এ কে
এম আব্দুল্লাহ
খোলস
আমাদের
বুকের ওপর দিয়ে হেটে গেলো বলকা ব্লেড।আর ভেতর থেকে তোমরা লুটে নিলে আমাদের বাপ দাদার
জমানো সঞ্চয়।
এরপর হাড্ডিতে
লেগে থাকা ছেঁড়া মাংস কেড়ে খেতে শকুনের মতো ঘেরে ধরো অদৃশ্য ঠোঁটে। আমাদের করুণ মুখ
আর হাতগুলো চেয়ে থাকে আকাশের দিকে। এই সব দৃশ্য
দুর থেকে কেউ কেউমেমোরিকার্ডে গেঁথে নেয়। আর আমরা বিজ্ঞাপনী পণ্য হতে থাকি।রাস্তার
মোড়ে মোড়ে ডিজিটাল বিজ্ঞপনী তরঙ্গে সচল হতে থাকি।
কখনও বিজ্ঞাপনী
স্ক্রিন ভেঙ্গে বেরিয়ে এলে তোমাদের বাড়িতে; আমাদের মাংস শুকিয়ে যায়। আমাদের চোখ থেকে
লবণ গলেপড়ে । আমাদের দেহ থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। আর আমাদেরমনে পড়ে যায় পেছনের কথা।
আমরা উলঙ্গ হয়ে কঙ্কালের মতোদৌড়াতে দৌড়াতে জমা হতে থাকি সেই বৃক্ষ তলে।
তোমরা
সেই বৃক্ষের ছায়া ভেঙ্গে নতুন খোলসে আসো। আরআমাদের হাতে আবার ধরিয়ে দাও— নিষিদ্ধ আপেলের
মতোআরও এক ঘন অধ্যায়।
কালের
মেডেল
বোধেরা
স্বেদ্ধ হলে মাটির স্টভে ; হাতলবিহীন পাতিলে ম্যেল্ট হয়লোহার আঙুল। আগুনের ডানায় ওড়তে
ওড়তে ছায়ারা শূন্য হয়।আর অকালের বৃষ্টিফোটার
মত ঝরে ঝরে পড়ে ডানা পুড়া ছাই।গুমোট সড়কের পাশে, আলোর অপ্রত্যাশিত দুয়ারের আড়ালেঝিমুয়;
বোশেখি ভোরের ডগা ভাঙা বাঁশের মতো সময়।
এভাবে
একদিন মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে রিওয়াইন্ড বাটনের সাথে।আঁধারের মাঠে ওড়ে যায় সব কোষের পালক।আর
মধ্যদুপুরেভাঙতে গেলে আঁধারের দেয়াল। দেহ থেকে খসে খসে পড়েকফিনের পাটাতন।
এরপর,
ভূগোলের পরিমাপে বহুজাতিক তেলাওতের অর্থ খুঁজে, ভাঙা-চুড়া সংসার।
এসব দৃশ্য
আকাশ থেকে কেউ দেখে ফেলে। আর পেন-ড্রাইভেভরে নিয়ে এলে রাতের জনসভায়। আমরা তাদের গলে
পরিয়েদিই— মানবের বেষ্ট মেডেল।
দীর্ঘশ্বাসের
দামাইল
পৃথিবীর
খোলা মাথায় আজকাল যেনো খেলা করে,কালবোশেখিঝড়। আমরা ঝড়ের ব্যাকুল আগুন মেখে গায়ে—
দিব্যি করিঅফিস।বাজার করি,খেলা করি,স্কুল-কলেজও...
পথে-প্রান্তরে
পিতৃপুরুষের হাড্ডি পুড়িয়ে করি— কার্তিকী উৎসব।এখন আমরা উৎসব পছন্দ করি। নানারঙ উৎসব
: মৃতের উৎসবপুড়ার উৎসব— রক্তের উৎসব। চারদিকে ওড়ে উৎসবেরফুলঝুরি। দিন-রাত পৃথিবীতে
আলো ঝরে।নদী বহে। তবুআমাদের ভেতরটা অন্ধকার, গতিহীন। একদিন স্পর্শ করব সূর্য ; এই ভেবে
টেবিলে সাজিয়ে রাখি দীর্ঘশ্বাসগুলো। গহিন রাতে চমকেওঠি,দেখে— দীর্ঘশ্বাসের দামাইল।
আমাদের
দীর্ঘশ্বাসগুলো বনোয়া মশার মতো ওড়ে ওড়ে কামড়ায়।আর আমরা— দশকের পর দশক এভাবেই বেঁচে
থাকি।