মলয় রায়চৌধুরী
ব্লাড লিরিক
অবন্তিকা, তোর খোঁজে মাঝরাতে
বাড়ি সার্চ হল
এর মতো ওর মতো তার মতো কারো মতো
নয়
যেন এমন যেন অমন যেন তেমন নয়
কী করেছি কবিতার জন্য
আগ্নেয়গিরিতে নেমে ?
একি একি ! কী বেরোচ্ছে বাড়ি
সার্চ করে
কবিতায় ? বাবার আলমারি ভেঙে
ব্রোমাইড সেপিয়া খুকিরা
কবিতায় । হাতুড়ির বাড়ি মেরে
মায়ের তোরঙ্গে ছেঁড়ে বিয়ের সুগন্ধি বেনারসি
কবিতায় । সিজার লিস্টে শ্বাস
নথি করা আছে
কবিতায় । কী বেরোলো ? কী বেরোলো ? দেখান দেখান
কবিতায় । ছি ছি ছি ছি, যুবতীর আধচাটা যুবা
! মরো তুমি মরো
কবিতায় । সমুদ্রের নীলগোছা ঢেউ
চিরে হাড়মাস চেবাচ্ছে হাঙর
কবিতায় । পাকানো ক্ষুদ্রান্ত্র
খুলে এবি নেগেটিভ সূর্য
কবিতায় । অস্হিরতা ধরে রাখা
পদচিহ্ণে দমবন্ধ গতি
কবিতায় । লকআপে পেচ্ছাপে ভাসছে
কচি বেশ্যাদেখা আলো
কবিতায় । বোলতার কাঁটা পায়ে
সরিষা ফুলের বীর্যরেণু
কবিতায় । নুনে সাদা ফাটা মাঠে
মেটেল ল্যাঙোটে ভুখা চাষি
কবিতায় । লাশভূক শকুনের পচারক্ত
কিংখাবি গলার পালকে
কবিতায় । কুঁদুলে গুমোট ভিড়ে
চটা-ওঠা ভ্যাপসা শতক
কবিতায় । হাড়িকাঠে ধী-সত্তার
কালো কালো মড়া চিৎকার
কবিতায় । মরো তুমি মরো তুমি মরো
তুমি মরলে না কেন
কবিতায় । মুখে আগুন মুখে আগুন
মুখে আগুন হোক
কবিতায় । মরো তুমি মরো তুমি মরো
তুমি মরো তুমি মরো
কবিতায় । এর মতো ওর মতো তার মতো
কারো মতো নয়
কবিতায় । যেন এমন যেন অমন যেন
তেমন নয়
কবিতায় । অবন্তিকা, তোর খোঁজে সার্চ হল, তোকে কই নিয়ে গেল না
তো !
মাথা কেটে পাঠাচ্ছি, যত্ন করে রেখো
মাথা কেটে পাঠাচ্ছি, যত্ন করে রেখো
মুখ দেখে ভালোবেসে বলেছিলে, ‘চলুন পালাই’
ভিতু বলে সাহস যোগাতে পারিনি
সেই দিন,
তাই
নিজের মাথা কেটে পাঠালুম, আজকে ভ্যালেনটাইনের
দিন
ভালো করে গিফ্টপ্যাক করা আছে, ‘ভালোবাসি’ লেখা
কার্ডসহ
সব পাবে যা-যা চেয়েছিলে, ঘাম-লালা-অশ্রুজল, ফাটাফুটো ঠোঁট
তুমি ঝড় তুলেছিলে, বিদ্যুৎ খেলিয়েছিলে, জাহাজ ডুবিয়েছিলে
তার সব চিহ্ণ পাবে কাটা মাথাটায়, চুলে শ্যাম্পু করে
পাঠিয়েছি
উলঙ্গ দেখার আতঙ্কে মিছে ভুগতে
হবে না
গৌড়ীয় লবণাক্ত লিঙ্গ দেখবার
কোনও স্কোপ নেই
চোখ খোলা আছে, তোমাকে দেখার জন্য
সব সময়,
আই
ড্রপ দিও
গিফ্টপ্যাক আলতো করে খুলো, মুখ হাঁ করাই আছে
আমার পছন্দের ননভেজ, সন্ধ্যায় সিঙ্গল
মল্ট, খাওয়াতে ভুলো না
