বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৯

বৈশাখী চক্রবর্তী


বৈশাখী চক্রবর্তী

পর্ণমোচী

ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে গোপন কথার ওজন
ক্রমাগত ভীড় করছে ঝরা পাতা স্মৃতির সরণি
নিঃশব্দ সপ্ততন্ত্রী, আলোর কোলাজ
রোদ্দুর চশমার কাঁচে বাস্পীয় ব্যালকনি

নিমফুলের ঝিম উপহাসের পিটুলী
উৎসুকে ঝুঁকে আসে রেলসেতুর এপারে
কুয়াশা মন্তাজে বসন্তের করুণ অপলাপ
সারারাত উপবাসী এক চাঁদের কাহিনী।

ক্রমাগত আভিধানিক বসবাসী কথোপকথন  
কুমারীর সপ্তম স্বর্গ কল্পনার অবুঝ অরণি
ক্রমাগত দীর্ঘতর আমাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য
ফেলে গেছে সারণিক রাত্রি রাগিনী।






মুক্তি

প্রতিটা কষ্টই আসলে এক একটা মৃত্যু।
রক্তমুখী নীলার নীলচে আলো
লাল আলো আসরে
কাল্পনিক ঘষাকাঁচের আবছায়া
ছেড়া স্লিপারের সেফটিপিনের মত
ভাঙনের ভগ্নাংশ  বিঁধতে থাকে শরীরে কোথাও।
শহরে কান্নার জল জমছে
পাগলীটা চিৎকার করে বলছে
—‘দুর হ,দুর হ,শুওরের বাচ্চা’
ঘেও কুকুর কাম যন্ত্রনায় কাঁদছে
কুকুরিও
মৃত্যুর কাছে জমা আছে সরল মুক্তি।







অবশেষ

ধুলোর গভীর থেকে সরে এলে চলমানতার দিকে
টের পাই মেঘের অজ্ঞাতবাস ভাঙে
ভাঙে চিরাচরিত মৃদু চমকে অন্ধপরিমাপ
হরিণীর ত্রস্ত চলন
ভাঙে কালকেতু সময়কাল ।
বহুদূর থেকে ভেসে আসে মৃত্যুর অমল আলো
পাথরের কুচি ভেঙে ভেঙে পূর্ণ করা
জীবনের ন্যুব্জ হাহাকার
প্রান্তরেখা জুড়ে ভাঙে বাউলাঙ্গের নীলাভ পাখি
মুছে যায় নান্দনিক পাঠকৃতি
সমস্ত সানাই শেষে পড়ে থাকে ভোর প্রসব করা অনন্ত রাত্রির গান
মৌন থাকেন অনঙ্গদেব ভগ্ন মন্দিরে।