বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

শম্পা সাহা


শম্পা সাহা

ঘুমো

সেই  দুপুরের মিষ্টি চুমো
কানের কাছে মন্ত্র পড়ে   
   ঘুমো ঘুমো ঘুমো

ঘুম আসেনা স্লিপিং পিলে
রাত্রি ডাকে আকাশ নীলে
জানলা খোলা বাতাস বলে
  ঘুমো ঘুমো ঘুমো

মাঝরাতে এই শরীর ডাকে
আলগা শরীর উদলা থাকে
মেঘ জোনাকী ঘ্যানঘেনে সুর
চিহ্ন ডুমো ডুমো
একলা শরীর শরীর খোঁজে
  ঘুমো ঘুমো ঘুমো

ঘুম আসেনা ঘুম আসেনা
শরীর জাগে ঝাপটে ডানা
তবুও কিন্তু চাইতে মানা
একটা প্রবল চুমো
ঠোঁটের গোঁড়ায় মন্ত্র পড়ে
  ঘুমো ঘুমো ঘুমো।





মন ঘর

নাই বা থাকি এক ছাদেরই নীচে
নাই বা হল এক ঘরেতে বাস
তবুও তোমার আমার মাথার উপর
অসীম খোলা একটাই  নীলাকাশ।
সব কথারা আজ পেয়েছে ছুটি
হলদে চিঠি লুকাই ঘরের  কোণে
সব স্মৃতিরাই  সরতে থাকে দূরে
ঠাঁই নিয়েছে তোমার আমার মনে।
সেই সে দিনের অদ্ভুত পাগলামি
সব হারানো এক খ্যাপামির ঝোঁক
হারিয়ে গেছে অতুল কালের কোলে 
আজ মনে তাই বিষণ্ণতার রোগ।
শুকনো ফুলের সেই যে ভাঙ্গা ডাল
আর কখনো না শুকান মন
অনেক দূরে যতই থাকি সরে
মনের ভেতর থাকবই আজীবন।
নাই বা রাখি হাতের উপর হাত
নাই বা বাঁধা হল আপন ঘর
বাইরে অসীম শান্তি পুষে রেখে
মনের ভিতর চিরকালীন ঝড়।
সেই ঝড়েতে ভাঙল যখন সব
একলা  হলেম আবার মুখোমুখি
মনের ভেতর তোমার আমার বাস
মন ঘরেতেই   আমরা হলেম সুখী।






                                                                                                                                                                                                                                                                একটা ছবি

হেঁটে চলে একদল রক্তাক্ত পা
ধুঁকতে ধুঁকতে চলে মানুষ বা নামানুষ  দল
ছিল কোনোদিন প্রাণ চঞ্চল
আজ ন্যুব্জ কাঁধ
কোলেতে অপুষট  বাচ্চা
বিশেষ দিনেতে বাজে গান
সারে জাঁহাসে আচ্ছা”
কঙ্কাল সার ঐ বীভৎস অবমানুষের
প্রেতচ্ছায়া
সভ্যতার মক্ষীরানি তার সাদা
বৈবাহিক পোশাক
ক্লেদাক্ত দাগ
তুলে ফেলে দামি ডিটারজেনট
মানুষের ঘাম রক্তের গন্ধ
ছড়িয়ে দাও বিদেশী আতর
আর নামি দামি সেন্ট।
ওরা খেটে খায়,
ওদের দেখলে বমি পায়”!
তথাকথিত এলিটের দল
কে তোদের মুখের অন্ন যোগায় বল?
মুঠো ফোনে জীবনকে ধরতে পারোনি
সেও জানি
সে যে হারায় বারে বারে
গ্রাম বাংলার মাঠে ঘাটে আর
গরীবের চালা ঘরে
নুন আর ফেনা ভাতে জীবনের অনাবিল গন্ধ
তবু বন্ধ হয়না তার
পৈশাচিক চিৎকার
খিদে তার বারে মুহুর্মুহ
কাঁদে কোলে অপুষ্ট বাচ্চা
দূর থেকে ভেসে আসে গান
সারে জাঁহাসে আচ্ছা!”