মাথাকে কোলেতে রেখে কথা বোলো, গিটার বাজিয়ে গান
গেও
ছ’মাস অন্তর ফেশিয়াল করিয়ে দিও, চন্দনের পাউডার
মাখিও
ভোরবেলা উঠে আর ঘুমোতে যাবার
আগে চুমু খেও ঠোঁটে
রাত হলে দু’চোখের পাতা বন্ধ করে
দিও,
জানো তো আলোতে ঘুমোতে পারি না
কানে কানে বোলো, “আজও উন্মাদের মতো
ভালোবাসি”
মাথা কেটে পাঠালুম, প্রাপ্তি জানিও, ফোন নং কার্ডে লেখা
আছে
মহেঞ্জোদারোর মেটেল কিশোরীর
জন্য প্রেমের কবিতা
কী গণিত কী গণিত মাথা ঝাঁঝা করে
তোকে দেখে
ঝুঁকে আছিস টেবিলের ওপরে আলফা
গামা পাই ফাই
কস থিটা জেড মাইনাস এক্স ইনটু
আর কিছু নাই
অনন্তে রয়েছে বটে ধুমকেতুর জলে
তোর আলোময় মুখ
প্রতিবিম্ব ঠিকরে এসে ঝরে
যাচ্ছে রকেটের ফুলঝুরি জ্বলে
কী জ্যামিতি কী জ্যামিতি ওরে
ওরে ইউক্লিডিনী কবি
নিঃশ্বাসের ভাপ দিয়ে লিখছিস মঙ্গল
থেকে অমঙ্গল
মোটেই আলাদা নয়, কী রে বাবা, ত্রিকোণমিতির জটিলতা
মারো গুলি প্রেম-ফেম, নাঃ, ফেমকে গুলি নয়, ওটার জন্যেই
ঘামের ফসফরাস ওড়াচ্ছিস
ব্রহ্মাণ্ড নিখিলে গুণ ভাগ যোগ
আর নিশ্ছিদ্র বিয়োগে প্রবলেম
বলে কিছু নেই সবই সমাধান
জাস্ট তুমি পিক আপ করে নাও কোন
প্রবলেমটাকে
সবচেয়ে কঠিন আর সমস্যাতীত বলে
মনে হয়,
ব্যাস
ঝুঁকে পড়ো খোলা চুলে
লিপ্সটিকহীন হাসি কপালেতে ভাঁজ
গ্যাজেটের গর্ভ চিরে তুলে নিবি
হরপ্পা-সিলের সেই বার্তাখানা
হাজার বছর আগে তোর সে-পুরুষ
প্রেমপত্র লিখে রেখে গেছে
মহেঞ্জোদারোর লিপি দিয়ে ; এখন উদ্ধার তোকে করতে
হবেই
অবন্তিকা, পড় পড়, পড়ে বল, ঠিক কী লিখেছিলুম
তোকে---
অমরত্ব অমরত্ব ! অবন্তিকা, বাদবাকি সবকিছু ভুলে
গিয়ে
আমার চিঠির বার্তা তাড়াতাড়ি
উদ্ধার করে তুই আমাকে জানাস
সোনাগাছিতে বৃষ্টি
পাকানো সিঁড়ির শেষে, তিনতলার বাঁকে, বলল পিসতুতো দাদা
“এই হল সোনাগাছি, শহরের রাণি, ফি-রাত্তিরে পাঁচ
লিটার
খোকাখুকু জমা হয় এ-পাড়ায়, ভেবে দ্যাখ, মৌজমস্তিতে নষ্ট
কতশত মহান পুরুষ-নারী, জন্মাবার আগেই
খাল্লাস ;
ওই যে গুটকাঠোঁট মাসি, ওকে বললেই, যাকে চাস, নিস---
এখন তো চুলখোলা মেয়েদের নধর
দুপুর,
সকলেই
ফাঁকা,
হাফ রেটে সুন্দরীতমাকে পেয়ে
যাবি ;
কাজ
আছে, আমি চললুম ।”
‘ঘরে নয়, বিছানায় নয়, চলো না, কালবৈশাখিতে ভিজে
প্রেমিকার অভাব মেটাই’, বলি কালো মেয়েটিকে ।
চুড়িদার শ্যামলিমা আর আমি কোমর
জড়িয়ে
আহিরিটোলার ঘাটে ঝোড়োজল গঙ্গায়
নামি--
ও হয় ফোলানো পালের নৌকো, চিৎসাঁতার দোল খায়
