শংকর
ব্রহ্ম
স্থবিরতা
শিশুদের জন্য আমরা রেখে
যাচ্ছি
একরাশ মিথ্যে প্রতিশ্রুতি
প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়
কালো টাকার গোপন মোহ
আর দম আঁটা যান্ত্রিক জীবন |
মাটির সোঁদা গন্ধ
এক্কা-দোক্কা গোল্লাছুট
বাতাবি ফুলের ঘ্রাণ
ওসব আমাদের জন্য
ছিল একদিন আজ নেই
|
সে প্রকৃতি ধ্বংস করে
আমরা আজ বিশ্ব নাগরিক |
সব দেখে মনে হয় যেন
স্থবিরের দায় নেই কোনো |
----------------------------------------------------
কবিতার কথা
কিছু কিছু কবিতার গভীরে
ডুবে
দিশে হারা হই,
বেরতে পারি না -
এমন আসক্তি, মোহ।
এমন আসক্তি যদি ঈশ্বরে
হত
এতদিনে, ঈশ্বর
পেতাম।
কবিতা পাই না।
---------------------------------------------
পুতুল জীবন
নিজেকে সরিয়ে রাখি
আমি তো ভীষণ
ভাবে
আগ্রাসী মোহের থেকে দূরে,
যুদ্ধ তো নিজের সাথে
শুধু ।
দূর থেকে দূরে, কাছে দূরে,
বহু দূরে ঘুরে এসে
শেষে,
জীবনকে একান্তে ভালবেসে,
ঘরে ফিরে দেখি
অহেতুক অভিমানে ঘুণপোকা
কুরে কুরে শুধু
অবশেষে, ভেঙে দেয় আমার
এই পুতুল
জীবন।
-----------------------------------------
স্মৃতি সুর
মেঘলা দুপুর একলা নূপুর
বাজায় মনে
সকাল থেকেই তোমার কথা
ভাবছি বসে খুব গোপনে,
ভাবছি কেন যে জানি না নিজে
স্পষ্ট নয় তা।
দূর থেকে শুধু দেখে মনে
হয়
তুমি যেন আর চেনা কেউ নয়,
তবু কাছে এলে সব যাই
ভুলে
লাগে যেন শুধু তোকে
আপনার
বুকে বাজে তার স্মৃতি-সুর।
এই তো সেদিন বর্ষাকালীন
মেঘ
জমেছিল আকাশের বুকে
আমার বুকে তো আসেনি যে
কেউ
পাপ বা
পুণ্যে
কি হবে তাহলে, বর্ষা
নামবে
নাকি তাহা আজ স্তগিত থাকবে
অসীম শূন্যে
?
এই তো সেদিন
জ্যোৎস্নাকালীন চাঁদ
ভেসেছিল আকাশের বুকে
আমার বুকে তো আসেনি যে
কেউ
এখন কি হবে ?
জ্যোৎস্না ছড়াবে চরাচর
জুড়ে,
নাকি আজ তাহা স্তগিত
থাকবে
গভীর শোকে ?
এই তো সেদিন তুমি
এসেছিলে
এসেছিলে শুধু, আর কিছু নয়।
আকাশের বুকে ছিল না তো
চাঁদ
মেঘ ছিল কিনা দেখিনি যে তাহা,
তবুও সেদিন আলো ঝরেছিল
বর্ষার মতো অঝরে, আহা।
----------------------------------------------------
নীলকন্ঠ
একটি কবিতা লেখা হবে
তার জন্য সমস্ত কষ্টের
ভার তুচ্ছ ভেবেছি
পৃথিবীর সমস্ত গরল পান
করে
নীলকন্ঠ হয়ে বসে আছি।
একটি সৃষ্টির লোভে
সমস্ত দুঃখের ভার বুকে চেপে
অন্ধকার দূর করে, আলো
নিয়ে
উঠে
দাঁড়িয়েছি।
একটি কবিতা লেখা হবে
তার জন্য পার্থিব যত সুখ তুচ্ছ করে
মহৎ সৃষ্টির লোভে
সমস্ত যন্ত্রণা ভুলে
মাথা তুলে সোজা দাঁড়িয়েছি।
-----------------------------------------------