সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সুকান্ত মজুমদার


সুকান্ত মজুমদার

বৃষ্টিভেজা বিকেল

এ আমি ভালো না থাকার প্রয়াসী
চির প্রতিক্ষীত আর একটিবার
তোমায় নিয়ে শ্রাবণ মাখার আবদার,
আসবে ফিরে?
সে তুমি এক বৃষ্টিভেজা বিকেল বেলা
হয়েছিলে,যার সবখানে আমি
ভারাক্রান্ত মেঘের গুমোট ছায়া মতন -
অনেক কথার প্রশয় দিয়েও নাফোঁটা বেলিফুলে রয়েগেলে।
আজোও সেই প্রেক্ষিত
কুঁড়ি সমাগমে চেয়ে বয়ে যায় -
কখোন রাতের অন্ধকারে ফুঁটে ওঠো
কে জানে? মেঘ মন্দ্রিত প্রত্যুষে
সুগন্ধী মাদকের মত আলো হয়ে
আবার কখোন কালো হয়ে যাও।

নিভৃত অবসর তোমাকেও একটুকরো  জীবন ভেবে জীবনযাপনের
প্রতিবিম্বের পটে প্রশ্নচিহ্নে আঁকছে,
তুমি প্রকটিত ভেজা চাঁদের সামিয়ানায়
বৃষ্টিমুখর আবছা আলোয়
মনগড়া বিবিধ প্রলুব্ধের আস্কারায়
চুপটি করে বসে আছ, দেখছি -
এও দেখছি, সাধ হয়না তবুও,
হানাদার জলদস্যুর বিদগ্ধ নৈশ অভিযানে,
নির্বাক আত্মসমর্পণের আমিকে।
সে তুমিময় বিকেলের অস্পষ্ট আলো
আমার কাক্ষিত অভিযানের শকট
অবহেলার প্রতিলিপিতে নির্দ্বিধায় ডুবছে,
আর বিশেষ অন্ধকার আপন হবার
সংকল্পে নির্দ্বিধায় তোমাকেই চাইছে।
 





জল আর জল       

তোমার সাথে সুখ সন্ধানের সে প্লাবনে
তোমার সর্বস্ব জুড়ে আষাঢ় হোক
চির স্বস্তির ও সুখ মোহিত
বদ্ধ দ্বারের বাইরে সব পথে
আমির মত অবহেলিত ধুলোসব
ধুয়েযাক,যা শুধুই অতিত,
ভাবলেশহীন একমনা তুমি
বিনিদ্র প্রহর রেখায়
চেয়ে দেখিও একবার
উন্মুক্ত পদচিহ্নের বুকে
জীবন ভবিতব্যে পড়ে আছি নতমুখে,
তোমারি ভালোথাকার অভিবাদনে
ব্রাত্য কদম রেণুর সাথে।

তোমার পানে ক্ষণিক চেয়ে থাকার
অঘোষিত স্মরণের মৌনসুখে
উতল মেঘের কায়াজুড়ে
ঝরে পড়ার ভবিতব্য দেখেছি,
সব সুখ চকিতে এসে
আবার ফিরে যায় এমনি
অন্য এক সুখের ঈশারাতে,
অবাঞ্ছিত দৃষ্টি সুখে ভেজা
আত্মতৃপ্তির অবোধ মাঠ জলময়
হবার মিষ্টি মোহে প্ররোচিত,
এক অপরাহ্ন বুকে নিয়ে
বাদল রাগে তরতাজা শ্রান্তি
ধুয়েমুছে আত্মজীবনীর বারান্দায়
নির্বাচিত নিরবতার সাথে হেসে ওঠে,
কোন এক বিশেষ তুমিকে
নিদ্রালু স্বপ্নের একাকীত্ব বাঁধতে চায়
সে তুমি না আমিকেই? বলা দায় -
এছাড়া আর কিছু নাই,তুমি বলে কেও -
আমি বলে কেও সব জলময়,
আমি সব বৃষ্টি তারপর জল আর জল।






স্বার্থপর

নির্ঝরের করুন নাদে
কান পেতে শুনি রিক্তভরা
চির নবীন সময়টুকুর উচ্ছ্বাস,
গুটি কয়েক সরল নির্বাক চাহনি
সুগন্ধ ঢালে আহ্লাদের আঙনে -
অপেক্ষমান সমুখে অনর্গল বারি ধারায়
মিশেযায় তারি দীর্ঘশ্বাস বারংবার
বিক্ষিপ্ত ভেজা বাতাস বৃষ্টির সাথে
দামাল বৃষ্টি হয়ে ওঠা স্মরণ পটে
তারি সৃজন করে চোখে মুখে,
নিবিড় আঁধার রাতের আতিথ্যে
অদেখা ইচ্ছেদের ঝিঁঝিঁস্বরে মত্ত হওয়া
ঠাকুরমার মুখশ্রিত কিছু আংশিক কথা
পিছুটান হয়ে দ্বিধান্বিত আমিকে
তোলপাড় করে দিয়েযায় -
শুষ্ক মৃত্তিকার আত্মসমর্পণের
মত বিগলিত ধারায় পূর্ণতার বিন্যাসে
আমার কাছেই স্বার্থপর আমি
হয়ে উঠি এক বিশেষ অন্য আমি,
যা ডুকরে ওঠে, কাঁদতে পারেনা -
প্রলাপিত হয় ভাসতে পারেনা
পাগুলি স্বাধীন তবু এগোয়না,
পেছনে অনেকদূর পর্যন্ত বাঁধাহীন
শ্রাবণ কোলে কাদামানব হতে
আর কচুর পাতায় নাভেজার ছলে
ভিজতেও মন চায়না -
হয়ত ক্রমশ মরে যাচ্ছি, তারি জলছবি।