আমি হই লগিঠেলা ভাটিয়াল মাঝি ।
‘আবার এসো কিন্তু, অ্যাঁ, প্রেমিকা ভেবেই চলে
এসো
যেদিন পড়বে বৃষ্টি ; ভিতরে তো ভিজছি না
বাইরের ভেজবার দামটুকু দিয়ে চলে
যেও।’
কালো বিধবা
কালো বিধবার ডাক ফিরাতে পারি না
সঙ্গম করার কালে মনোরম মৃত্যু
চাহিয়াছি
যেমতো পুংমাকড়ের হয় ; স্ত্রীংমাকড়ানি
থুতুর ঝুলন্ত রেশমে বাঁধি
আহ্বান করিবে
আষ্টেপৃষ্টে সবুজ পাতার উপরে
লয়া গিয়া
মোর পালপাসখানি যোনিদ্বারে লইবে
টানিয়া
দশবাহুর আলিঙ্গনে শুষিবে লক্ষ
শুক্রাণু
দিবাদ্বিপ্রহরে নিশিডাকে
আক্রান্ত থরহরি
ব্যকরণ বিন্যাস গণিত শিখাবে দশ
নখে
আমি ক্লান্ত হলে পর ক্রমশ খাইতে
থাকিবে
সঙ্গম চলাকালে চাখিবে সুস্বাদু
ঝুরিভাজা
উইপোকাসম লিঙ্গখানি কুরিবে
প্রথমে
প্রেমিকার উদরে প্রবেশ করিয়া কী
আনন্দ
বুঝাইব কেমনে, সমগ্র দেহ যে গান
গায়--
আহ্লাদের কর্কটরোগ তোমরা বুঝিবে
না
বুড়ি
এ-বুড়ি আমার দিদিমার বয়সী
চুল পেকে গেছে, কয়েকটা দাঁত
নেই, দিদিমার মতন শুয়ে থাকে
কবে শেষ হয়ে গেছে পুজো-পাঁজি
ক্যালেণ্ডারে ছবি-আঁকা তিথি
দিদিমার মতো এরও প্রতি রাতে
ঘুম পায় কিন্তু আসে না, স্বপ্নে
কাদের সঙ্গে কথা বলে, হাসে--
চোখে ছানি তবু ইলিশের কাঁটা
বেছে ঘণ্টাখানেকে মজে খায়
দিদিমার মতো, বলেছে মরবে
যখন, চুড়ি নাকছাবি খুলে নিয়ে
তারপর আলতা-সিঁদুর দিয়ে
পাঠাতে ইনসিনেটরে, এই বুড়ি
চল্লিশ বছর হলো সিঁদুর পরে না
পঞ্চাশ বছর হলো শাঁখাও পরেনি
দামি-দামি শাড়ি সব বিলিয়ে
দিয়েছে
দিদিমা যেমন তপ্ত ইশারায়
দাদুকে টেনে নিয়ে যেতো রোজ
এও আমাকে বলে, এবার ঘুমোও
আর রাত-জাগা স্বাস্হ্যের পক্ষে
খারাপ ; এই বুড়ি যে আমার বউ
বিছানায় শুয়ে বলে, কাউকে নয়
কাউকে দিও না খবর, কারুক্কে নয়
এ-কথাটা আমারই, কাউকে নয়
কারুক্কে বোলো না মরে গেছি
প্রতিদিন
(জীবনানন্দ দাশ-এর
‘আট বছর আগের একদিন’ কবিতার প্যাশটিশ)
শোনা গেলো লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে, আর তার বউ ও শিশুকে
কাল রাতে -- ফাল্গুনের রাতের
আঁধারে
যখন ভাঁড়ারে আর একদানা চাল নেই
বউ-শিশু খুন করে মরতে বাধ্য হলো
।
বধু শুয়েছিল পাশে -- শিশুটিও
ছিল ;
প্রেম ছিল, ছিলনাকো কিছুই খাবার
-- জ্যোৎস্নায়--
তবু সে দেখিল
ক্ষুধার প্রেতিনী ? ঘুম তো আসে না রাতভর
কেননা ক্ষুধার্ত পেটে হয়নি ঘুম বহুকাল -- লাশকাটা
ঘরে শুয়ে তিনজন ঘুমায় এবার ।
এই ঘুম চেয়েছিল বুঝি !
