শ্যামলী রক্ষিত
শ্রাবণের ধারাপাত
শ্রাবণের
ধারাপাতে ভিজছে শরীর
তবু লেলিহান আগুন এসে ঝলসে দিচ্ছে নরম
ওষ্ঠ রেখা,
শৈত প্রবাহের
প্লাবনে
ভেসে যাচ্ছে ঘর
গেরস্থালির দিনলিপি,
সু অবিন্নস্থ সময়
তছনছ করে
জীবনের বেপরোয়া
চলাচল।
এই ভাঙা চোরা মনের কাছে
আশাবরী রাগে বেজে
উঠল তোমার পাঠানো
নির্মল গোলাপ গুচ্ছ
আমি তার পাপড়ি
র পরতে পরতে
তোমার হাতের স্পর্শ
খুঁজেছি
নির্মেদ আহম্মকের মত
,
শরীরে যা থাকে তবু
থাকে না
সেই অক্ষর
মালার সজ্জিত বিন্যাসে
দেখো অরূপের বাণী
ছন্দে সুরে ভেসে বেড়ায় মন থেকে মনে
অধরা মাধুরী দিয়ে
যায় আনমনে
হেসে ভালোবেসে ।
স্বপ্ন বিলাসী
ভেঙে যাওয়া আয়নার
প্রতিটি টুকরো
তুমি কুড়িয়ে
রেখেছো যত্ন করে,।
যেখানে একাধিক
প্রতিবিম্ব খন্ডিত ভূখন্ডের মত
ছড়িয়ে ছিটিয়ে
থাকে কাঁটাতারের বেড়া থেকে
অনেকটা দূরে সীমানা
প্রাচীর ঘেরা দেশান্তরের
গৃহস্থ পটভূমিকায় !
শ্রাবণ বরষায় নেমে
আসে প্লাবন
ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে
ইলিশের মরশুম কেঁপে ওঠে বুকে
অখন্ড দীর্ঘশ্বাস
এসে ঘিরে ধরে নিজের ছায়াকেই
তবু শরীর জুড়ে
হাহাকার
চাতকের মত পিপাসার্ত
মন নিয়ে একদিন
ফেলে রেখে চলে যেতে
হয় আপন হাতে সাজানো
খেলা ঘর খানি।
যে পথে ক্রমশ
স্বপ্নের অবয়ব ফুটে উঠেছিল
ছায়াপথ এর মত , আলোময়
সেই পথ জুড়ে কাঁটার
মত
অদৃশ্য সময়ের
ব্যভিচার।
একটু একটু করে বিলীন
হতে থাকে অস্তিত্ব
নিজের কাছে ফিরে
যেতে হয় নিজেকেই
আর সব বিলাসিতা
ছেড়ে।
আবক্ষ নগ্নতায় ঢাকা
শরীর
টুকরো টুকরো কাচ
জুড়ে দেখো যাদুকরের মত
ফিরে যেতে পার কি
আবার
রূপকথার সেই অমলিন
স্বপ্ন বিলাসে - - - -
নিধিরাম
আমাদের বর্ণপরিচয়
শীতের ভোর যেমন করে
কুয়াশার গভীরে তলিয়ে যায়
একা নিঃসঙ্গ অভিসারে
আচ্ছাদিত
অপসংস্কৃতির মধ্যে ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে
আমাদের বর্ণপরিচয়।
ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া
পাশ্চাত্য চাটা
উচ্ছিষ্ঠ কিছু
বেনামী বন্দর
এসে ভিড়েছে বঙ্গ
সংষ্কৃতির ঘাটে ।
ছত্রছায়ায় থাকা
বুদ্ধিজীবী নামক কীটের
দংশনে বাজারি পণ্যের
মত
চোরাচালান
হচ্ছে আমাদের বর্ণমালা
তছনছ হচ্ছে হরির
লুটের মত
গ্রামীণ সংস্কৃতি - - ,-
একে একে সব কিছুর দণ্ড ধারক হয়ে গেছে
সেই কবের থেকেই যেন
ঝাঁ চক চকে রাজধানী
শহরের কিছু স্তাবক ।
তারা বক্তৃতা দেয়
গানও গায় কবিতাও লেখে
উইয়ের মত বংশ
বিস্তারি এরা
ধ্বংস করে ক্রমশ সব
কিছু ধীরে ধীরে।
এই বিভৎস অন্ধকার
থেকে এবার
সময় এসেছে মুক্ত
করার,
শ্রাবণের আকাশে
ঝুলছে করোনা কালীন মেঘ
সমস্ত অসুস্থতা থেকে
মুক্ত হোক
শিক্ষার অঙ্গন , সংষ্কৃতির বন্ধন
সুদৃঢ় হোক ভালোবাসা
দিয়ে
ব্যবসায়ী
স্বার্থপরতা দিয়ে নয়।