এ কে এম আব্দুল্লাহ
আগুনের গল্প
হেমন্তির মায়ের চুল বেয়ে কেরোসিন নামে ফুটপাথের চুলো গুলোতে।
আর শূন্য হাঁড়িতে সেদ্ধ হয় নোনাজল। ফূটন্তজলের ফাঁকে ফেরিওয়ালার চিৎকার থেকে ঝরে পড়ে
যে প্লাস্টিক নুডুলস; হেমন্তির মা, সেই নুডুলস ভেজে দেয় মেয়াদ উত্তির্ণ জলে।
এখন চুলোতে দাউ দাউ আগুন। যে আগুনে শিশুর কান্না পোড়ে। হেমন্তির
মা’র কলিজা পোড়ে।
আর, দুর থেকে কারও চোখ পুড়ে, হেমন্তির মা'র আঁচল তলে— দু’টুকরো
মাংসের আগুনে।
বিষণ্ণসময়
ভোর গুলো নেমে যাচ্ছে পুকুরের পাড় বেয়ে। আর চায়ের কাপে চুমুকে
চুমুকে গোধূলিরা ওড়ায় গল্প। রাতেরা অনুবাদ করে আধপুড়া রুটির গন্ধ; মধ্যাহ্ন ভঙিতে।
আমি নি:সঙ্গ ছায়ার মতো শেখতে থাকি কাকের ভাষা। আর ভেতরে জানালার
পর্দা ছেঁড়ে হাঁপানি রোগির মতো।
যেদিন স্তব্দ হয়ে আসে পৃথিবী। আমি ড্রয়িংরুমের সেলফে রেখে
আসি, নদী পাড়ে হারিয়েছে যে বাড়ি; তার মতো জটিল সময়।
জানি এই শহরে আর আসা হবে না এবং আকাশ থেকে নেমে আসা আলো;
একদিন ধূয়ে দেবে ক্যাপাচিনোর উষ্ণধূয়ায় জমানো সময়।
দৃষ্টি ও অন্যান্য
একের পর এক অন্ধকার ভাঁজ সরিয়ে, একজোড়া চোখ স্বেদ্ধ করবো
বলে, যুগ যুগ ধরে এই জন্মগত হাত; জ্বালানি কাষ্ঠের মতো শুকোচ্ছে।
একদিন জেনে নেবো উত্তাপের সব সূত্র; কতবার এই সংকল্প নিয়েই
পোস্টার এঁটেছি এইসব অদ্ভুত রাতের দেয়ালে। আর ঠোঁটে চেপেধরা সময়ের সিগারেট পুড়েছে
নি:শব্দের ত্যেজে। এভাবে নীরবে পোস্টার গুলো ক্লান্ত হয়ে ঝুলে গেলে প্রাচীন থালায়
; ফুটপাতিয় হাতেরা আগুন জ্বেলে শীত তাড়ায়।
এসব দৃশ্য দেখে এখন আর ক্লান্ত হই না। বরং এসব দৃশ্য দেখতে
দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া দুটো চোখ, অপেক্ষা করে আরও একটিনতুন দৃশ্যের।