দিশারী
মুখোপাধ্যায়
অন্তর্দ্বন্দ্ব
ভাড়া বেঁধে উঠে দাঁড়াতেই
পাঁচতলার দেমাক পায়ের
কাছে
সিল করা কৌটর ভেতর থেকে
বার হয়ে
নিজের পরিচয় সংগ্রহ করি
যেসব শব্দরা ঘ্রাণ
পাচ্ছিল না
বরফের জন্য অপেক্ষায় ছিল
তারা এখন কল্পদ্রুম
ওদিকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে
ওঠা
এককালীন সরল গ্রীবা
জাঁতায় পিষছে তার বিনয়ের
বীজ ও খোলস
আমি এখন ভাড়া বেয়ে উঠছি
নিজের উপরে
আর তোমরা
পরিচয় ধার চাইছ আমার
কাছেই
নির্বাসন
এই জন্ম থেকে কয়েক হাজার
পর্ব আগে
যে জন্মে আমি পিঁপড়ে
ছিলাম
স্পষ্ট মনে পড়ে
বাতিল করেছিলেন আমাকে
তারপর কয়েকটা সৌরজগত
ঘুরে
কয়েকটা তুষারযুগ পার করে
কয়েকবারের গন্ডোয়ানা ও
টারসিয়ারির
খামখেয়ালির সঙ্গে
মোকাবিলা করে
আজ এখানে
আমার উপর আপনার সেই
নিষেধ
জারি রয়েছে এখনো
গুহামুখ থেকে সিংহদুয়ার
হয়ে
এই পাসওয়ার্ড পর্যন্ত
হরেকরকমের দরজার উপেক্ষা
হজম করে চলেছি আজও
আর আশায় রয়েছি
একদিন আপনি অবশ্যই তুলে
নেবেন
আপনার ওই ফরমান
ওয়াক
বমি করার ইচ্ছেটাকে
বমি শব্দে নামকরণ করে
ইচ্ছে করে অন্ত্যজ করা
হয়েছে
যেমন অন্ত্যজ শব্দটিকে
যে ভাঙাপনা ডাঁই ডাঁই
অন্তরীক্ষে
বমি ভিন্ন তাকে কিভাবে
খালাস
লোটন লোটন ,পায়রা নয় ,শ্বাসকষ্ট
বোঝাল যে ,ছেদ ,পূর্ণ শব্দটি অপ্রয়োজনীয়
তাকে বিল দিয়ে বুঝি
ট্যাক্স সহ
প্রতিদিন এতো এতো প্রেম
পচে নষ্ট হচ্ছে
অথচ সাবিত্রী ,শরৎ বাবুর চেষ্টা ব্যর্থ করে
শামুকের খোলের মধ্যে
অহো ,কী সাদা ! কী শুভ্র !
সমার্থক শব্দের অধিক
প্রয়োগে ভান পোক্ত হয়
বমি ছাড়া
পবিত্র আশ্রয় আর কোথা ?
পুন: পবিত্র শব্দটির
প্রয়োগ
যথাযথের অভাবে
লাইন
মেন বহুদিন হল
এবার ফের একটু কর্ড চাখা
যাক
ভাবে না থাকার জন্য
ভাবনারা
ছিল অসহায়
হায় হায় করতে করতে
প্রথম স্বরটি বিলাপ করে
-
না হতে সে চায়নি কখনো
বিধিরবিধানে নাকি
কপাল পোড়ে বিধিরও
নিধিরাম এবার সত্যই
সর্দার হবে
আর লাইন বদল তো
লাইনেরই নিজস্ব লাইন
সর্বংসহা
তোর মনের মধ্যে সুধা আছে
জানতাম
কিন্তু একটা ডাঁসা
পেয়ারার দাম
এই রাম রাম গন্ধ-অলা
বাজারে
কেউ দেবেনা
জানতাম জলে নামলেই আকাশ
অতলে গেলেই শৃঙ্গ
কণায় কণায় সমগ্র
কিন্তু
তুইও জানিস
অঙ্কুরিত মুসুর এখন মসুর
নয়
তোর কথা ভাবেন শুধু
স্টিফেন হকিন্স
বপন
আমি পৃথিবীর প্রতিটি ব্যাসার্ধ ধরে ধরে কেন্দ্র পর্যন্ত
ছড়িয়েছি ধান ও গমের বীজ
আমি ছড়াতে জানি ,গুটাতে জানি না
এরপর পৃথিবীও তার জরায়ুতে আলপনাকে সজীব করেছে
তোমাদের জন্য তার গানের ভাষার গায়ে সবুজের অলংকার এঁকেছে
নিপুণ
সেই সত্য হয়ে উঠবে সোনার রঙের আলাপন ,তাতে
ভরে উঠবে তোমাদের বুকের মড়াই
তোমাদের সাম্রাজ্য আজ তোমাদের একান্ত নিজের
আমি তোমাদের প্রত্যেকটি অলিন্দ-নিলয় ভরে দিয়েছি অমূল্য
প্রেমে ,
যাতে
আসমুদ্র গঙ্গোত্রির রক্ত-প্রবাহ বিশুদ্ধ থাকে চিরকাল
আমি ছড়িয়ে দিয়েছি নীরব উচ্চারণ স্পষ্ট ভাষায়
তাকে গুটাতে জানি না