শর্মিলা
ঘোষ
ধ্রুবতারা
ধ্রুবতারার সাথে উত্তরমুখী হয়ে,মেঘদূরত্ব
রেখে চলেছি
মাপমতো ঋতুরা আসে যায়
সংসার বলয়ে চব্বিশ ঘন্টা
পলকে কেটে যায়
শীতফুল ফোটে, শীতল প্রেম
আরো শীতল হয়
রাঙা বসন্ত কোকিলের সাথে
বয়ে যায় নদীর মতো
হরেকরঙের ছোঁয়া পোষাকে
মনে দেহে লাগে
ধ্রুবতারায় লাগে না
আমি বেমানান সুখ মানানসই
ভাবে উদযাপন করি
ধুমকেতুর মতো স্বপ্ন ছুটে আসে
পৃথিবীর দিকে
তারাখসা রাত পড়ে থাকে
অতল আটলান্টিক এর বুকে
আমি ঘ্রাণ নিই নতুন বইয়ের
মতো, আমার মলাট
দেওয়া
সংসারে জীবনানন্দের ধানসিড়ি বেয়ে
ওঠা নামা খেলা ,
আমি ধ্রুবতারাকে স্থির রেখে বছর
দিন মাস এলোমেলো
সুগন্ধী মাখি;
ঈদের চাঁদ
সমস্ত শূন্যতার বুকে উড়িয়ে
দিয়েছি স্বাধীনতার ধ্বজা
একটা প্রতিশ্রুতি পূরণের
ক্যানভাসে কিছু তুলি রঙ
আর জীবন্ত আগ্নেয়গিরি ,
নাভিমূলে এঁকেছি ঈদের চাঁদ
কতটা ত্যাগ থাকলে বেঁচে থাকে
ভালোবাসা;
পরিযায়ী হিংস্রতা মৃত্যু বুকে
নিয়ে দাবার চাল দেয়,
ভালোবাসা বেঁচে থাকে
সমস্ত রাজা উজিরকে কিস্তিমাত করে;
ওতটাও সহজ নয় পরিসীমা বেঁধে
দেওয়া
ঋতুযাপনের পৌরাণিক ইতিহাস খনন
করলে
সেইরাতটুকু জেগে থাকে একটা
সরকারি হাসপাতাল
না হওয়া মৃত্যু ও কিছু প্রেম ;
বঁড়শি
অনন্তের বুকে বঁড়শি দিয়ে
দাঁড় টানে ওরা
কালো পাহাড়ের গায়ে
ওদের ভাঙ্গা মাস্তুল সিঁধ কাটে ;
কিছু বেলোয়ারী সুখ পানির
মতো বয়ে যায়
নীল ক্যানভাসের পিছনে
পাইকারি দরে বিক্রি হয়
মাঝিমাল্লার গল্প ।
সূর্য ডুবে গেলে মানবজমিনে
বাঁধা ঘরে প্রেয়সী সাঁঝবাতি
জ্বালে,
কামিন খাটা শরীর সন্ধ্যে ধরা
নদীর থেকেও আরো প্রশ্নবোধক!
সায়নাইড
বিশ্বাসের পারদে ছ্যাঁকা লাগলে
জ্বর একশো দুই ডিগ্রি অতিক্রম
করে
আমি নীলকণ্ঠ পাখির মতো
বিষ গলায় ধারণ করি
ভূমিষ্ঠ হওয়া সংখ্যা একগুঁয়ে সময়
ধরে হেঁটে যায়
আর স্বপ্ন বেচা বাঁশিওয়ালা
বিবেকের দামও হিসাব করে ;
আমি অবাক হই না আর
ভাবি এই তো ভালো এরপর
আকাশ দেখতে গেলেও ট্যাক্স দিতে হবে,
প্রতিশ্রুতির কাগজে স্বাক্ষর ছিল
কিন্তু অক্ষর বসাতেই ভুলে গেছি যে!
বিশ্বাসের অক্ষরের নাম সায়নাইড।
প্রজাপতি রঙ
বুকের ভেতর যে নুড়ি গুলো রেখেছি
প্রজাপতি রঙের
তারা ডুবে থাকে অতল জলে
ভারী বোঝা নিয়ে ,
গাঢ় তাদের হৃদকম্পন
ধুকপুক করে তরঙ্গের সাথে
অসম তাল মেলায়,
রঙিন এলোমেলো নিঃসঙ্গতার
ইতিহাস পাথরের বুকে চাঁদের
বুড়ির মতো চরকা কাটে ,
গভীর জলে ঢেউ স্ফটিক হয়ে
রঙ বিলোয় প্রবালের গায়ে।