বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

দেবব্রত রায়



দেবব্রত রায়

কন্ট্রাডিকশান অর্থাৎএকটি মহৎশিল্প

মশাদের শোষক- যন্ত্রটি শরীরে
ফোটানোর সাথে-সাথে সঠিক
জায়গায় চপেটাঘাতটি করতে পারছি
বলেই,বিলক্ষণ বুঝতে পারছি,আমার
নার্ভাস-সিস্টেমটি এখনও যথেষ্ট
সুস্থ এবং সাবলীল আছে।
কিন্তু,কিছু কিছু হুল ও শোষক- নল
শরীরের এমন-
সব জায়গায় ফুটছে সেখান থেকে ব্রেনে
এবং ব্রেন থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় খবর
পৌঁছাতে পৌঁছাতেই, সব ফোঁ-ফাঁ।
আর,যেগুলি মরছে তাদের পেট ফেটে
বেরিয়ে আসছে   জীবন+অজিত+
অমরিশ+ শক্তি কাপুর এবং, উত্তম-অমিতাভের   একটি জটিল চটচটে যৌগ!
সমস্যা হলো,এই সব যৌগ সংক্রমিত চটচটে
আঙুলগুলি ক্রমশ আলিবাবা ৪০ চোরের
মর্জিনা আব্দুল্লা-ই  পরিণত হয়ে উঠছে।

একটি নতুন সম্পর্ক বিন্যাসের সিকোয়েন্সে
প্রেম চোপরা অমরিশ পুরির দল
যখন গুরুমস্তিষ্ক থেকে তরঙ্গায়িত হয়ে তর্জনীর দিকে নেমে আসে
ঠিক তখুনি আঙুলগুলি সিদ্ধান্তের কেন্দ্রিকতাকে
সেল্যুট জানিয়েও গেয়ে ওঠে
মে- দিনের কোরাস-সংগীত!






অন্ধজন

পৃথিবীর মানচিত্র আঁকা হলে
তার আউট লাইনটি নীলরঙের
এবং,পৃষ্ঠদেশটি লালরঙের হওয়ায় বাঞ্ছনীয়
কারণ,অত্যাচার আর,রক্তপাতহীন
কোনো ভূখণ্ডের খবর গীনেসবুকের
তথ্য-ভাণ্ডারেও নাকি, দুষ্প্রাপ্য।

নীল এবং লাল-বর্ণ দুটি
আদৌ অত্যাচার ও রক্তপাতের
সমার্থক কিনা,সে- প্রশ্নে একাধিক
বিতর্কসভা-র আয়োজন করা যেতে-ই
পারে কিন্তু, এই রঙ-দুটির আত্মীয়তা যে
বেশ ফেবিকল জাতীয় মজবুত সে- বিষয়ে
দক্ষিণারঞ্জন বাবুও আশাকরি,একশো-শতাংশ
সহমত।তা না-হলে,উনি-ই বা কেন লাল কমলের
পাশে নীলকমলকে রাখবেন!
দুর্ভাগ্যবশত যারা লালকমল
নীলকমলকে চেনেনা,
এবং নিজেদের আসেপাশে
রাক্ষস খোক্কস দেখতে পায়না
তাদের কারোর কারোর আবার,
লালরঙ দেখলেই  হিস্টিরিয়াজনিত
খিঁচুনি আরম্ভ হয়ে যায়
আর,নীলরঙ দেখলে কারোর কারোর
মনে পড়ে যায় কোনো বিষক্রিয়ার
জঘন্য জন্ম-ইতিহাস!






লাল রশ্মিটি-ই জানে

একটি অন্ধকারের ভেতর
আরও একটি অন্ধকার প্রচ্ছন্ন
থাকে একান্ত-ই ব্যাসার্ধের মতো।
সেখানে দেবদাসের চন্দ্রমুখি থেকে
গোলগাল চন্দ্রমুখি আলুটিরও
প্রবেশ নিশেধ!
(কারন),তাদের সাথে চন্দ্র শব্দটি
যেহেতু জড়িয়ে আছে।
আর,চাঁদ নাকি সূর্য-বন্দনার
মাধ্যমে-ই প্রতিদিন নিজের
মুখ প্রক্ষালন করে
( জবাকুসুম ব্র‍্যান্ডেড দন্তমঞ্জন দিয়ে।)

যদিও,জবাকুসুমের মতো লাল রংটিতে
কোনও কোনও অন্ধকারে 
অ্যালার্জি ঘটিত আতঙ্ক জন্মাতে-ই পারে
কিন্তু, বুঝতে হবে,লাল রশ্মিটি-ই
একমাত্র জানে অন্ধকারের সমস্ত
কালোকে কীভাবে মুছে দিতে হয় !







ব্যালকনি

বস্তুত,একটি জামা না থাকলে
তার পকেটের অস্তিত্বটিও যেমন অলীক
ঠিক তেমনি কোনও ঘর- বাড়ি ব্যতিত
একটি ব্যালকনি।
আবছায়া অথবা, সম্পূর্ণ 
আলোক-সম্পাতহীন অন্দরমহল
আর,গলি-ঘুঁজির করিডর
আছে বলে-ই,
একটি খোলাহাওয়ার ব্যালকোনি
দিব্বি আকাশমুখো হয়ে
দাঁড়িয়ে থাকে আজন্মকাল।







পোকাদের মুখোশপ্রীতি

আলো ও আঁধারির যতটুকু মেলামেশা হলে
একটি রেডলাইট-জোন তৈরি  হয়,
তারও চেয়ে ঈষৎ অন্ধকার-নিরালায়
মেয়েটি দাঁড়িয়ে ছিল একা
কুয়াশাচ্ছন্ন এক দ্বীপের মতো।
(আর), সেই বিষণ্ণ মেরুশীতে
অন্ধকারের কিছু  কীট
মেয়েটিকে লুঠের মাল ভেবে তার উন্নত পীন-
পয়োধর ক্ষীণ কটী-র জ্বোরো জ্বোরো ওম নিতে
একটি পাহাড়ি বাজের মতো ছো মেরেছিল!
অথচ, কয়েকটি লালায়িত-জিভ,
নখ আর, দাঁতগুলি সন্ত্রস্ত
ফিরে এসেছিল দ্রুত।

আসলে, মেয়েটির শরীর জুড়ে
মাধুরীর গজগামিনী পোট্রেট  থাকলেও,
তার মুখমণ্ডলে আঁকা ছিল অভাবি সংসারের
মতো-ই কয়েকটি ক্ষতর ট্যাটু!

যদিও, মুখোশের ক্রীতদাস পোকারা
মুখোশ বিহীন মুখ দেখেনি কখনো
আর, সেই "বেহায়া" মেয়েটিরও
জানা ছিল না ক্ষতচিহ্ণ ঢেকে রাখার
কোনও মায়াময় মুখোশের কথা!