চেয়ে
বসে থাকবে?
**********************