সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ভাস্কর পাল


ভাস্কর পাল

প্রেম ও প্রাণ

তোমায় একটিবারও কি বলিনি

জাদুবাস্তবতার ঘোর কেটে গেলে 

মেপেল পাতার সবুজকেই ঘিরে রাখে ভোর

অযুত আত্মদগ্ধ জোনাকীর

জালে জালে আটকে থাকে যে রাত, তাকেও বলেছি

প্রস্তুত থাকো...

দরকারে যেতে হতে পারে অবিচল ঝড়ের কাছে।



মুহূর্ত’রা এখন তোমার ইশারায় তৈরি

যে কোনও সময়

আসবে ডাক ঝাঁপিয়ে পড়ার.

আলপনা আঁকা কুঁড়ে ঘরটির পেছনে ছুটতে ছুটতে

হুস করে বাতাস নিয়ে এলো তোমার গন্ধ

কেউ কি পাচ্ছে কোথাও ?

বাতাসের কানে কানে বলে দিয়েছি...

ক্ষণিকবাদে মেঘের বাড়ি যাবো!

কেউ যাবে সাথে?



জুনিপার গাছের নীচে বসে তুমি

তোমার শরীর থেকে খসে পড়ে মৃগনাভী 

আর সূর্য শিশিরে স্নাত তুমি রুদ্রাক্ষী

তোমার তেজে চোখ ঝলসে যাচ্ছে ।

আমি বাতাস ধরে ঘূর্ণির আবর্তে তোমাকে ঝুঁকে দেখি

তোমার সর্বকারুকার্যের তরঙ্গগুলি সূর্যের পা বেয়ে বেয়ে ওঠে।

ভালোবাসা ছলাৎছল নদী...

তোমাকে ভালোবাসি বলবো বলেই

সৃষ্টির প্রথম প্রহরেই ঘাসের আংটি বানিয়ে মধ্যমায় পরেছিলাম

তারপর সকাল থেকে সন্ধ্যে মনে ছিলোনা ঘাস আংটির কথা!



বিদ্যুতের চমকের মত ভেসে ওঠে ইচ্ছের দৃশ্যপট....

পারদের ভেতর থেকে বিরল স্পর্শ করতে

স্বপ্নের ভেতরে একসাথে আভারনাস-হ্রদের আকাশে শঙ্খচিল হতে

পেগাসাস পঙ্খীরাজের সাওয়ার হতে

যতবার ইচ্ছে আমি তোমাকে বাতাসের মতো স্পর্শ করবো বলে

কোমল গান্ধারে ভেসে ভেসে তোমার বৈদিক শ্লোক শুনবো বলে

তোমার অক্ষরের ছায়ায় দাঁড়িয়ে এই নদীগুলো



একজন পুঁথিকার সেতুবন্ধন নিয়েই লিখছেন তার সর্বশেষ পুঁথি।

দেবদারু পাতাগুলো অঙ্কখেলা শিখছে লতার গণিতে

কয়েকটি কুয়াশা ভোর সূর্যকে শিখাচ্ছে নিয়মের নৈঋত

শস্যময় মাঠের শিথানে বসে

সে কথাই ভাবছে একঝাঁক পাখি



এখনই সেই সময় যখন

তুমিই দেবে প্রেম ও প্রাণ ।।






অনতিক্রম্য

বড়ই অন্যরকম একটা দিন

মেঘ বৃষ্টি ভেজা আবেগ মাখা নিঝুম

আজকের পাটিগণিত বর্ণহীন বেগুনি

কিংবা বহেমিয়ান লাল

ফেজ ট্রানজিসন টেম্পেরেচারে

হাঁটু জল ভেঙে ভেঙে পথের

রেখায় মিশতে থাকে গতিপথ ।

জানালায় বিমূর্ত কন্টিনিউয়াসে

আমি সমুদ্র খুঁজছি . . . .

আমার আলো আঁধারে ভরা ঘরে

দেখার মতো কিছুই নেই এমন

শুধু ভালোবাসা আর কবিতা ছাড়া

এর একদিকে আমি আর দ্বিধাহীন দূরত্বে তুমি

দুইজনে মুখোমুখি।

তোমার বুক জুড়ে চিত্রিত জলজোছনা

গলে মিশে যাছে তোমার শরীরে।

বাকিটুকু ভেসে গেছে আঁধারে।

আপাতত সব কাজ রেখে

চুপটি করে বসে থাকো তুমি....

বাইরে বৃষ্টি চলুক.....

এসো, প্লাবনের আগে আরোও একবার

নতুন করে প্রেমে পড়ি।

বৃষ্টি ভেজা চুলে বালিশ ভিজে যাক।

এরপর ফ্রিকোয়েন্সি বলদে নেবে ইতিহাস

ষষ্ঠ ঋতুর ছোঁয়ায় বেজে ওঠে বাঁশি

তোমার কথার আদিরসে ছন্দ পায় কোমলগান্ধার

আমি ভালোবাসার পাটিগনিতে খুঁজে নেই খাজুরাহো ।

তুমি কি জানো কিভাবে অনুভুতি জমে জমে

স্পর্শ থেকে জন্ম নেয় কবিতা?

কি ভাবে তিলে তিলে বাড়ে ভিসুভিয়াস ?

কিভাবে তোমার কপালে ঐ চাঁদ টিপ হয়ে ওঠে?

গোলাপী আবেশ গুলো তখন চাওয়া পাওয়ার মানচিত্রে নিবিড়,

এসময় যদি তোমায় ডাক দিই,

-উপেক্ষা করবে?





অন্তঃপুরুষের আখ্যান

প্রতীক্ষার সময়গুলো বড়ই সুদীর্ঘ

অগ্নিকোনে অপেক্ষায়মান

মৃগশিরা নক্ষত্র নিষ্পলক তোমার জন্য

তুমি তাকালে

শুরু হবে তার ভবিষ্যৎ যাত্রা

তোমার একহাত ছুঁয়ে আছে

অনন্ত জলরাশি

এক হাতের নাগালে গনগনে আগুন

ভেসে আসা সুরের মূর্ছনায়

অন্তঃপুরুষের আখ্যান থেকে উঠে আসে

স্নিগ্ধসাঁতার

মহাকাশের নক্ষত্র মন্ডলী ছুটে আসছে চোখের ভিতর  

মুহূর্তরা ধাক্কা খেয়ে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে

তরঙ্গে ভেঙে ভেঙে

আমি ধরা পড়ছি নিজের কাছে

চারপাশের ধুলোভর্তি বৃত্ত

শরীর সাত্ত্বিক রেখে

টেনে হিঁচড়ে নেমে যায়

তোমারই শহরের কোন রোদ্দুরে

অনুরাগের সংজ্ঞা শিখতে ।

তোমার দহনে পুড়েছে দু’চোখ

ভেতরে দাউদাউ অনন্ত মৌনতা...