বিভাবসু
দে
ব্যর্থ প্রেম
ঝরেছিল কি যেন
শব্দহীন নৈশব্দের অতলতায়,
বিশ্বামিত্রও কেঁদেছিল
একদিন
মেনকার ভালোবাসায় ;
দেখছো কখনো আগুন জড়িয়ে
ধরেছে
শিশির-নাওয়া শিউলি
বালিকাকে ?
অথচ পোড়ায়নি তাকে,
পুড়েছে নিজেই প্রেমের
দাহে ;
অসীম অন্ধকার নিংড়ে ওঠে
যে আর্তনাদ ,
শুনেছ কি তাকে কখনো হাসি
হয়ে ঝরতে
বালিকার ঠোঁটের কোণায় ;
ঝরেছিল সেও একদিন |
সময় দৌড়
সময়কে কখনো থামতে
দেখেছেন ?
থামা তার ধাতে নেই,
ছুটে যায় সে নিজের তালে,
আমরাও ছুটি তাল মেলাতে ,
সময়ের সাথে ;
আজন্ম সদ্ব্যবহার করে
চলি সময়ের ,
সময় ফুরিয়ে যায় ;
পেটের ভাত-না-জোগানো
স্বপ্নগুলো
শুধুই পচে মরে সময়ের
দিগন্তরেখায় ,
জীবনজুড়ে শুধুই গড়ি ইটের
ইমারত ,
কচিঘাস পিষে চলি
সময়চাকায় |
মোনালিসা
ছবি এঁকেছিলাম ,
কার, তা তো মনে নেই আজ ,
বুকের রক্তেভেজা তুলির
মুখে
উজাড় করে ঢেলেছিলাম
আত্মার রং ;
তার ঠোঁটের হাসি
মায়ার ইন্দ্রজাল গড়েছিল
আমার মনের স্বপ্নদিগন্তে
;
সে কি হেসেছিলো সত্যিই ?
জানিনা | লোকে বলেছিলো
মোনালিসা |
ফিরে আসা
আগুন জ্বলে উঠেছে আমার
চিতায় ,
আজ অগ্নিস্নানে জুড়াচ্ছে
আমার জন্মান্তরের প্রদাহ
;
শেষ আহুতি হয়ে চিতার কাঠ
বেয়ে পড়ল,
আমার লক্ষজন্মের জমা পচা
চর্বি ;
মাংস চর্বি গেল ,
এবার হাড়ের খাঁচায় ধরেছে
আগুন ,
পাঁজরের সৌধ ভেঙে ভেঙে
পড়ল
তপ্ত চুম্বনে ;
যা নিয়েছিলাম সব দিয়ে
গেলাম ফিরিয়ে.....
তবু জানিনা কেন,
প্রাণের কোনো এক অজানা
গুহায়
লুকিয়ে নিয়ে গেলাম ,
শিশিরভেজা হালকা রোদের
একটি শিউলি ফুল |
পথচলা
জন্মান্তরের জুতো পরেই
গর্ভে ঢুকেছিলাম ,
ছুটতে হয়েছে ভূমি ছোঁয়ার
আগেই ;
ছুটেছি , থামিনি কোথাও ,
পথটাও ছুটেছে আমার সাথে ,
থামেনি সেও ;
কখনো বেঁকে বেঁকে ঢুকেছে
সে পাতালপুরে ,
মাটি ফুঁড়ে উঠেছে আবার, উঠেছি আমিও ;
কে যেন এসেছিল পাশে ,
শিশিরভেজা কোনো এক
শিউলিবেলায়....
পথের বাঁকে পথ খুঁজে
নিয়েছে সে ,
নিজের চলার ;
আমি থামিনি, ছুটছি আজও ,
পথটাও থামেনি,
ছুটছে সেও আমার পাশে ;
নোনাজলের শিশির ভিজিয়েছে
তাকেও বোধহয় |