রিয়া
চক্রবর্তী
পাহাড় ও বিষাদ
জমতে জমতে কখন যেন পাথর
হওয়া মন।
শুকনো পাতার মতোই শিরা
উপশিরা আজ।
কথারাও আজ শব্দ সংকটে,
টুপটুপ বৃষ্টিগান থেমেছে
কখন!
কে জানতে চায় পাথর কেনই
বা হল?
পাথর জমে পাহাড়, ঝর্ণা বয়ে যায়।
পাহাড়েরও চোখ থাকে,আর
থাকে কিছু আশ্চর্য বিষাদ!
ঝর্ণারও আছে কিছু
গল্পকথা
চাওয়া পাওয়া শব্দবহ্ম
তরল তখন,
ঝর্ণাজলের হাত ধরে তারও
তীব্র বিষাদ।
আবিষ্কারের এক নিতান্ত
প্রান্ত নমুনা।
বিষাদ স্বপ্ন
জীবন জুড়ে মনের খামে
পূর্ণ হলো চিঠির বোঝা,
স্বপ্ন তো নেই - তবু কেন
এমনি করে তাকে খোঁজা ?
হৃদয় জুড়ে বিষাদ সাগর
এক দু’ফোটা চোখের জলে,
ঝলসে যাওয়া ইচ্ছেগুলো
কবর খুঁড়ে থাকতে বলে।
একলা কাটে বেরং জীবন
হৃদয়ে ক্ষত রক্ত নদী।
বইয়ে ভাঁজে শান্তি খুঁজি,
ইচ্ছে মৃত্যু থাকতো যদি!
দুঃখের 'পরে দুঃখের পরত
শহর জুড়ে সুখের ডানা।
আমার আছে বিষাদ পাখা,
নীল আকাশে উড়তে মানা।
অলীক ভাবনা রাত্রি দুপুর
আবোল তাবোল স্বপ্ন দেখা।
অনন্তকালের অপেক্ষা আর,
জীবন স্রোতে ভাসতে থাকা।
বিষাদ নামে মনের খামে
পূর্ণ হলো চিঠির বোঝা,
ঝলসে যাওয়া স্বপ্নগুলোর
আকাশ জুড়ে জীবন খোঁজা।
ভালোবাসা
আমার ঈশ্বর
মাঝে মাঝে সবার মাঝে
থেকেও
বড় একা হয়ে যাই।
একা হয়ে যাই কোন নির্জন
দুপুরে
একা হয়ে যাই কোন বিষণ্ণ
বিকেলে।
সন্ধ্যে বেলায় যখন এক
এক করে
তারাগুলো ঘুম ভেঙে জেগে
ওঠে
ভালো লাগেনা কিছুই, নিষ্ঠুর লাগে
চারপাশের আলো আঁধারের
খেলা অচেনা লাগে।
ওই আকাশ ভরা তারার মাঝে
যখন দাঁড়াই
আমি একা ,তখন সত্যি বড় একা হয়ে যাই,
মাঝে মাঝে সবকিছু ভুলে
আমার আমিকে নিয়ে
বাঁচতে চাই ভালবাসায়,পরম নির্ভরতায়।
মাঝেমাঝে ভালোবাসা
ক্ষণিকের পরিযায়ী পাখি
তখন গুটিয়ে নিই নিজেকে,
ঘুমের দেশে থাকতে বলি
স্বপ্নদের।
মনের মরুভূমিতে বাজে
নিঃসঙ্গতার প্রতিধ্বনি!
মাঝে মাঝে সবকিছু বড়
ওলটপালট হয়ে যায়
দাঁড়িপাল্লায় মাপা
হয়ে যায় নিজের ওজন
মাপা হয়ে যায়
ভালোবাসার গভীরতা,
ক্ষত গুলো দগদগে হয়ে
ওঠে
রক্তাক্ত হয়ে ওঠে আমার
আমি।
মাঝে মাঝে নিঃস্ব হয়ে
যাই,
মাঝে মাঝে মনে হয় বেঁচে
থাকাটাই বড় উপদ্রব।
রক্ত মৃত্যু রসায়ন
অব্যক্ত ঘৃণার
স্ট্রাটোস্ফিয়ারে
বিধ্বস্ত তুলতুলে হৃদয়।
গামা রশ্মির শিকারে আহত
আত্মরক্ষায় অপটু মন।
পথের প্রান্তে ঠায়
দাঁড়িয়ে থাকা
আগাছার দুঃস্বপ্নে দিন
কাটে
কখন কি হয়।
মাউনাকিয়ায় চুপটি করে
বসে থাকা
দূরবীন ও জানে না,
নত্রাদামের ধুসর পাথরের
কথা।
যুগের পর যুগ বরফের
আস্তরনে
ডুবে থাকা দিন রাত ও ভয়
পায় লাভা উদগীরণের।
পৃথিবীর শূন্য থেকে
যাত্রা
শূন্যতেই বুঝি শেষ।
চিন্তায় টুকরো টুকরো
হয়ে যাওয়া,
স্থান, কাল ও বন্য সমাজকে
ডিঙিয়ে যেতে গিয়ে,
ক্ষত বিক্ষত বিষাক্ত
কাঁটায়।
নিত্য অনিত্যের ভিড়ে, পুরাণের
কাহিনী ও মিথ্যে হয়ে
যায়।
ক্ষত স্থান থেকে চুইয়ে
পড়া
রক্তের স্বাদে শুদ্ধ
হয়েছে ক্যাকটাস।
শুকনো রুটির টুকরোর সাথে
মৃত্যু মিলেমিশে একাকার।
স্থবির জীবনকে
আয়োনোস্ফিয়ার
গ্রাস করতে চেয়েছে
বারবার।
মৃত্যু
একদিন হঠাৎ চলে যাব দেখো
নিস্তরঙ্গ হাসি ছুঁড়ে
দিয়ে,
পরিপার্শ সব কিছু
অবহেলায় ফেলে,
একদিন বলে যাব ভালো থেকো
নিরালম্ব সংক্রান্তি
সময়ে।
দেখো ঠিক একদিন...
চলে যাবো ..
বহুবার মরেছি! মৃত্যু
এখন
নেশা হয়ে গেছে !
নীল রঙের পাত্র যদি তুলে
দাও...
প্রশ্ন করবো না,
শোধ করে যাবো ভালোবাসার
পাপ,
বেঁচে থাকাটাই যেন
পুনর্জন্মের ভয়।
তারপর নিশ্ছিদ্র অতীত
ধুলোয় ঢেকে নেবে
সন্ত মহাকাল।