অনিমেষ মন্ডল
বোধাতীত আঁধার
ঘিরে:ঘুম
ঘুমিয়েই থেকো, তোমার ঘুমানো শরীর
জুড়ে
বোধাতীত আঁধার,নাকি আলোর পাহাড়?
উড়াল পুলের মতো
ভেজামেঘ ঝুলে থাকে
আলো ঢাকা ভেতরটা ধীরে ধীরে অন্ধকারের দিকে...
শরীরে খেলে যায়
বাউলিয়া মাঠ;ব্রহ্মতত্ত্ব
দেহভান্ড তন্য তন্য
করে খুঁজে ফেরে:
ব্রহ্মের খোলাপথে
রিপুর পাঁচিল আঁটা।
তোমার চেতনায়
রূপালী বৃষ্টি ঝরেনি বহুকাল-
ধর্ষিতা মেয়েটির
চোখ দেখনি,খুঁজেছ মোমদানি
তারপর আবার ঘুমিয়ে
পড়েছ পাশ ফিরে,
অকালে ঝরে যাওয়া পাতার মতো যে ছেলেটা
নৃশংস হত্যার শিকার;তার মায়ের হাতটা
আলগা পড়ে আছে,
ছোঁয়ার চেষ্টা
করেনি কেউ।
'বিনাশায় চ
দুষ্কৃতাম্'
গীতার
পাতায় আলো আনে
তুমি সময় বাঁচিয়ে
দুষ্কৃতীর পদলেহন করে পাতা ওলটাও;
তোমার বুকের
পেসমেকার যন্ত্রটা মানিয়েছে বেশ!
লালন সাঁইয়ের
দেহতত্ত্বের গান একতারাতে সুর তুলেছে
তুমি শুনতে শুনতে
গভীর আঁধারে ডুবে যাচ্ছ, তলিয়ে যাচ্ছ...
আঁধারে ভয় পাইনা
আঁধারের ভয়ে
অতর্কিতে ঘুম ভাঙেনা আর
তারা হারিয়ে গেলে
শোক নামে না
এখানে চাঁদও ক্রমশ
ধান জমিতে ডুবে যায়,
ধানের শীষে অন্ধকার
নামে মাঘের শীত হয়ে
মাটি পুড়িয়ে
কৃষকেরা খামারে ছাই ভর্তি করে
তারপর সরকারি অনুদান
কাকের ভাত ছিটায়।
এখানে বাদুড়েরা
দিনেও শিকার খোঁজে
টুপটাপ নিভে যায়
প্রদীপের সলতে
জরাগ্রস্ত সূর্যের
মুখে উলটে পড়ে শূন্য থালা
উল্লাসে কৃষ্ণপক্ষ
ঝাড়বাতি জ্বালে বনেদি দালানে।
আঁধারের ভয়ে
হারিয়ে যাই না আর
বিলুপ্ত আলোয়
বিষমাখি দুহাত ছড়িয়ে
বুকপকেটে পোড়া হাড়
জমেছে বহু যুগ ধরে,
একটা প্রেমের চিরকুট
রাখার জায়গা খুঁজে চলেছি
হে প্রিয়, তোমার চিলেকোঠায়
এখন গোলাপি প্রেম
উড়ে যায় শঙ্খচিল
হয়ে আঁধার ছিন্ন করে।
কয়েকটা চরিত্র
মুগ্ধ বিন্যাসে সেজে
উঠেছিল
কয়েকটা চরিত্র।
কাল্পনিক যদিও,
পুরাতন পুঁথি ঘেঁটে
খুঁজে আনা
পৃথুল সময়ের উদ্বেল
আবেগ।
পুতুল নাচের মতো
কেবলই
নেচে চলেছে।
বাস্তবের ঘুরপথে,
বিস্তীর্ণ হিংসা
গায়ে মেখে
ছুটেছে রাজসূয়
ঘোড়া দিকশূন্য।
পুরা চরিত্রের
চক্রজাল চতুঃস্পার্শে
ছড়িয়েছে ফাঁদ।
মাৎস্যন্যায়ের আঁধার,
তোমাকে ঘিরে ধরেছে
আদিম রাত্রি
ওৎপাতে আরেকটা
কুরুক্ষেত্র কিংবা জ্বলন্ত ট্রয়।
অশ্বত্থামার মতো
কিড়ালগ্ন দেহ
তবুও অমৃতস্য।
যুগান্তরের কৃষ্ণশাপ,
ক্রূর ইতিহাসের
পোড়া হাড় ছায়া ফেলে
কয়েকটা চরিত্র।
উষ্ণশ্বাস তোমার স্মৃতি সত্তায়।