সুরজিৎ
পোদ্দার
মুহূর্তের
ঈশ্বর
আমি তো
মুহূর্তকে ঈশ্বর বলে জেনেছি
যেভাবে
এই মুহূর্তে ক্লান্তি ছুঁয়ে আছে আমায় আর
চাঁদ ছুঁয়ে
আছে দৃষ্টিপথ
ঠিক সেইভাবে
আগুন রঙা চুল নিয়ে
এসেছিলে,
ঈশ্বর এসেছিল যেদিন
যেদিন
বৃষ্টি মাটি করে দিয়েছিল অনেক ব্যস্ততা
সেইদিন
নীল জামায়, অনেক সাহস জমা করেছিলে ফোঁটা ফোঁটা
অণু অণু
সাহস নারী ওই পাহাড়ি ফুল আর
তোমার
চলায়, কি যেন এক সুর ভেসে আসে
ঐ চলায়,
কাঁপতে থাকে নীল জামা, আকাশ
আমার পার্থেনিয়ামের
জঙ্গল, মুহূর্তের ঈশ্বর
আর সেই
মুহূর্তে তুমিই ঈশ্বর যেন
যেন সব
কম্পন থেমে গেলেই শুরু হয়
আসল চলা।
মুহূর্তের ঈশ্বরের খোঁজে
ক্লান্তি
মাঝে মাঝে
মনে হয় কতকিছু করার ছিল,
কতদিন
আমরা বসিনি মুখোমুখি বিকেলের চা নিয়ে,
কতদিন
বিকেল হয়নি, ফুল নিয়ে আসেনি কেউ
কতদিন
সন্ধ্যা হয়নি, রাত্রি হয়নি
কেবল ক্লান্তি
এসেছে, নিঃশব্দে ইঁদুরের মতো
কেড়ে
নিয়ে গেছে নদীর জলে পা ভেজানো দুপুর,
অচেনা
মাঠের ভিজে ছুঁয়ে আমাদের গোল,
পুরানো
গন্ধ মাখা শীত, সব কেড়ে নিয়ে
ক্লান্তি
ছুঁয়ে আছে আমাদের চরণ
আমাদের
মরণ পর্যন্ত, স্মৃতির মরণ পর্যন্ত, ব্যক্তিগত স্মৃতির মরণ পর্যন্ত।
সেই ক্লান্তি
ছুঁয়ে আছে আমাদের চোখ
যে চোখে
একদিন স্বপ্ন ছিল, সেই চোখ খুবলে নিয়ে গেছে নিঃশব্দে ইঁদুরের দল
মাঠে মাঠে
আজ ক্লান্তি ছড়িয়ে আছে আগামীর শস্যের আবাদ
পথে পথে
আজ ক্লান্তির রাত
অক্লান্ত
এই সভ্যতা
রক্তশূন্য
এই মাঠে, উড়ছে শীতলতা, বৈরাগ্যের বিপরীতে
আমাদের
বাকপথে শুষ্কতা বন্ধ করেছে যাবতীয় যোগাযোগ
আমরা ক্রমশ
কক্ষপথ থেকে কক্ষপথ বদলাতে বদলাতে
আদিগন্ত
আদিম শূন্যতার মাঝে মৃতপ্রায় নদীর মতো,তবু মৃত নয়
বিন্দু
বিন্দু আগুন বৃক্ষের মতো, তবু ছায়াশূন্য এই রাজপথ
রাজা কোথায়,
কোথায় তার কাপড়, কোথায় তার মৃত ঘোড়ার দেশ
যুগান্তের
যুদ্ধের পরেও কিভাবে অক্লান্ত এই সভ্যতা, কোথা থেকে আসে অমৃতের বানী
কোথা থেকে
আসে এই অমৃতের পানি
আদিগন্ত
এক রক্তশূন্য মাঠ, শীতল হাওয়া মুছে দিচ্ছে আমাদের যাত্রাপথ, আমাদের ইতিহাস