অরুণ কুমার সরকার
স্বজাত জানতে চায়
জননী, পুত্র চাও? বংশ প্রদীপ?
কত আশায় বুক বাঁধো
এ মন্দির সে মন্দির করে
কখনও ক্লিনিকের গোপন
চৌকাঠ ঘেঁটে
তথ্য তালাশে
কাঙ্ক্ষিত ফল জানতেই
কী উল্লাস! কী
উল্লাস!
আলো, শঙ্খ, মিষ্টি মুখ, মহার্ঘ উপহার....
বিপরীত লিঙ্গ দু'হাত দূরে বোবা সেজে
বিস্তর বঞ্চনা দেখে
জননী, পুত্র চাও? বংশ প্রদীপ?
তোমার কাঙ্ক্ষিত বংশ
প্রদীপের কৈশোর না ঘুচতেই
কেমন যোনিমুখ খোঁজে;
পৈশাচিক উল্লাসে
ক্ষতবিক্ষত করে তোলে
অসহায় নরম শরীর
অতঃপর, প্রমাণ লোপাটের
চেষ্টায় দাহ্যাঞ্জলি
এতে এতটুকু দায় কি
নেবে না জননী?
কোনও দায় কি নেই
তোমার?
তোমারই তো রক্তে
গর্ভে পুষে ছিলে নিশ্চিত নিরাপত্তায়
অথচ, নৈতিক মূল্যবোধের কি
পাঠ দিলে তুমি
জননী, পুত্র চাও? বংশ প্রদীপ?
তোমার কাঙ্ক্ষিত বংশ
প্রদীপের কৈশোর না ঘুচতেই
মেতে উঠেছে দেখ
মাতৃত্বের অবমাননায়
কোনও দায় কি নেই তোমার?
কী উত্তর বুকে
সাজিয়ে রেখেছ জননী;
স্বজাত জানতে
চায়....
একদিন শুধু মৃত্যুই
থাকবে বেঁচে
আমরা কি এখনও শুনতে
পাচ্ছি না
মৃত্যুর শব্দ?
এখনও কি মৃত্যু ভয়ে
কাঁপছে না দুটি পা?
কোন সুখের টান?
কোন সুখের টানে মৃত্যুকে
করছি
আমন্ত্রণ
কী এক মোহে খাদান
কাটছি রোজ
খাদান কেটে মোরাম
করছি লুঠ
জলাশয়ে জলাশয়ে দু'বেলা ছেনে যায় কত
প্রমোটারী
চোখ;
শূন্য করছি জঙ্গলের
গভীরতা...
পৃথিবীর এক ভাগে
কেবল বাসের ছাড়পত্র পেয়েছি
অথচ, তিনভাগ জলকেও করছি
তো
বিষ;
যে জল জীবনের সমান
পারদ ঊর্ধ্বমুখী
খামখেয়ালী আর সব
মৃত্যু হাতছানি
দিয়ে ডাকে ঘোর
অমাবস্যায়;
পৃথিবীর চার ভাগে
একদিন শুধু
মৃত্যুই থাকবে
বেঁচে....
মায়াবী উপত্যকা
এখানে অনাবিল মুঠো
মুঠো মুগ্ধতা ভাসে
জল বাতাসের গায়
একটা অদৃশ্য টান যেন
জেগে ওঠে
বুকের আনাচেকানাচে
নিকট দূরে মাথা তুলে
দাঁড়িয়ে
নীল হিমালয়ের
সিঙ্গালিলা রেঞ্জ আর বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চল
দীর্ঘ বঞ্চনা শেষে
গজলডোবার মাটি
আহ্লাদী ভোরের
আলো...
এখানে সবুজ এখন ভেসে
ওঠে শীত কিংবা বর্ষায়
কখনও পর্যটকের দু'চোখ ছুঁয়ে স্রোতের
দু'দিকে আনমনে সাঁতার
কাটে
লোভনীয় বোরোলি মাছ
মাঝির নৌকায় পিপাসু
মন ভেসে ভেসে
সৌন্দর্য পান করে
তিস্তা ক্যানেল কিংবা বৈকুণ্ঠপুর
জঙ্গলে জেগে থাকা
সবুজের রূপ
দিনের সূর্য নিভে
যেতেই
নিস্তব্ধ উপত্যকা
কেমন যেন মায়াবী হয় রঙিন আলোয়
রাতের গভীরেও লেন্স
বন্দি হতে
জেগে থাকে জল জঙ্গল
আর
পাহাড়ের মুখ....