পুষ্পিতা
চট্টোপাধ্যায়
পাখির ঠোঁট
তোমার নীল চোখে দেখি
সহসাই সন্ধ্যা
নেমেছে
ফ্লাট বাড়ির পাশে
এঁদো পুকুর সংলগ্ন
টালির ঘরের গভীরে
কঞ্চি জানালার গা
ঘেঁষে
বিষন্ন বিকেলের
নকশার মত
তোমার অসহায়
বন্দীদশা!
আমি আয়নায় মুখ দেখি
দেখি মেঘ থমথম নীলার
কপালে
মস্ত চাঁদমুখী টিপের
উপর দিয়ে
ভেসে যাচ্ছে
থইথই মেঘমিছিল
কাঁহাতক আর লিখতে
ভালো লাগে
প্রজাপতির নিত্য
প্রয়োজনীয় অভাব সংকেত
নীলার চিন্তাশরীরে
চুম্বনের কাতরতা
নিয়ে জেগে উঠছে
পাখির ঠোঁট
আমার পাগল জুটি
এসো কাছাকাছি থাকি
এসো পাশাপাশি থাকি ।
ভাললাগা
বিকেলটা ভালো লাগছে
ইদানিং
নড়বড়ে ধড়ফড়ে বুকের
ভেতর
চিনচিনে ভাললাগা
নিয়ে
বেঁচে থাকতে চাইছে
কেউ
ছাদভাঙা বাড়িটায়
উথালপাথাল চৈত্র
বাতাস
খেলে চলেছে
মূহুর্মূহু
শুকনো গাছে কেউ যেন
আঁজলা ভরে ছিটিয়ে
দিচ্ছে জল
ভিজিয়ে দিচ্ছে মাটি!
প্রজাপতির আনাগোনা •••
মৌমাছির গুনগুন
এ সবকিছুই ভাললাগার
উৎসবের মতো!
আলোকবর্তিকা পথ ধরে
নির্মেদ গাছও কি
ফুলে ফুলে
বেঁচে উঠতে চাইছে
এইবার?
প্রেমে-অপ্রেমে
"অসীম তোমার তল খুঁজে
না পাই"
তোমার অতলে তল
খুঁজতে গিয়ে
এ হৃদয় কতবার যে
তোলপাড় ধ্বনি তুলেছে
কতবার কান্না
সামলাতে গিয়ে
তোমার সামনে চুরচুর
ঝরে পড়েছে মাটি
আর তুমি গুমগুম
ভাঙনের শব্দেও
নির্বিকার মুখ
ঘুরিয়ে নিতে নিতে দেখেছ
তোমার প্রতিমার শরীর
থেকে
সমস্ত মাটি, রঙ, অলঙ্কার সমস্ত অহঙ্কার
গলতে গলতে মিশে
যাচ্ছে তোমারই অতলে
যেন একটা হেরে যাওয়া
কাঠামো!
আজও খুঁজে চলেছে
রোদের আলো, ছায়ার নরম স্পর্শ
যেমন করে পাখি তার
নিরিবিলি
নীড় খোঁজে দিনের
শেষে
যেমন করে জ্যোৎস্না
খোঁজে রাতের কোল
'তেমন করে তোমাকে আর
পাওয়া হল না হে প্রিয়'
আমার হৃদয় সিন্ধু
ভালবাসা
তোমার কাছে এক
বিন্দু পদ্মপাতার জল ছাড়া আর কিচ্ছু না!
ফিরে যেতে যেতেও
ভেসে বেরাচ্ছি
আদি ও অকৃত্রিম
টলটলে প্রেমে -অপ্রেমে।