তৈমুর খান
বিরহফুলগুলি
কথাফুল
________
এত ফুল
ছুঁইনি কখনও
সারাদিন
ঘ্রাণ এসেছে
আর
ঘুরঘুর করেছে বাহিরে ঘরে
বাতাস
এনেছে ঘ্রাণ
আমি আর
উদাসীন চুপচাপ থাকি
নীরব
পাড়ায়
কত
রঙিন পোশাক,
খোলা চুল
রাঙা
নখ হেসে হেসে গেল
চূর্ণ
বিষাদে ভাঙা স্বর
সে তো
আমারই ফাল্গুন
কাঁপা
কাঁপা কথা,
কথায় কথায় না-বলা মেশানো
কথাফুল
ফুটল না আর
পায়ের
চপ্পলে চেয়ে থাকা সারাদিন
ফিরে
ফিরে আসে আলতাদাগ
রাস্তা
চলে গেল বহুরাস্তার দিকে
সময়
বিলাপে দিন যায় আজও
মঞ্চের
আড়ালে ধূসর জনান্তিকে
জাগরণফুল
____________
কার
কণ্ঠ বাজে ?
ভোর
ভোর উঠে আসি
শূন্য
দাওয়ায় প্রাচীন কোকিল ওড়ে
কোকিলের
ভ্রমরচোখ পাতার আড়ালে লুকায়
আমি
তাকে চিনি
বুকের
কুয়োয় তার ছায়া পড়ে
জল
নড়ে,
বহুজল মেশে অশ্রুজলে
শূন্য
দাওয়ায় ভোর
বকুলতলায়
কত জাগরণ পড়ে আছে
আবার
কুড়িয়ে আনি
আবার
পাতায় পাতায় সাজিয়ে রাখি
ঝরা
জাগরণফুল
সারারাত
ভিজে গেছে অবেলার সুরে
ক্ষতফুল
_________
ডাকো , আমাকে ডেকে নাও
এখন যে
কোনও নাম,
এখন যে কোনও ভাষা
এখন
ইশারাগুলি নম্র পলাতকা
সময়নদীর
বাঁকে আমি গৃহছাড়া
রঙিন
চাবুকে রাঙাও ,
কল্লোলে ভাসাও
নিরুদ্দেশে
যাক তরণিরা
এখনও
ছায়ারা হাসে,
উজ্জীবন পাক খায়
ধুলো
পা একা একা হাঁটে
নিরবধি
কোন সীমানার খোঁজ ?
জলের
কাছে আসে পিপাসা আমার
জলকন্যারা
নাচে ,
শিহরনে স্বরলিপি বাজে
জ্যোৎস্নায়
রোজ তার স্বপ্নসাঁতার
সব
ক্ষতগুলি আজ তবে ক্ষতফুল
ভ্রমর
এসে অনুভূতির পাপড়ি খোলে
দেখে
যাও মৌসুমি,
এখনও কেমন লাল এ হাতের তালু
ইচ্ছেফুল
__________
আর
চিঠি লিখতে হয় না
মনে
মনে চিঠি লেখা হয়ে যায়
পৃথিবী
একটা পোস্টঅফিস
ৠতুগুলি
এক একজন পোস্টম্যান
কত
চিঠি
আমাদের
কুশল বিনিময়,
আমাদের প্রেমের সেতু
আর
রাতজাগানিয়া
ইচ্ছেগুলি
কেমন আছ ?
ফুটবে
কবে ইচ্ছেফুল ?
মুচকুন্দের
পাপড়ি থেকে ছিটকে পড়ছে রোদ্দুর
শব্দগুলি
নীরব বাঁশি
গাছগুলি
নতুন বউ
মৃদু
হুলোহুলি
পাতা
ঝরায় বাতাস এসে
লজ্জা
তবে রাখবে কোথায় ?
চিঠিগুলি
ফিরে আসে
পাতার
ঠোঁটে সবুজ হাসি
আমরা
ঝিলিমিলি গড়াই
ধুলোফুল
___________
দীর্ঘ
মোরাম রাস্তা স্মৃতির সরণি
শালবাগান
পেরিয়ে চলে গেছে
পিছে
পিছে কত ধুলোফুল
আহা
ধুলোফুল ফোটে !
আমার
ক্লান্তির পাশে ঘর ভরে আছে....
মরমি
বাউল একা গেয়ে গেছে গান
আমি
তার নতুন একতারা
শূন্যে
ভেসে ওঠে মুখ
শূন্যে
ওড়ে দিনান্তের পাখি
আমি
তার লাল নীল পালক খুঁজে পাই
সে তার
রঙিন ঠোঁটে দেখি
আমার
যুবকবেলা খুঁটে খুঁটে খায়
দূরে
বহুদূরে
কত
ধুলোফুল ওড়ে
আমার
ফাল্গুন আজ বাউলের কাছে দীক্ষা নেয়