দিশারী মুখোপাধ্যায়
সাক্ষী গোপাল
চারপাশের কিছু কিম্ভূতকিমাকার মানুষ
আমাকে চেয়ারে বসাতে নাছোড়
অথচ আমি যে তেমন বান্দা নই
সে কথাও কোনো খবরের কাগজে লেখে না
একটি বেড়াল শুধু জানে
যার রঙ সাদাও নয় কালোও নয়
থাবায় লুকানো নখ দিয়েই বুঝতে পারে
চেয়ারে বসলে আমার পাদুটোয় কত শীত করে
মার্কোপোলোর মত একজন মানুষ
আমার কবিতার বইয়ের ভেতর থাকে
যে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর প-ও দেখেনি
অথচ লোকে তাকে পর্যটক বলে খাতির করে
বুঝিনা চেয়ারও মনে মনে কেন ভয় পায়
আমার কম্পমান পা-জোড়াকে
দাগ
ছ'দশক অতিক্রম হয়ে যাওয়া আমার মুখের আয়নায়
কয়েকটা দাগ ফুটে উঠেছে
বুঝতে পারছি আমার প্রতিপার্শ্বজন সকলে
কেন আমাকে ভয় পাচ্ছে
ঘৃণা করছে
দূরে সরে যাচ্ছে
ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে তানপুরা
ঘষে মেজে রগড়ে তুলতে চাইছি সেসব দাগ
ছালচামড়া উঠে যাচ্ছে রক্ত ঝরছে
খাবলা খাবলা মাংস উঠে গিয়ে
বেরিয়ে পড়ছে সাদা হাড়ের অসার শূন্যতা
তবু দাগ উঠছে না
আগামী দশকগুলোয় নাকি আরো অনেক দাগ
শূন্যকে অবলম্বন করে ঝাঁপ দিয়ে
লাফিয়ে লাফিয়ে পড়তে চলেছে শিকারের দিকে
চিতাবাঘের অসীম পটুত্ব সঙ্গে নিয়ে
তেঁতুলপাতায় যাও
চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে আছে আমার হিংস্র অপরাধ
বিষাক্ত , পুষ্ট জিঘাংসায়
আমি যাদের কামড়াতে চাইছি
আমি যাদের যম
তারা কোনো সুহৃদ মানুষের বুকের নোনাজলে
স্নান করে নাও
ভ্যাকসিনের ফল পাবে
এত অপমান , এত আক্রমণ আর এত তছনছ
ইতিহাস প্রত্যক্ষ করেনি
একএকটা কথা থেকে কীভাবে অজস্র পোকার জন্ম হচ্ছে
একএকটা কটাক্ষের জন্য
ছারখার হয়ে যাচ্ছে আশীর্বাদি বায়ুমণ্ডল
তোমাদের প্রত্যেকের জন্য সৃষ্টি করা আমার নিখুঁত অমঙ্গল
বিনষ্ট করার জন্য জন্ম নিক অবতার , ততদিন
এমন কোনো তেঁতুলপাতায় গিয়ে আশ্রয় নাও
যেখানে সুজনরা তোমাদের অপেক্ষায় আছে