হরিৎ
বন্দ্যোপাধ্যায়
সব নদী গাছ
সবুজ দুপুরের পাশ
দিয়ে যত নদী বয়ে গেছে
কোনো পান্থশালা থেকে
তাদের ডাক আসে নি
বাসস্ট্যান্ড থেকে
চেনা পথের বন্ধু
হাতনাড়া দিয়ে
ঝড়ের পথে কথা বলে নি
যত উপনদী শাখানদী সব
এক একটা গাছ
বাড়ির পাশ দিয়ে
এলেও এখন হাতের নাগালের বাইরে
শাসকের ভোঁতা বইয়ে
নদীর সংজ্ঞায়
আগামীর সারা মন
আর্দ্র হয়ে উঠতে দেখে
পাঠ থেকে নদীনাম উঠে
গেছে সব
ভুলে গেল প্রতি পথে
জল দিয়ে মুখ দেখেছিল সে
জলের ভুল নামতায়
মাটি তো মরুভূমি
নদীপথে ছাড়া
বৃষ্টির গান কোথায়?
এখনও কেউ কেউ জলে
জলে কথা বলে
নদীপথে উড়ে যায় সব
পাখি
মাটি তার হারিয়েছে
ডানা
সব ছেড়ে মাঝরাতে
মুখোমুখি হয়েছে শাসক যখন
সব নদী হয়ে গেছে গাছ
।
রোদের পাঠ
স্কুলের বাধ্য
ছাত্রের মতো
প্রার্থনায়
দাঁড়িয়ে আছে একলা দুপুর
সে নেই প্রাত্যহিক
একঘেয়ে সুরে
চন্দ্রবিন্দুর মতো
উঁকি দিয়ে দেখি
দুপুরের ঘরে কেউ যেন
কথা বলে
আঁকা চোখে বাঁকা
চোখে সকলেই দেখে
আলো আলো সব ভালো তার
তবুও সে নেই কেন
বশ্যতা স্বীকারে
দুপুরের কোল ঘেঁষে
দেখি বারান্দায় ছড়িয়ে
ভোরের দেওয়া বিউলির
ডালের বড়ি
বুকের কাছে জড়িয়ে
নিয়ে রোদের মন্ত্র পড়ে
ঘোলা সবকিছু আয়নায়
তাই কোনো ছবি নেই
সারি সারি এইভাবে
বেঁচে আছে সব ------
নিজে হাতে মুছে দেয়, দোষ নেই কিছু
দোষ জমে পাহাড়ের
মতো
মাথা ছাড়িয়ে আকাশ
ছুঁয়ে ফেলে
দেশে দেশে যাদুঘরে
কৌটোয় রাখা
গল্পমুখর প্রাচীন
দাদুর মতো উজ্জ্বল মুখে
ভোরের দুয়ারে বসে
রোদের পাঠ নেয় নিথর দুপুর।
ছাদ
ছাদ ভেঙে গেলে
প্রথম জেগে উঠেছিল
সে
যেন তার সব দেহ পড়া
হয়ে গেছে
এখন তাই মাথা নিয়ে
ব্যস্ত
হাত পড়া হয়েছে?
মুখের মতো কথা বলতে
পেরেছ?
টান টান করে
পা দাঁড়িয়েছিল
পায়ে
তুমি দিনান্তে
একবারও তাকে মন দিয়েছিলে?
এখন
মাথা চেনার অভিজ্ঞতা
কোথায় কাজে লাগাবে বলো?
ছুটে এলে মাথায়
কোথা দিয়ে এলে?
সবাই তোমার মধ্যে
জেগে আছে?
জল ঘুমালে কিন্তু জল
চেনা যায় না
ভুলে যাওয়া, উপেক্ষা -------
বোলো না
দোষ - গুণ ভুলে যাও
মন বলুক -------
জানা হলো না