মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭

ব্রততী সান্যাল



ব্রততী সান্যাল

এলোমেলো সিরিজ
----------------------------

(১)

তোমার-আমার সাজিয়ে রাখা গল্পগুলো
মুঠো ভরে ছড়িয়ে দিই ভেজা নীলসন্ধ্যের     কার্নিশে,

দেখো রঙ ছুঁয়ে যাচ্ছে শব্দমালা, আর..
উত্তরের বারান্দা জুড়ে খুনসুটির ঢেউ,

চলো মিশে যাই নদীপাড়ের কৃষ্ণচূড়ায়,
অথবা ব্যস্ত ট্রাফিকের বেরঙ ভিড়ে

মেঠোপথের বুকে সহস্র জোনাকি জ্বললে..
আঁকড়ে-থাকা দুটি হাত,
ভালবাসার কুটিরে ঠিক ফিরবে একদিন..




(২)

কিছু প্রেম গল্প হয়ে ওঠে না,
শুধু মেঘলা সন্ধ্যের ক্যানভাস হয়ে ওঠে অনায়াসে..

বৃষ্টির তুলিতে ক্ষণিকের রঙবদল,
খোলা বারান্দা ছুঁয়ে তার কবিতা হয়ে ওঠার প্রচেষ্টা..

তবু রাত বাড়লেই সে অগোছালো,
আমার বালিশ জুড়ে তার উষ্ণতার গন্ধ,

আমিও বেনামী অভিমান একে একে খুঁজে
সযত্নে সাজিয়ে রাখি তার শিয়রে..




(৩)

তোমার চৌকাঠে যে সন্ধ্যে নামে রোজ,
তার ব্যাগভর্তি জোনাকির সমুদ্র, আর..

বারান্দার পিঠ ছুঁয়ে পড়ে থাকে হেমন্তের খাম,
শুধু খুলে দেখার সময়টুকু তুমি নিরুদ্দেশ..

জানো, পরিত্যক্ত পুকুরে যে ভাঙাবাড়ির ছায়া পড়ে,
তার উঠোনেও খেলা করে আস্ত একটা মেঘমহল..

আঁজলা ভরে বৃষ্টি পাঠাতে গেলেই
তুমি বাড়ির পথ ভুলে যাও, তবু..
আমার কুটিরের পিদিম নেভাও নি কোনদিন..




(৪)

যে মেয়েটি ব্যস্ত প্রেমিকের ঠোঁটে কবিতা খোঁজে,
যার বদ্ধ স্টাডি জুড়ে অবিন্যস্ত ছন্দের সিলমোহর,
তার শূন্য দুপুরের খাতায় বরং রূপকথা ছুঁইয়ে দাও..

জানো, সন্ধ্যের বুকে এলোমেলো নদীও ওম খোঁজে,
আগ্রাসী জলছাপ রেখে যায় ভাঙা নৌকার পাটাতনে..
তবু ফিকে হতে থাকে সন্ধ্যাতারা --- উপেক্ষার পাখনা মেলে..

কিছু কিছু দিন যেন বেবাক কেটে যায়,
রঙহীনতার গল্প লেখে বিকেল-শহর জুড়ে, তবু..
তুমি-আমি কেবল ফেলেই আসিখুনসুটি, আড়ি-ভাবের বসন্ত, আর..
ইচ্ছেপালকের হিজিবিজির সংসার...




(৫)

আমার ঘুমের উপত্যকায় বিষাক্ত সরীসৃপ,
নাম দিয়েছি, ‘ তোমার বদলে যাওয়া, হঠাৎ’..

মুঠো খুললেই আজকাল বরফকুচি ছড়িয়ে পড়ে,
পড়ার টেবিল হিমশীতল, বিকেলের কাঁচে ধোঁয়াশা..

পরিত্যক্ত গুহায় সযত্নে লেগে সোহাগী আঁচড়,
আগ্রাসী নদী তবু পাল্টে ফেলে স্রোতের মুখ..