বিষগ্যাঁজলা-মাখা ঠোঁটে মড়কের
ইঁদুরের মতো
আঁধার ঘুঁজির বুকে তিনজন ঘুমায়
এবার ঘাড় গুঁজি
কোনোদিন এই পরিবার জাগিবে না আর
।
কোনোদিন জাগিবে না আর
খালি পেটে গাঢ় বেদনার
অবিরাম অবিরাম ক্ষুধা
সহিবে না আর --
এই কথা বলেছিল তারে
চাঁদ ডুবে চলে গেলে -- বুভুক্ষু
আঁধারে
যেন তার মেটেল দুয়ারে
মোটরসাইকেলবাহী ধর্ষকেরা এসে ।
তবুও তো নেতা জাগে
লুমপেনেরা এসে ভোট মাগে
আরেকটি নির্বাচনের ইশারায় --
অনুমেয় উষ্ণ হুমকি দিয়ে
টের পাই যুথচারী আঁধারের গাড়
নিরুদ্দেশে
চারিদিকে র্যাশনের ক্ষমাহীন
বিরুদ্ধতা ;
নেতা তার আরামের সঙ্ঘারামে নেশা
করে বুকনি ঝাড়তে ভালোবাসে ।
শ্রম ঘাম রক্ত চুষে আবার ফিরে
যায় নেতা
অবরোধ করা মোড়ে অ্যাম্বুলেন্সে
কান্না দেখিয়াছি ।
কাঠফাটা খরা নয় -- যেন কোনো
চালের ভাঁড়ার
অধিকার করে আছে ইহাদের ভার
দলীয় গুণ্ডাদের হাতে
বউটি প্রাণপণ লড়িয়াছে
চাঁদ ডুবে গেলে পর নিরন্ন
আঁধারে তুমি বউ ও শিশুকে নিয়ে
ফলিডল খেয়েছিলে, শিশুটির গলা টিপে
মেরে--
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের
তা তোমার শৈশব থেকে ছিল জানা ।
পেটের ক্ষুধার ডাক
করেনি কি প্রতিবাদ ? ডেঙ্গুর মশা এসে
রুক্ষ চামড়ায় বসে
রক্ত না পেয়ে দেয়নি কি গালাগাল ?
যুবতী লক্ষ্মীপ্যাঁচা চালাঘরে
বসে
বলেনি কি : সংসার গেছে বুঝি
দারিদ্র্যে ভেসে ?
চমৎকার !
হাড় হাভাতের ঘরে ইঁদুরও আসে না ?
জানায়নি পেঁচাবউ এতুমুল ক্ষুব্ধ
সমাচার ?
জীবনের এই স্বাদ-- সুপক্ক ধানের
ঘ্রাণ
কতোকাল পাওনিকো তুমি
মর্গে আজ হৃদয় জুড়ালো
মর্গে --- শীতাতপে তিনজন
ফলিডলে গ্যাঁজলাওঠা ঠোঁটে !
শোনো
এ তিন মৃতের গল্প--
ধান কেটে নিয়ে গেছে গাজোয়ারি
করে
বি পি এল কার্ডের সাধ
মেটেনি বউকে পাঠিয়েও
দরবারি নাশকতা নিচে টেনে বধু
মধু -- আর মননের মধু
যাপনকে করতে পারেনি ক্ষুধাহীন
হাড়হাভাতের গ্লানি বেদনার শীতে
সইতে হয়েছে প্রতিদিন
তাই লাশকাটা ঘরে
চিৎ হয়ে শুয়ে আছে তিনজন টেবিলের
পরে ।
তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
যুবতী লক্ষ্মীপ্যাঁচা চালাঘরে
বসে
চোখ পালটায়ে কয়, ‘সংসার গেছে বুঝি
দারিদ্র্যে ভেসে ?’
চমৎকার !
হাঘরের মেটে ঘরে ইঁদুরও আসে না
হে বিদূষী পেঁচাবউ, আজও চমৎকার ?
স্বাধীনতার সত্তর বছর পর !
