সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

দেবাশিস ঘোষ


দেবাশিস ঘোষ

যদি

যদি এক স্বপ্ন জাগাই নদীর তীরে উদোল আকাশ,
মেলেছি ছোট্ট তোমার ড্রয়িং রুমের কাচ টেবিলে!
যদি এক ভাবনা টানাই রোদ ছোপানো তোর উঠোনে,
যাতে রঙ হাজার হাজার প্রজাপতির বন পলাশের!
যদি তোর হাতটা ধরে একটু ঘন আদর করি!
যদি তোর ঐ চিবুকে ছোঁয়াই আঙুল বিকেল বেলা!
দূরে চাঁদ, দিগন্তে গাছ ঝিলিক ছড়ায় ছিন্ন রোদে।
পৃথিবীর ক্লান্তি তখন, উধাও হবে এক নিমেষে;
তোমার ঐ রঙের খেলায় সেও তো ভীষণ যুবক হল।
দ্যাখো সব রাস্তাগুলো, যাচ্ছে না আর রোমের দিকে;
সব পথ তোমার দিকেই ছুটছে প্রবল জট পাকিয়ে।
আমি সেই উদোল আকাশ, টলটলে জল, মাঠের পারে,
ভাসিয়ে ইচ্ছেগুলো, তোমার দিকে, নদীর মতোন,
চলেছি সঙ্গে নিয়ে রঙীন পাহাড়, বৃষ্টি বাদল।







অন্ধকার হইতে সাবধান

যে কথা রাত্রি জানে শিখে রাখো তাকে
অন্ধকারেই সবাই নিজস্ব অন্ধকারকে স্খলিত করে
আমারও রাত্রি আছে অন্ধকার আছে
ডালপালা মেলে তারা, নতুন পাতাও আসে, কুঁড়ি ধরে, বিস্তৃতি খোঁজে
ফোঁড়া থেকে পুঁজ  বেরিয়ে গেলে যেমন আরাম হয়
অবিকল তাই ঘটে  অন্ধকারের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে
কিন্তু সে ছাড়েনা, বেড়ে যায়, আদিগন্ত ছেয়ে ফেলতে চায়
অন্ধকার আরো আরো অন্ধকার ডেকে নিয়ে আসে








ইতিহাস

এক ঝোড়ো হাওয়ার গল্প বলতে বলতে
রবারের মতো রাত বেড়ে যায়
দেয়ালে, গাছে নিঃশব্দে উড়ে আসে পেঁচা
আমাদের লক্ষ জনম বিফল হতে থাকে
উনুনের পাশে সবাই ঘিরে বসে থাকি
নদী ভাঙে, ভাঙে ইতিহাস,
খালিপেটে নুন ঝাল দিয়ে
আমরা গিলতে থাকি টুকরো টুকরো ইতিহাস
সেই সব টুকরোও
ক্রমশই গিলে ফেলে আমাদের
পরিমাণ মতো নুন দিয়ে
সকালকে বিকেল এঁকে ফেলি,
কাহিনীর ভাঁজে ভাঁজে চাপা পড়ে গেছে
আমাদের পূর্বজদের কাটা অস্থি,
শুকিয়ে যাওয়া রক্ত,
ফোঁটা ফোঁটা বিদ্রোহ,
আমাদের রক্তের দাগ
লুকিয়ে ফেলা হয় ইতিহাসে
ইহাকেই ইতিহাস কহে।