বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

অপরাজিতা চিত্রলেখা ঘোষ


অপরাজিতা চিত্রলেখা ঘোষ

সময়

বিবর্ণ স্টেশনে জেগে
ওঠে ভোরের দোয়েল।
শিস দিয়ে ডেকে যায় ---
শোন হে পথিক,
দৃরে যাবে? নাকি সয়ে যাবে?
গ্লেসিয়ারে ধস্ নামা নক্ষত্র সময়!’

মানুষের চোখে আতসকাঁচের আনন্দ
নীচে নামছে ক্রমশঃ;
শহর পেরিয়ে গ্রাম
গ্রাম পেরিয়ে অভয়ারণ্যে
মনুষ্যত্বের নিলাম....

আগামী সকল সন্তান  নপুংসক হোক।


নিজেকে মানতে মানাতে
মানুষ তুলেছে, ছিঁড়তে
না পারলে মরতে হয়।
প্রতিবাদ যদি রক্তে
আগুন না ধরায়
তবে মানুষ বদলাবে কি করে?
........আর সময়?






অপরিণত

কপালের ঠিক কোনখানটায়
রক্ত জবা হয় টিপ?
কতটুকু গাঢ় হলে কাজল
হয়ে ওঠে একান্তই তার?
ভরা জোছনায় ঘর পালিয়েছ কখনো?
নীল শাড়ি, খোঁপায় দোলনচাঁপা!
শেক্সপিয়ার পড়েছ? জীবনানন্দ, কিটস?
শঙ্খ ঘোষ?

তোমার শহরের সমুদ্র ঘেঁষে
চলে গেছে যে হাইওয়ে
সময় পেলেই যে পথ ধরে তুমি
লঙ ড্রাইভে যাও,
সেই হাইওয়ে ধরে একটা গোটা বর্ষাকাল
হাঁটতে চাই আমি।
দেখতে চাই
এই পথ তোমাকে
কতটা দূরত্ব মাপতে শিখিয়েছে!


মনে হবে অপেক্ষা করছ দীর্ঘকাল .....
মনে হবে ধীর পায়ে হাঁটছে
রেডিয়াম সংখ্যা গুলো।
ঠিক দু মিনিট সাঁইত্রিশ সেকেন্ড পর
শেষ হবে অনন্ত কাল,
তোমার চোখে তখন শ্রাবণের মৌসুম ।







ভাল থেকো

ভাল থেকো।
সন্ধ্যার কপালে যখন
চুমু খেয়ে যাবে আঁধারের আঁচল....
তখন তোমার আকাশময় নিশীথিনী
ভাল থেকো সেই অস্ফুট আঁধারে।

ভাল থেকো।
যখন এ শহরের পথে পথে
হেঁটে বেড়াবে বকুল গাছের দল অথবা কদম
জলকেলি করবে মাধুরিলতা ভেজা শাড়ি
ভাল থেকো সেই ভেজা শাড়ি গন্ধে।


ভাল থেকো,
যখন এ শহরের রাস্তাগুলো মুহূর্তেই
নদী হয়ে যাবে আর
নিশ্চিন্ত  হৃদয় খুঁজে পাবে
মেটেগন্ধী তাপ,
জলভেজা কৃষ্ণচূড়া অথবা কনকচূড়ার
চোখ থেকে ঝরে পড়া রঙগুলো
হয়ে উঠবে অপরাজিতা।
সেই মগ্ন সুধা বুকে নিয়ে
ভাল থেকো।