শিল্পী
গঙ্গোপাধ্যায়
মাভৈঃ
তুমি তো আমার পিতৃসমই
ছিলে
কত অসময়ে সহায় হয়েছ তুমি
তোমার মন্ত্রে মাভৈঃ
চলতে শেখা
তোমার মন্ত্রে দুঃখ কে
জয় করা।
সেই তোমাতেই অগ্নি
জ্বলতে দেখা
সেদিন তোমার অবিচল শুয়ে
থাকা।
সেই তোমারি দাহ শেষ হয়ে
গেলে
শ্মশান-ভূমিতে, কিছু বীজ আমি
ছড়িয়ে এসেছি জান?
জানি একদিন বীজগুলো গাছ
হবে
শাখাগুলো সব ফুলে ফুলে
যাবে ভরে..
সেও তো আবার তোমাকেই
ফিরে দেখা
সেও তো আবার জীবনের
দ্বীপ জ্বালা
একেই কি বলে দুঃখ কে জয়
করা!
একেই কি বলে 'মাভৈঃ' চলতে
শেখা?
স্মৃতিকণা
জানলার কাঁচে,
মসৃণ মসলিন বৃষ্টির কণা
স্মৃতিকণা হয়ে ঝরে...
কিশোরীবেলায় 'না' বলে
ফিরিয়ে দেওয়া
কিশোরের মুখ মনে পড়ে ...
মনের দেরাজ খুলে যায়
বৃষ্টির কণা ধার নিয়ে,
একলা দুপুর__
মেঘদূত লিখে চলে।।
অনুভব
শ্মশানে কোন ছলনা হয়না, জানো
এখানে অশ্রুর একটাই রঙ
হয়...
স্বজন কিংবা পরিজন নয়,
এমন জনের দাহ কালেও,
বুকের ভেতর, একটা দহন হয়...
এ-ভূমিতে আগুন বড়
পবিত্রময়_
জীবনের যাতনা যত,যত গ্লানি-পরাজয়
এ-আগুনে পূতপবিত্র হয়...
এ-ভূমিতে মন সন্ন্যাসীসম
যেন_
জীর্ণ দুঃখ, জীবনের চাওয়া-পাওয়া
বড় ক্ষণিকের মনে হয় ...
বিপুল বিশ্বে বিন্দুর মত
একা,
এখানে দাঁড়িয়ে একাই
নিজেকে জানা
শুভেচ্ছ
সোনালী রোদ্দু চেয়েছিলে
তুমি
মুঠো ভরে এনে অঞ্জলি দেব
যেই,
বললে আমার "চাঁদের
জোৎস্না কই"?
জোৎস্না খানিক লুকিয়ে
এনেছি,
আঁচলে রেখেছি বেঁধে,
এসে দেখি তুমি হারিয়ে
গিয়েছ
আঁধার কে ভালোবেসে...
জোৎস্নাটুকু ছড়িয়ে দিলাম
তোমার চলার পথে---
'আঁধার
কাটুক,
আলোকিত হোক'
শুভেচ্ছাটুকু রেখে ।।
কথা ছিল
কথা ছিল, দেখা হবে পরিচিত পথে
কথা ছিল, ব্যথাগুলো ফুল হয়ে যাবে
কথা ছিল, মোহনায় জেগে থাকা রাতে
স্বপ্নের পরীগুলো ঠিক
ধরা দেবে...
যত কথা দেওয়া হয় রাখা হয়
নাকি?
কত কথা ঝরে যায় হলুদ
পাতায়
কত কথা ভিড় করে স্মৃতির
খাতায় ।