বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

ফাল্গুনী দে


ফাল্গুনী দে

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা

মাথায় হুটার বাজিয়ে মন্ত্রী এসে বসেন বাসন্তী টুডুর দাওয়ায়
মিনসে মুরুব্বীদের সাবেক ধূলো চাপা পড়েছে কালো পিচের তলায়


আর ভয় নাই । আলো জ্বলবে
ছেলে মেয়েরা পড়বে দূর গাঁয়ের স্কুলে
হাসপাতালের পথে আর কেউ মরবে না


শহর পাঠিয়েছে নাগরিক ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট --
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা


সাপের মত ঢুকে পড়েছে -- পরগনা তহসিল মুলুক
বিষ নাই শুধু ছোবল মারে
পেটে কঁকিয়ে ওঠে খিদে-মরা ভাতের গন্ধ


অনুরোধ ফেরায়নি গ্রাম
নাড়ি ছিড়ে পাঠিয়েছে দিল্লি-বোম্বাই-কলকাতা-মাদ্রাজ



যে রাস্তা গ্রামকে পাঠায় শহরে
সে একদিন শহর থেকে ফিরবেই।






ফেরারী সাইরেন

সম্পর্ক থেকে পিঠ ফিরে দাঁড়ালেই
রোদ এসে গায়ে লাগে
এ যাপন শিখিনি বলে স্পর্শ করেনি সূর্য
দ্রাঘিমারেখা কে

তোমাদের হাতে যেটুকু বাকি তাই দিয়ে
আলপনা এঁকো উঠোনময়
তুলে নিও মুঠো মুঠো আলো, নবান্ন উৎসব
সন্ধ্যে পাখির ডানায়

যাদের গন্তব্য অনেক দূর তারা নেমে এসো
ভোর ভোর পথে
নক্ষত্রের মুছে যাওয়া আলো পাড়ি দিয়েছিল
নবজন্মের আগে।







বিধবা

যেসব বিধবা নারী শরীরে আগুন নিয়ে মরেছে
তাদের চিতার পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছি
শুকনো কাঠের আগুনও নিভে গেছে

খোলা আকাশে জটপাকানো ধোঁয়া
কার্বনের অণু-পরমাণুতে
বহু পুরুষের স্পর্শসুখে
                          কাঁপে বুকের ঐশ্বর্য ফুল

জীবনের প্রতিটি অসফল ঋতু রক্তের আক্রোশ
মন্দিরের পেছনে অন্ধকারে আত্মরমনের চিৎকার
              সিঁদুরের দাগের মতোই মিলিয়ে গেছে

না পুড়িয়ে জলে ভাসিয়ে দিলে
জেলে-বৌ হয়ে মাছের মুড়ো খেতো
নিয়মে না বাঁধলে মাতাল মরদের হাতে
প্রতি রাতে ধর্ষনের স্বাধীকার সুখটুকু পেতো

মা গঙ্গার বুকে  নৌকা বিহারে ভেসে ভেসে
ছবির মতো সুন্দরী বেনারস শহরের দিকে তাকিয়ে
শুধু এই কথাগুলোই মনে হয়েছে।