বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

জাহান গীর


জাহান গীর

দূরত্ব

প্রথমে একটা মৃত এবং তারপর
জীবিত ধূমকেতু অতিক্রম করলে
সাতটা সমুদ্র পাবে;
সাথে আরো তেরোটা নদি পেরোলেই
দেখবে হৃৎপিণ্ড রঙের একটা বাড়ি!
ওটার আশেপাশে যতো ব্ল্যাকহোল ছিল;
পুড়িয়ে দিয়েছি
বাড়ি নাম্বার সপ্তর্ষিমণ্ডল
রোড নাম্বার একটা নীলরঙ প্রজাপতি।

পথে এখানে সেখানে কিছু মৃত নক্ষত্র দেখবে
এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে এক কোটি হিমালয় !
তবুও পায়ে হেঁটেই বাড়িটাতে আসতে পারো;
ল্যান্ডমার্ক হিসেবে শুধু একটা সূর্যগ্রহণ মনে রেখো!

বাড়িটা বেশি তো দূরে নয়;
এক বেহুলার হৃৎপিণ্ড থেকে
এক লখিন্দরের হৃৎপিণ্ড কেবল!







ঈশ্বর

জানালা খুলে দাঁড়িয়ে ছিলাম;
যীশু বললো, “এখানে মধ্যরাতে ঈশ্বর আসবেন।”
মিনিট থেকে মাস
মাস থেকে আলোকবর্ষ ঈশ্বরের অপেক্ষায় থেকে থেকে
আবার জানালার ধারে গেলাম;
ক্রুশবিদ্ধ যীশু চিৎকার করে ওঠলো,
মধ্যরাত হতে এখনো কিছুটা বাকি।”
কুরআন, পুরান, বাইবেল এবং আমার অন্তর খুলে
ঈশ্বরের প্রতিক্ষায় রইলাম।
তার আরও এক কোটি বছর পর প্রকম্পিত ইথারে
যেই মধ্যরাতের ঘণ্টা ভেসে এলো
জানালা খুলে দেখি,
আমার ঈশ্বর খালি পায়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
নীলরঙ শাড়ি পরা, খোঁপায় সাদা ফুলের মালা
এবং পা জুড়ে আলতার বাহার;
গত জনমে ঠিক যেভাবে তাকে সাজিয়েছিলাম !








মনলতা ওয়ার্মিং

ঘটনাটা হঠাৎ করেই ঘটে গেল-
ঈশ্বরকে চমকিয়ে দিয়ে উত্তর মেরুতে
কোটি গুণ বেশি বেগে বরফ গলতে শুরু করলো;
ফলে সমুদ্রতীর থেকে শহরে এবং
দেশ থেকে দেশে বানের মতোন
মানুষের ঢল নামলো।

আবহাওয়ার জোরালো ফোরকাস্ট মিথ্যে করে দিয়ে
শীতপ্রধান দেশে শীত শতগুণ হলো
এবং মঙ্গলসহ জলশূন্য সব গ্রহ নক্ষত্র
জলে ডুবে গেলো।
মহাকাশ স্টেশণ ছেড়ে নাশার বিজ্ঞানীরা
হন্যে হয়ে পাহাড়ে পাহাড়ে
নূহের নৌকা খুঁজতে লাগলো।

পরিণামে দেশে দেশে যুদ্ধ হলো,
রাস্তায় নারীরা ভ্রষ্ট হলো;
আকাশ ভাঙ্গলো
চন্দ্র ভাঙ্গলো
সূর্য গলে বৃষ্টি নামলো;
এইভাবে তিনদিন কেটে গেলো !

অতঃপর একটু আগেই ব্রেকিং নিউজ হয়েছেঃ
মহাবিশ্বের কোথাও আর অস্বাভাবিক বরফ গলছেনা
এবং সমুদ্রের সব বাড়তি জল
আজ ভোরে উত্তর মেরুতে ফিরে গেছে !
কারণ তিনদিন পর আজ ভোরেই
মনলতার গায়ের জ্বর নেমে গেছে !