মৌসুমী
রায় ঘোষ
ভাবনা
কিভাবে বলা যায় 'সুপ্রভাত'। সু-যুক্ত যেকোনো কিছু বড্ড ভাবাচ্ছে আমাকে। কি জানি কেন মনে হচ্ছে এই 'সু'-টা ক্রমশ অবসোলিটেড হয়ে যাচ্ছে অভিধান থেকে। ভালো থাকা বা বসবাসকে যেমন 'সুবাস'
বলা যায় না। তার অন্য একটা মানে দাঁড়ায়। তেমনি 'সুলভ শৌচাগারে'র 'সু' কোন
তৎসম ভাষার নিয়মে আনা হলো সেটাও এক গবেষনার বিষয়। এ নিয়ে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন
মতামত থাকতে পারে। আমি সেসবের বিরোধিতা করছি না। আমার বিস্ময়টা সম্পৃর্ণ অন্য
জায়গায়,
অন্য সুরে। পুরোপুরি ব্যাকরণ বহির্ভুত।
বিভ্রান্তি
এ মাথা থেকে ও মাথা
পর্যন্ত বিস্তৃত ট্যানজেন্ট আঁকতে গিয়ে পেরিয়ে গেল বেশ কিছু বালুকা সময়। আঙুলের
ফাঁকগুলোর রিপেয়ারিংয়ের অপেক্শায় বালিঘড়ি ঝরে পড়ে মরুবক্শে। কিছু বালির
অপব্যাবহারের দায় ঘুরে ফিরে এসে বর্তায় আমার ওপর। একটা বর্শাবিদ্ধ আহত হরিণ যখন
ঝর্ণার নীচে আছড়ে পড়ে তার হাঁ মুখ উপছে পরে ঝর্ণার মিষ্টি জল। কিন্তু বয়ে যায়
ঠিক। আমাদের আপাত মস্তিষ্ক নানাভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে ঘুর্ণনতত্ব কিন্তুু ঘুরে
দাঁড়াতে কিছুকাল লাগবেই। আর ততদিনে পৃথিবী আরও কিছুটা এগিয়ে যাবে নিজের
অক্শরেখায়।
স্বর্গীয়
আমার নদীটার পাশে সকাল
থেকেই আমি বসে ভেবে যাচ্ছি কিছু অতিক্রমতা। মাঝে মাঝে জলের বুকে আলপনা তুলে বাতাস
আমাকে গুলিয়ে দিচ্ছে। একটা মাছ কথা হয়ে লাফিয়ে উঠছে বারবার। ঘাই মারছে। জট
পাকিয়ে দিচ্ছে আমার স্নায়ুতে। গিঁটে ক্রমশ চিন্তাশক্তি অবশ। একটা খেপলা জাল
দিয়ে অনেক চেষ্টাতেও কাবু করা যাচ্ছেনা। আমার এই অসসহায়তা ঢাকতে আকাশে উড়ন্ত
পাখিতে মন দেই। সেখানেই চোখে পড়ে এক
পালক। পালকটা হাওয়ায় মৃদুলয়ে উড়তে ভাসতে আমার কোলে এসে পরে। এক
স্বর্গীয় সৌরভ।
পিপাসা
আমাদের পিপাসাভুক্ত
সীমানায় কার্ফুজারি সন্ধ্যেবেলা গুলো বেশ মনে পরে। একটা চাতক বারবার ডেকে উঠতো।
মঙ্গলাদেবীর বেদির নীচে তৈরী যে শ্মশান ধোঁয়া নির্গত করছে তার চুল্লীর তাতে পুড়ে
যাচ্ছে অঞ্জনার শাখা। নদীর আঁচলের আগুন পাকিয়ে কুন্ডলী উঠছে আকাশে। আমি বিগত
জনমের ডোম পদবি থেকে মুক্তির পথ খুঁজে যাচ্ছি আপ্রাণ। আমার কাঁধের মাটির কলসির জল
শেষ হয়েছে বহুদিন। শুকনো কলসিতে একটা শোলমাছ ছটফট করছে তীব্র খুধায়। তার কিছু
সজীব শ্যাওলা চাই- শুকনো বা জলীয়।
নতুন ভাবনা বিস্তার
কদমফুলের সাথে বাঁশীর
সুরের যোগাযোগ। তেমনি কদম বৃক্শের সাথে নিষিদ্ধতার। মৌলীনতার অপরধারে মিহি রেণু রেণু আবেগ
হৃদপিন্ডে মৌচাক বুনতে চায়। ছৌকোণাবদ্ধ দেওয়ালে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বার করে দেবে
সব উজাড় করে। আঠালো বিস্তার ছড়িয়ে গেলে আটকে রাখতে পারে অমোঘ বন্ধন। গুনগুন
পাখা ঝাপটানো গুঞ্জন মনে করিয়ে দেয় এক অচিন দেশের কথা। সেখানে এক অচিন রাজপুত্র
তার পক্শীরাজ। তানপুরার ছড় মনে করিয়ে দেয় পরিমার্জন। রাশি রাশি তাপিত বালির
অঞ্জলি। পাওনা যেটুকু তার কিছু বেশীই প্রয়োজন জনযোগ সংগঠন।