দেবাশিস
ঘোষ
জ্বর
গাছে
গাছে এখন জ্বর
তাঁদের
চুলের গোছে মৃদু মৃদু জ্বর গন্ধ ভেসে আছে
তাঁদের
রক্তিম ফলে সারা রাত কষ্ট হাঁসফাঁস
অসুখ
ছড়িয়ে যায় হাইওয়ে থেকে উঁচু আকাশে আকাশে
মেঘেদেরও
ঘরে আজ চাঁদ ওঠেনি
রান্না
চড়েনি আজ রাতে
মায়ে
ঝিয়ে শুয়ে আছে অভুক্ত শরীরে
নীচে
নদী ও ঝিলের মুখ পুড়ে গেছে
চিত্তদার
চায়ের দোকানে থেমে গেছে গেলাস চামচে ওঠা ঝড়
ঠিকানা
বদলে তার ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতাল
আলো
নিভে আসার আগে চিত্তদা
হয়তো
ভেবেছে সেখানে নিজের এক চায়ের দোকান
কে
জানে কেমন চা বানায় এখানে
অজানাই
থেকে গেল তাঁর
যেমন
অজানা থেকে যায় যে মেয়েকে ট্রেনে দেখা শুধু একদিন
যেমন
অজানা থাকে ছোটখাটো মেয়েটি সেদিন
চোখ
ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছেলেটিকে ঠিক কি কি বলেছিল
কিংবা
আমার সেই বন্ধুটি সেদিন ট্রেনে বসার জায়গা পেয়েছিল কিনা
জানা
আর অজানার মাঝখানে শুয়ে থাকে অনন্ত জল
শিল্পী
প্রতিটি
শিল্পের গায়ে ঘামের গন্ধ পাওয়া যায়
রাত
জাগা শিল্পীর চোখ, পায়ে তাঁর সস্তার প্লাস্টিক চটি
শিল্প
দাঁড়ায় তাঁর যাবতীয় উদ্ধত সুন্দরে
আসলে
সে সস্তার প্লাস্টিক চটি নয়
সাতদিন
পরে থাকা জামা প্যান্ট নয়
আসলে
সে এলিয়েন
বাজারের
ব্যাগে তাঁর লুকিয়ে থাকে স্বর্গের টুকরো
আসলে
সে আমাদের কখনোই নয়
দয়াপরবশ
হয়ে কে যেন পাঠিয়ে দেন শিল্পীকে
আমাদের
ধুলোময় জীবন যাপনে
হিউয়েন
সাঙ
এন
আর এস হাসপাতাল চত্বর।
নক্ষত্র
ছায়ায়
ক্লান্তি
বিছিয়ে দিচ্ছে খবর-কাগজ ;
রোগীদের
স্বজনেরা ঘেমো কালো মুখ,
খোঁজে
ঘুম
দূরত্বের
সুতো ছেড়ে ছেড়ে এ শহরে
ধূলিয়ান,
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলার।
রক্ত,
ওষুধ, আর কান্নারা জেগে আছে সারারাত।
এখানে
আপনি কেন হিউয়েন সাং!
পরিপাটি
বোঝা পিঠে জ্বালানী কাঠের,
হাঁটু
অবধি মোজা দিয়ে ঢাকা,
তলোয়ার
যুগ শেষ তাই হাতে লম্বা লাঠি
খটখটে
শহরের মেঝে ঠুকে ঠুকে
এরকম
অসময়ে কেন!
দুয়েক
পশলা ঘুরে ইতস্তত হাসপাতাল চত্বর,
অন্ধকারের
কোনো এক আড়াল তাকে শুষে নেয়।
ওষুধের
গন্ধে, ঘুমের চাদর গায়ে
জেগে
থাকে অর্ধেক আকাশ।
দূরে
ফ্লাইওভার ধরে হেঁটে
ভাগীরথী
পার হন হিউয়েন সাঙ।
একটি
নক্ষত্র থেকে আরেক নক্ষত্র জন্ম
হেঁটে
হেঁটে চলে যান হিউয়েন সাঙ।
ভারত
বৃত্তান্ত ফের পাক খায় কুমোরের চাকে