স্বাগতা ভট্টাচার্য্য
মেট্রো
শহর থেকে শহরতলি থমকে যখন যানজটে
অন্ধকারের বুক চিরে পাতাল ফুঁড়ে ট্রেন ছোটে
বর্দিধারীর হুইশেলে চেনা অচেনা নানান সুর
রাম রহিমে ভেদ ভুলে ভাই পৌঁছে যাবে অনেকদূর
কিছু ক্ষণের সফর তবু বসার চেষ্টা অন্তহীন
মুঠো ফোনে বন্দী চোখে স্বপ্নগুলো প্রায় মলিন
শব্দভেদী বান ছুটেছে প্ল্যাটফর্ম থেকে প্ল্যাটফর্মে
সুখ দুঃখের গল্পগাঁথা বন্ধ দ্বারে খুব জমে
হৃদয় কোণে সদ্য প্রেমের অঙ্কুরিত বীজ বপন
হারিয়ে যাও বন্ধু দেখে পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন
ছুটছো তুমি ছুটছি আমি ছুটছে শহর কলকাতা
আটকে থাকা বাতাস জানে পাতালপুরের রূপকথা।
অব্যক্ত
ভালোবাসতে বাসতে ভুলেই গেছি
এখন শীতকাল পাতা ঝরার বেলা
বসন্তের সবুজ কিশলয়
কোকিলের কু হু রব আমার জন্য নয়।
ভুলে গেছি আমি
চলার পথে নতুন বাঁকে
নদী খুঁজে নেয় নতুন জীবন।
ভুলে গেছি আকাশ রাখে না মনে
কোন তারা খসে গেল
কবে কখন কোন ক্ষণে !
আমি ঋনী সময়ের কাছে
আমি ঋনী বাতাসের কাছে
যারা কানে কানে বলে গেছে
কেউ কথা রাখে না।
ঘোড়ার খুঁড়ে বাঁধা জীবন থেকে
পালিয়ে যেতে চাই
যেতে চাই হরপ্পা মহেঞ্জদড়ো কিংবা
আরো আগে বিলুপ্ত কোনো সভ্যতার তীরে,
অথবা বনজ সুবাস মাখা আদিম কোন গুহার অন্ধকারে।
এক টুকরো আশা
চিতাভস্ম গায়ে মেখে দাঁড়িয়ে আছে সময়
পুড়ে গেছে সম্পর্ক আদর্শ ভালোবাসা
পোড়া গন্ধ লেগে আছে বাতাসের গায়ে
পোড়া কাঠ ইতঃস্তত বিক্ষিপ্ত
ঘোলাটে চোখ ঝলসানো ঠোঁট
তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে
চাঁদ ডাকে আয়
বটের ঝুড়ি র ভাঁজে অন্ধকার জমাট বাঁধে
মাটির গভীরে শিকড় ছুটে চলে অসাবধানে
তবু একটা গোলাপ চারা পুঁতে দিলাম তোমার জন্য।