শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০

বিকাশ চন্দ


বিকাশ চন্দ

আলো ঘরের চাবি

রাতের পূর্ণিমা এলেই দিনের সূর্যকে ভুলে যাই----
নিরুদ্বিগ্ন সময়ে যথারীতি রাতের সুখ থমকে দাঁড়ায়,
আকাশের হাজারো নক্ষত্র হাতছানি নরম মুক্তি স্রোত----
বসন্তে নরম সবুজ পাতায় তখন ঈশ্বরের সোহাগী আলো,
দু’হাত জড়িয়ে সূর্যের মুখোমুখি রাতের দুঃস্বপ্ন আর ক্রোধ ---
জলজ শরীরে স্বপ্নময় জল ভেজা গন্ধময় ফুলের পাঁপড়ি।


সকলেই বুঝে গেছে যৌবন পুষে রাখে অন্তর্গত যুবক
অনাবিল ঘুম আর মাথার  পেছনে যুবতী  অন্ধকার,
নির্ভেজাল অমৃত উষ্ণতায় কখন শূন্য চতুর্দিক---
সংকীর্ণ সময় তুলে আনে দু'ঠোঁটের জমা স্নানের জল,
রাতের পাখিদের বাহারি আতঙ্ক না মিলনের ডাক---
সকাল রোদের লাল মাঠে সবুজ মহাশূন্যে খেলা সাদা ও সুনীলে।


পৃথিবী এনেছে গাছ সাদা নীল লাল গেরুয়া সবুজ,
নিরাসক্ত জীবীকাহীন মাকড়সা ফাঁদ অদ্ভূত সজ্জা তার---
শিক্ষার সমূহ হিসেব নিকেশের ঝোলা ছিঁড়ে ফেলে কাঁধের জামা,
কতকাল মাংসল বাসনা আর প্রাচীন শ্রীচরণ খোঁজা অকরুণ---
তবুওতো ঘিরে আসে ঘুম নিরাহার যন্ত্রণা জানে রাতের রাগিনী,
কোথায় আছে কর্মক্ষেত্র ভেঙ্গে ফেলি  অন্ধকারের বন্ধ দরজা
নয়তো দিন  লুকোনো আলো ঘরের চাবি।






নক্ষত্র দোষের কাব্য

গ্রহ দশা যাই থাক লেপ্টে যাওয়া ছিন্ন শরীর----
 না চেনা লাশ কোদালে ঘসটে পলিথিন প্যাকেট,
সকাল হতে যেমন স্বাভাবিক ব্যাস্ততা তেমনই চলে যায়---
পাশের পাড়া থেকে কান্না ভেসে আসে সে জন্ম না মৃত্যুর।


পিতৃ পরিচয়ে দিয়ে এসেছিলো এক বৃদ্ধ ঘরের উঠোনে----
দু’হাত পেতে বলেছিল অঘটনে মারাগেছে ছেলে আমার,
এমটু সাহায্য দিন পোড়বার খরচ ঝলসে গেল অন্তর আত্মা---
ঘরে তার স্ত্রী বনজ গর্ভ কেশরে বাঁধা সদ্যোজাত সুখ,
হয়তো কিছু দিন পরে আসবে শিশু কোলে জননী ভিক্ষুনী---
দিনের পর্যাপ্ত আলো রঙে মিশে আছে কতনা কালো সঙ্কেত।


কত জন্মের দোহাই পেরোলে ফেলে যেতে পারি নির্মমতা---
কত টুকু ক্ষমতা ধরে জন্মদ্বারের বিধিকাল বৈধব্য রতন,
তার চেনা পুরুষটির রক্ত কালো পিচ ঢালা পথে একটু আস্তরণ,
আর একটু গভীর অন্ধকারে জ্বলে উঠবে হয়তো বা মাণিক রতন।


দিশাহীন ভেতর আত্মা খোঁজে জন্মকাল মা বাবার----
অক্ষয় কাল জানেনা ঠিকুজি দলিল দস্তাবেজ অশক্ত বাঁধন,
কতটা আত্মার ভেতর জমে থাকে মুখের ওপরে মুখের অবয়ব---
নির্মম আঙুলের ছোঁয়ায় কেবল উঠে আসে নক্ষত্র দোষের কাব্য।







মগ্ন আদিম ক্রোধ

মন্দ প্রকৃতি দোষ বিষ গন্ধে ঘিরে আছে ফুলের বাগান,
এ দেশের রানি কখনও দেখেনি শিকড়ে তৃণের জন্ম কাব্য ----
কোনো কোনো গাছ তৃণ ছায়ায় জন্মের পর বেড়ে ওঠে মহীরুহ
অবৈধ বাতাসে ভেসে গেছে কুলীন ভব্যতা খুলে বাকল,
মা বাবা আত্মপরিজন শিউরে দেখে সুডৌল বুকের বাঁধন----
অনাদি কালের শ্লোকের ভেতরেও ম ম শরীরী ভাষা উচ্চারণ।


হয়ে গেছে বহু কাল মনের ভেতরে জল আর জলের তর্পণ---
কামনায় কেঁপেছে শরীর উদাসীন জাত গোত্র কথা,
ফেলে আসা বিভাজন রেখার আগুনে পুড়ছে সিঁথির সোহাগ----
এখানেও পাখি আসে মেখে যায় ফুলের পরাগ অন্য ফুলে বাস,
পেছন ফিরে তাকালে কতনা জন্মের দোহাই অচেনা সংসার----
হাতে হাতে উঠে আসে সারিবদ্ধ সুখ দুঃখ অদেখা নির্বাসন।


শেষ বাতাসে উড়ে যাচ্ছে জীর্ণ সময় ক্যালেন্ডারের পাতা---
নাভি মণ্ডল ছিঁড়েছে একক পদ্মনাভ কোটি কোটি মূল,
কালস্রোত কালিমা বোঝেনি বংশধারা  জিন রক্ত স্রোত ----
আবার নতুন বঙ্গবর্ষ অবাধ অট্টহাসি মগ্ন আদিম ক্রোধ।