সকলে তোমার মতো সুযোগসন্ধানী
আজ---
বুড়ি চাঁদটাকে তোরা আদিগঙ্গার
পাঁকে করে দিলি পার ;
যারা আসে তারাই শূন্য করে চলে
যায় টাকার ভাঁড়ার ।
মর মুখপুড়ি
এই বেশ ভালো হলো অ্যামি, বিন্দাস জীবন ফেঁদে
তাকে
গানে নাচে মাদকের জুয়ার পূণ্যে
অ্যামি,
কী বলব
বল
অ্যামি ওয়াইনহাউজ, অ্যামি, আমি তো ছিলুম তোর
জানালার কাঁচ ভেঙে ‘ল্যাম্ব অফ
গডের’ দামামায়
বাজ-পড়া গিটারের ছেনাল আলোয়
চকাচৌঁধ ভাম,
অ্যামি, আমি তো ছিলুম, তুই দেখলি না, হের্শেল টমাসের
শিয়রে বিষের শিশি মাধুকরী লেপের
নিঃশ্বাসে,
অ্যামি
স্তনের গোলাপি উল্কি প্রজাপতি
হয়ে কাঁপছি,
দেখছিস
লাল রঙে, অ্যামি, অ্যামি ওয়াইনহাউজ, মুখপুড়ি
হ্যাশের ঝাপসা নদী কোকেনে
দোলানো কোমর,
চোখ
ধ্যাবড়া কাজলে ঘোলা ঠিক যেন
বাবার রিটাচ করা
খুকিদের নকল গোলাপি ঠোঁট বয়ামে
ভাসাচ্ছে হাসি
সাদা-কালো, হ্যাঁ, সাদা-কালো, ‘ব্যাক টু ব্ল্যাক’
গাইছিস
বিবিসির ভিড়েল মাচানে কিংবা
রকবাজ ঘেমো হুল্লোড়ে
আরো সব কে কী যেন, ভুলে যাচ্ছি ভুলে
যাচ্ছি ভুলে…
ওহ হ্যাঁ, মনে পড়ল, ক্রিস্টেন পাফ...জনি
ম্যাককুলোজ…
রাজকমল চৌধুরী...ফালগুনী
রায়...অ্যান্ড্রু উড…
শামশের আনোয়ার...সমীর বসু...কে
সি কালভার…
সেক্স পিস্টলের সিড
ভিশাস...ডার্বি গ্রেস...অ্যান্টন মেইডেন…
হেরোইন ওভারডোজ, ছ্যাঃ, ওভারডোজ কাকে বলে
অ্যামি
ওয়াইনহাউজ, বল তুই, কী ভাবে জানবে কেউ
নিজেকে
পাবার জন্যে, নিজের সঙ্গে নিজে
প্রেমে পড়বার জন্যে…
য়ুকিকো ওকাকার গাইতে গাইতে ছাদ
থেকে শীতেল হাওয়ায়
দু-হাত মেলে ঝাঁপ দেয়া, কিংবা বেহালা হাতে
সিলিওঙের হুক থেকে
ঝুলে-পড়া আয়ান কার্টিস, কত নাম কত স্মৃতি, কিন্তু কারোর
মুখ মনে করা বেশ মুশকিল, তোর মুখও ভুলে যাব
দিনকতক পর, ভুলে গেছি প্রথম
প্রেমিকার কচি নাভির সুগন্ধ,
শেষ নারীটির চিঠি, আত্মহত্যার
হুমকি-ঠাশা,
হ্যাঁ, রিয়্যালি,
কী জানিস, তাও তো টয়লেটের
অ্যাসিডে ঝলসানো হার্ট
নরম-গরম লাশ, হাঃ, স্বর্গ-নরক নয়, ঘাসেতে মিনিট পনেরো
যিশুর হোলি গ্রেইল তুলে ধরে
থ্রি চিয়ার্স বন্ধুরা-শত্রুরা,
ডারলিং, দেখা হবে অন্ধকার ক্ষণে, উদাসীন খোলা মাই,
দু-ঠ্যাং ছড়িয়ে, এ কোন অজানা মাংস !
