দেবাশিস ঘোষ
বাদামী রঙের গেটের মুহূর্তটুকু
ফিটন গাড়িতে চড়ে মুহূর্তটি এসে
বাদামী রঙের গেটের ঠিক সামনে নেমেছে
সফল জল বিন্দুরাও একে একে জমছে
তোমার মুখে, চোখে আর ঠোঁটের ঐখানেও
এ সময় সূর্য ও নক্ষত্ররাও গ্যালাক্সিতে স্তব্ধ হয়ে যায়
তাদের সবারই ইচ্ছে হয় বাদামী গেটের সামনে দাঁড়াতে
তবুও আশ্চর্য হয়ে তুমি এক ফুটে থাকা মিনার
পাখীর পালকে ঢাকা যেটুকু উষ্ণতা সেটুকু তোমার চাওয়া
নদীতীরের প্রবাহিত বাতাসের পরিচ্ছন্নতা
শহরের উদাস উচ্চতা
ঝুলে থাকা ব্রিজ
কোয়ার্টারের কদর্যতা
আর এক পাশে পড়ে থাকা দগদগে নগ্নতা
এই সব উন্মন আশ্রয় বা নিরাশ্রয়ের শরীর জুড়ে
প্রবল হইহই নিয়ে এগিয়ে চলেছো
একটি বাদামী গেট পেরিয়ে
আরেকটি গেটের দিকে
হাঙর সংক্রান্ত
হাঙর সংক্রান্ত অনেক কিছুই জেনেছি তরলে চুবিয়ে
অযথা এ বর্গাকার নিষেধ ডুবে গেলে
তোমাকে সরলতা এনে দেবো প্লাস্টিক প্যাকেটে
বীজ জল কিংবা সালোকসংশ্লেষের আশ্লেষ
রক্তের উষ্ণতায় ভোর ভোর ঘ্রাণ
তোমার চুলের উন্মত্ত ঢেউয়ের ওপর
সার্ফিং করে যেতে চাই গহন অরন্য
পাতারা উড়ে যাক, পতাকাও বর্ণ হারাক
হাঙর ও তার তীক্ষ্ণ দাঁতের ইচ্ছেরা
শাণিত হতে গিয়ে সন্ন্যাসীর সিঁদুর মাখানো ফলা
তোমার জন্য উঠে আসা সাবলীল মুগ্ধতা
শহরের দেয়ালে দেয়ালে রেখে আসি
ঔদ্ধত্যের রঙে সামান্য অলীক বোধ
দুপলক শূন্যতার নীল বিন্দু আর অসম্ভব আলো
আঠালো জ্যোৎস্না তুমি মেলে রেখেছো গাঢ় সন্ধ্যায়
প্রকৃত হাঙর তুমি উদ্দাম কালো চুলে সমুদ্র খুড়েছো
মৃত্যু বিষয়ক
(উৎসর্গ
মুকুন্দ লাল রায়)
মেঘের মতো ছড়িয়ে পড়ছে মৃত্যুর খবর
কল্যাণী সীমান্তের পাতাঝরা গাছেদের ফাঁকে ফাঁকে
ভৌতিক চাঁদে, ছাতা পড়া কার্ণিশে, ছাদে।
মৃত্যু আবার, আবারো, পুনরায়, আকস্মিকতায়
ডালে ডালে পাতায় পাতায়, পত্রহীনতায়
ছোঁয়া লাগে, আবেশে উন্মন।
মৃত্যুর গন্ধ ভাসে, ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় পাক –
আকাশ গড়িয়ে দূরে, জ্যোৎস্নার ঢাল বেয়ে।
রক্তাভ ডানায় তার সন্ধ্যার বিষণ্ণ পরাগ
আলো আর অন্ধকারে কমবেশী কিছু নেই
চরাচর ঠিকঠাক শার্দুলের মতোই সম্ভব।
মৃত্যু লিখেছে শব, অনিবার্য চুল্লীর মেরু
বিপন্ন রক্তের স্রোত অলিন্দের নিলয়ের কুঠিতে কুঠিতে
সকল বিকল্প গলে শার্দুলের শাশ্বত ছুরি
কেটে নেয় চাঁদ, তারা, গাছ এবং বিকেলের আলো