দেলোয়ার হোসেন
বৃষ্টি ও নাগরদোলা
আমি ভিজে জবজবে বৃষ্টির সাথে-
তুমি আসলে স্নান শিখবো।
হাতের তেলোয় কচুপাতা
কচুপাতা-শাপলাপাতা
ফোটাফোটা টলোমলো জল!
তুমি একহাতে মেঘ আর অন্যহাতে
আমাকে ছুঁয়ে
আমি নাগরদোলা
উপর থেকে নিচে, নিচ থেকে উপরে
উপরে-নিচে, নিচে-উপরে
মেঘ-বৃষ্টি, বৃষ্টি-মেঘ, ভিজে শাড়ি
তোমার শাড়ির আঁচল
ছুঁয়ে ছুঁয়ে- উড়ে উড়ে আমি স্বপ্ন
বেঁচে খাই!
বৃক্ষ চিনবো বলে
মানুষ জন্মেছি
বৃক্ষ চিনবো বলে মানুষ জন্মেছি
।
মানুষ না চিতা
কোন জন্মে খুশি বলো, তুমি আর তোমার ঈশ্বর?
আমার আঙ্গুলগুলো নিশপিশ করে
কলম ধরিনা বহুকাল
তোমার স্তনে চুমুক দিলে ঈশ্বর
নেবে তো বৃক্ষের আকার!
রাতঘ্রাণ
বিছানা বালিশ সব ঠিকঠাক। শুধু
জানালা বেয়ে চোখ উড়ে যায় !
চোখ উড়ে যায়- চোখ উড়ে যায়! চোখের আবার স্বপ্ন অনেক
চোখ ঢাকে না চোখের পাতায়-লেপে
কাঁথায়,
বাড়ির
ছাদে
জাম-নারকেলের কালোপাতার আড়াল
চাঁদে
জোনাকজ্বলা তারার কাছে চোখের
কিসব মিটমিটানি দেখি চেয়ে-
তোমার এখন বয়েস কতো?
মধুমতির জলের নাচন তোমার দেহে
কলস ডোবায়?
চোখের পাতায় ঘুমের প্রদীপ
জ্বেলেই সাজো মধুমালা?
সাত সমুদ্র তেরো নদী ডিঙিয়ে আসে
মদনকুমার!
সোনার পালঙ্ক অদল-বদল!
বিবস রাতের জুঁই চামেলি আকাশ
দ্যাখে সঙ্গোপনে!
আমার চোখে তারার হিসেব এলোমেলো,
চাঁদের আলো ঠিকরে পড়ে কার শরীরে?
সোনার কাঠি রুপোর কাঠি সিথানে ও পৈথানে
রাজকন্যা ঘুমিয়ে আছে সোনার
পালঙ্কে ! সে কি মধুমালা!
শরীরজুড়ে জ্বরের কাঁপন-প্রলাপ
বকি, রাতের ঘ্রাণে
হাতের মুঠোয় সাপ হেঁটে যায়, দস্যি সে সাপ,
ছোবল মেরে ভিজায় কাঁথা!
চোখের কাছে রাত জেগে রয়,
চোখ জেগে রয় রাতের কাছে !
আরো কিছুদিন থাকবো
এখানে
কফির পেয়ালাজুড়ে দাগ
আপাতত ঠোঁটের মাঝ বরাবর ছাইদানি
ধরে রেখে বুক ভরে শ্বাস নেই!
এই সঙ্গনিরোধ সন্ধ্যায় তোমার
হাতখানা বুকের বাঁপাশে পাপ!
কিসে পাপ আর কিসে হয় পুণ্যি?
হাতের টানটান ভাগ্যরেখা তোমার
শরীর ছুঁয়ে হৃদয় অবধি
সঙ্গমে সম্ভোগে কবিতা পেড়ে
বুকের কাছে রাখি !
আরো কিছুদিন থাকবো যখন, বেড়ালের রোমশ দেহে
ঘুম খুঁজে যাই
রোদে শুকিয়ে নেই কাপড়ে জড়ানো
ধুলো-ছ্যাপ-কাশ-সর্দির ভয়
বিছানায় ওঁতপাতা কিলবিল
ছারপোকার মুখে ফুল ছিটাই !
রবীন্দ্রনাথের সাথে দ্যাখা হয়না
আজকাল
আরো কিছুদিন থাকবো যখন, ভাবছি-
তাঁর সাথে দ্যাখা করে একফোঁটা ঘুমের
ঔষুধ ধার নেবো!