রীনা তালুকদার
না দেখার দূরত্ব
কতদিন পর দেখবো কেমন এখন
চেনা মানুষ ধূসর কোনো পুরনো ছবি
অনেক দিনের অদেখার হাড় হাভাতে দেখা
কি করবো তাকিয়েই থাকবো নাকি
আধভাঙ্গা চেহারায় অঞ্জনী চিন্তার অকুলে
তৃষ্ণার্ত চোখ ফিরাবো অন্য সময়ের ভুলে যাওয়া
স্বাভাবিক সবকিছু মনে করে
হৃদয়ের গোপন প্রকোষ্ঠে উঁকি ঝুঁকির
বিজ্ঞাপন ঝুলানো নিউরণের বিলবোর্ডে
স্মৃতির মনিটরে রিঙ্গণের উড়াউড়ি
কি করি কি করি অবস্থার অসহিষ্ণুতা
ফাঁকি দিয়ে চারপাশ চেয়ে থাকি পলকহীন
বুঝতে পারি ভালোবাসার সতেজ সাহস
মায়া মোহতায় মুগ্ধ দু’চোখ জানিয়ে দেয়
ভালোবাসা বড় হয় না দেখার অদূর দূরত্বে ।
নোট :
অঞ্জনী মাছ- বাংলাদেশের স্বাদু পানির মাছ।
আকৃতিতে টাকির মাছের সমান।
কিন্তু চ্যাপ্টায় বাগনা মাছের মত।
রিঙ্গ, রিঙ্গণ-জোনাকিপোকা।
বিনগ্ন সুখের অসুখ
তুমি আমি দুজনেই অসুস্থ
না হলে তুমি এলে দরজা খুলে যায় কেন
নোনাজলের তৃষ্ণায় ডুবে থাকা
গ্লাসের অর্ধেক তুমি
বাকীটা আমি ...
প্রজাপতির একপাখা ছিঁড়লে
অন্যটি তোমার হাতে
ঢেঁকিতে হাত-পা গুড়া করলেও
টু শব্দটি করিনা ;
বলি না কিছু ...
অন্ধকার গহবরে ঢাকা রাত
তুলে নিয়ে ফেলে দাও গভীর সমুদ্রে
হাবুডুবু খেতে খেতে ডুবতে ডুবতে ...
কী দুর্দান্ত স্পর্শের আগুন
তুমি পোড়াও, পুড়ে পুড়ে হও স্থির
ভোর বেলা ধবধবে বালুকা রাশিতে
পড়ে থাকে দলিত মথিত বিধ্বস্ত পালক
পৃথিবীর সব মানুষই আদিম হিংস্র
এমন বিনগ্ন সুখের অসুখে ভোগে আজীবন।
স্পর্শ আগুন
তোমার স্পর্শ এখনো সুখের পরশ দেয়
একদিন তোমাকে ছুঁতে ভয় হতো ভীষণ
এখন দুরন্ত দুর্বার সাহসী লাগে
ছুঁয়ে দিলে শরীরময় মায়াবী আবেশ জড়িয়ে থাকে
ছোট ছোট অনেক দুঃখ জল হয়ে দূর দিগন্তে উড়ে যায়
ছুঁয়ে দেয়াটা একটা ছোঁয়াছে রোগ
একটু ছুঁয়ে যাওয়াটা অস্থিরতা কমায়
টেরাকোটা তামাটে দেয়ালে ঝড়ের কাঁপণ
আমার কী দোষ বলো?
খোলা বুকের দিকে তাকালেই আগুন জ্বলে উঠে
তেতুল আর বেল আগুনকে মোকাবেলা করতে পারে না
আগুন আর আমি মুখোমুখি সারাক্ষণ
না ছুঁয়ে কিছুতেই থামাতে পারি না
আগুন থামানোর মন্ত্রটা কি তুমি জানো?