অনুপম
দাশশর্মা
তুমি কবি?
কী গভীর অনুরণন
ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি পঙক্তিতে।
তুমি বাক্যপ্রলুব্ধ
পণ্য নও
একান্তে আহরণ করো
অক্ষর-খুঁদ
পিঁপড়ের সারি এড়িয়ে,
ঝড়ের গুপ্ত শরীরে
মুক্তি চায় অযুত কান্না
তুমি পরুষ
তেজস্বীয়তায় চূর্ণ করে দাও
যাবতীয় বিরুদ্ধতার
ধূর্ত তূণীর।
তুমি কী কবি?
মুষাবিদ? বৃষ্টি ও খরার?
প্রাচীন সরোবরে ফুটে
ওঠে যে শালুক
তোমাকে মানায় তার
পাপড়িতে,
বিস্মৃত ভিন্ন
প্রভাতে।
তুমি শুধু ভীষণ
বেমানান অবনমনের
রম্যনগরে।
যাওয়া-আসার ফাঁকে
ভাবো।
ঘাস থেকে সরে যায়
রোদ্দুর
মেঘকে কেটে দেয়
ঘুড়ির ফণা
শীত সরে গিয়ে ঠেলে
আনে ঝড়
মানুষ শিখেছে বিভাজন
আপন আর পর..
ধরো।
কথাগুলো ধারাল হয়
গহীনে
পতঙ্গের রতিজ্ঞান
জানে কবির দল
ধুনোর মহিমা বোঝে
ঠাকুরঘর।
তাহলে।
নিয়মের সড়ক ধরে
এগোনো জীবন
কতটুকু বিস্ময় জন্ম
দিতে পারে?
ঘরের ভেতরে থাকা
চেয়ার-টেবিল
শুধু ভাবুকদের
দোলাচল দেখে কাটিয়ে দেয়
শত সহস্র বছর, নেই তাহাদের অবসর।
মেঘের ঠিক পাশে
মেঘের ঘাটে ঘাটে
ভিড়েছিল যে তরীখানি
তাহার ছইয়ের ভিতর
উজ্জ্বল ছিল
কেয়াপাতার বৈঠাখানি
সেথায় না জানি কোন
সে নিবিড় ছোঁয়া
বাঁধিল সূক্ষ্ম এক
মনবাসা।
আমি এক কলমপেষা
মুষাবিদ
একটি ক্ষুদ্রতর
গ্রন্থ রাখিব মাটির ঘরে
ইহাই তটস্থ প্রাণের
একক অভিলাষা।
এসব অবসরহীন রোদের
বহুচিত্র
ছায়া খুঁজতে খুঁজতে
ভিড়িয়েছিলেম তরী
ধূসর গোধূলির কাছে
থামলাম
দূরে ঝরাপাতার সাথে
উড়ে যাচ্ছে আহত ভালবাসা।