অভিজিৎ পাল
অসময়ের কথা ১
অসময়ে সময়ের
দিনলিপি বাঁধি।
যাপনের ফাঁকিগুলো
আঁট হয়ে আসে
গলার ওপর বসে আদরে
আহ্লাদে
ফাঁসের মতো ঠিক ঐ
বিভীষিকাময়
প্রিয়জনের করুণ
মুখখানি মনে
পড়ে। আমাদের কথা, প্রথম আলাপ,
মনে পড়ে বড়। প্রথম
আলিঙ্গনের
উষ্ণতা, স্নিগ্ধ চুম্বন, সব মনে পড়ে।
যন্ত্রণায়
ব্যথাগুচ্ছ গুমরে গুমরে
হওয়ার বুদবুদের মতো
হাওয়া
পেলে হারিয়েই যায়
কত অনায়াসে
পূজনীয় তুলে নাও, এ লকডাউন,
এই প্রাত্যহিক
যন্ত্রণার চেয়ে মৃত্যু
অনেক বেশি সুখশ্রী
এনে দেয় হাতে।
অসময়ের কথা ২
আনন্দভৈরবীর নাদ
ধ্বনিত হয়।
অঙ্গে অঙ্গে
শব্দগুলি অঙ্গন্যাসসম
জেগে ওঠে অনায়াসে।
যে প্রণয়ে নেই
কোনো মিথ্যাচার, কোনো অপ্রাপ্তির
কাঙ্ক্ষা
যন্ত্রণা দেয় না
অন্যকে,
সেই
প্রণয়ে
বিশ্বাস রাখতে ভুলে
যাব আমি?
না, না,
সমস্ত গাছের মতো
আকাশ ছোঁয়ার
ইচ্ছে আছে এখনও।
উদার আকাশ
আমায় আহ্বান করে, কোলে পেতে ডাকে
উপবন, মরুভূমি অরণ্য সাগরে
বড় হই আমি। জেগে
থাকি ক্ষুদ্র কাঁটা
যেখানে প্রতিবাদ
করতে বলে কানে।
সমস্ত অন্যায় মেনে
নেওয়া জঘন্য
অপরাধ। বিশুদ্ধতা
ঠিক পাব আমি।
আবাহন
অসময়ে কালোদাগ এসে
জমে,
দানা বাঁধে, বসে, বসতি স্থাপন করে।
আবাহন করি, যে আবাহনের কোনো
বিসর্জনপাঠ জানা নেই
আমাদের।
মারীবীজে আজ আকাশ
ছেয়েছে।
সবিষ পাপ ছুটেছে
তোমার আমার
পাড়ায়। আজ তাকিয়ে
দেখা ছাড়া
দ্বিতীয় কোনো উপায়
নেই। নেই খেদ।
ওরা চায় আদিম
বনভূমি। ওরা চায়
প্রাচীন প্রকৃতির
পাঠ। ফিরে যেতে
চায় তপোবনের পর্ণগৃহে।
দেখতে চায়
কোন ভাষায় কথা বলে
শকুন্তলা।
ফিরে যেতে হবে। ফিরে
আসতে হবে।
জেনে নিতে হবে
হরিণের সঙ্গে মানুষের
কথোপকথনের স্বরলিপি।
আশ্রমিক
জীবন থেকে নিতে হবে
সেই আদিপাঠ।