অজানারা ছাড়া
আর কিছু জানবার জানাবার বাকি
নেই অ্যামি ;
সি ইউ…
সি ইউ...সি ইউ...সি ইউ...সি
ইউ...মিস ইউ অল…
আলফা ফিমেল বিড়ালিনী
ক্যাটওয়াকে শোস্টপার, শব্দহীন আলতো
স্টিলেটো ফেলে দেহের আলোয়
মেলে ধরছিস তুই বাঁকের বদলগুলো
হাসির হদিস তুলে, ঠিক যেন
ইমলিতলার তিনতলা থেকে বারবার
ভাসাচ্ছিস দু-থাবার
তুলোট ম্যাজিক, অবন্তিকা, আলফা ফিমেল বিড়ালিনী, কোলে নিয়ে
আদর করিস যাকে তারই চরিত্র তোকে
চেপে ধরে কালো শাদা বাদামি ধূসর
নক্ষত্র ক্লোনিং চোখে
অর্গলছেঁড়া তোর লিভ-ইন কোনো পৌরাণিক
ঋষির রেশমি ঠোঁটে দরোজাবর্জিত
কিছু অ্যাগ্রেসিভ আঁচড়-কামড় ;
তুই কি নীলাভ দূরত্বে থাকা
অরুন্ধতী ?
নাকি
তুই
হবির্ভূ সন্নতি কলা অনসূয়া
ক্ষমা শ্রদ্ধার কোঁকড়া ঘনান্ধকারে
দু-পাশে দর্শক নিয়ে ক্যাটওয়াকে
হাঁটছিস দেশ-কালহীন ?
তাই তোকে বর্ণসংকর করা কতই সহজ
দ্যাখ,
আদুরে
অ-নাস্তিক
নিজেই নিজেকে চেটে স্পিক
অ্যান্ড স্প্যান থাকবার
যৌনতার নরম মডেল তোর আদি-মা বা
পূর্বপুরুষ ছিল কিনা
কেউই জানে না দেখতে কীরকম গায়ের
আদল কন্ঠস্বর
শ্বাসে তোর পাখির উড়াল-গান
ইঁদুরের মৃত্যুমুখী-খেলা মাছেদের ঘাই
অবন্তিকা, অধুনান্তিকা, তোকে সীমা দিয়ে
বেঁধে ফেলা অসম্ভব !
কোন পুরুষ ? কোন পুরুষ ? কোন পুরুষ ? কোন পুরুষ ?
তৈমুর আত্তিলা-হুন ক্যালিগুলা
পল পট রোবেসপিয়ার ? নাহ--
তোর প্রেম অনির্ণেয়, তবু তুই ক্যাটওয়াকে
গ্রীবা তুলে আমাকে খুঁজিস…
সবুজ দেবকন্যা
ওঃ তুই-ই তাহলে সেই সুন্দরী
দেবকন্যা
তুলুজ লত্রেক র্যাঁবো ভেরলেন
বদল্যার
ভ্যান গঘ মদিগলিয়ানি আরো কে কে
পড়েছি কৈশোরে, কোমর আঁকড়ে তোর
চলে যেত আলো নেশা আলো আরো মিঠে
ঝলমলে বিভ্রমের মাংস মেজাজি রঙে
বড় বেশি সাজুগুজু-করা মেয়েদের
নাচে
স্পন্দনের ছাঁদ ভেঙে আলতো তুলে
নিত
মোচড়ানো সংবেদন কাগজে
ক্যানভাসে
অ্যামস্টারডম শহরের ভিড়ে-ঠাসা
খালপাড়ে
হাঁ করে দেখছি সারা বিশ্ব থেকে
এনে তোলা
বিশাল শোকেসে বসে বিলোচ্ছেন
হাসি-মুখ
প্রায় ল্যাংটো ফরসা বাদামি
কালো যুবতীরা
অন্ধকার ঘরে জ্বলছে ফিকে লাল
হ্যালো
এক কিস্তি কুড়ি মিনিট মিশনারি
ফুর্তির ঢঙে
পকেটে রেস্ত গুনে পুরোনো
বিতর্কে ফিরি
কনটেন্ট নাকি ফর্ম কোনটা বেশি
সুখদায়ী
তাছাড়া কী ভাবে আলাদা এই
আবসাঁথ ?
যুবতী উত্তর দ্যান, শুয়েই দ্যাখো না
নিজে
এই একমাত্র মদ যা বীর্যকে সবুজ
করে তোলে।