শংকর
ব্রহ্ম
ঘোর সন্ধ্যাবেলা
বালক জানে না
খেলা
তাই ঘোর সন্ধ্যাবেলা,
থাকে যে কী
ঘোরে -
একা পথে ঘোরে
সঙ্গী খুঁজে
ফেরে।
ঘরে তার মা
বোন নেই?
আছে আছে সবই আছ-
মা-ও আছে, বোনও আছে
সকলেই ব্যস্ত
নানা কাজে
যে যার মতন
বালকের সঙ্গ দেবে
কেউ নেই আর।
বালক জানে না
খেলা
তাই ঘোর সন্ধ্যাবেলা,
থাকে গাঢ়
ঘোরে -
সঙ্গী খুঁজে ফেরে,
পথে, একা ঘোরে।
তাই দেখে দূর
থেকে -
বালিকার
বুক শুধু
পোড়ে।
কাছে তার
যাবার যে
নেই অধিকার
সামাজিক
নিষেধাজ্ঞা তাকে
ঠেলে রাখে
দূরে।
পথ যদি ডাক দেয়
এ পথের শেষ
নেই কোন,
সুতরাং চল
যাই দুজনেই -
তুমি আমি, জন্ম আর মৃত্যু পাশাপাশি।
যখন মেলেছে
পাখা নিশাচর পাখি
ক্লান্ত
ডানায় রেখে জেদ,
মুমূর্ষ
রোগীর মত -
তবু অর্থ
চেতন টেবিলের কোনে,
কেন তুমি
মাথা গুঁজে পড়ে আছ একা ?
অস্থির
রাত্রি এলে
ঠাঁই নেব গাছের ছায়ায়
ফল ফুল যাই
পাব,
তাই দিয়ে পেটটা ভরাব।
আর পথ শুধু
পড়ে থাকবে একা
যুক্তিহীন ঈশ্বরের মতো,
যে কাউকে
ডাকবে না
সকলেই খুঁজে যাবে যাকে।
অনিবার্য যা
ঘটার,
ঘটবে তা জানি
সে কথা না ভেবে আর মনে ,
শুধু চল, চল যাই সাড়া দিয়ে তাকে -
পথ যদি অকারণও ডাক দিয়ে থাকে ।
নারী তোমাকে
এক.
যদি পশু হয়ে
জন্মাই আবার
শুধু তোমাকেই
ভালবাসব নারী
কিংবা পাখি
হয়ে যদি
শুধু তোমাকেই
ভালবাসব
অথবা কীট হয়ে
যদি
তবু তোমাকেই
নারী
আর পতঙ্গ হলে?
জানি না -
জা নি না।
দুই.
কবির তৃষ্ণা
তুমি মেটাতে পার না
কবি সেটা
জানে,
তবু তোমাকে
নিয়েই কবি
মেতে থাকে
সারাক্ষণ মনে ।
নারী, তুমি তো গোলাপ নও
কবি সেটা জানে,
তবু গোলাপের
উপমায়
সে তোমাকে
কবিতায় সাজায়।
চাঁদেও কলঙ্ক
জমে -
তবে আর তুমি
কোন ছাড়?
তোমাকে যে
ভালবাসে সে-ই জানে,
ভাল মন্দ কত
গাঁদ জমে থাকে
ভিতরে তোমার।
এ সব জানার
পরেও
কেন তবু তোমাকেই নারী
কবি এত ভালবাসতে পারে?
জা নি
না - জানি না।
পরমান্ন
পরমান্নে লোভ
নেই এ কথা বলব না
পরমান্ন
শব্দটা শুনলেই
মুখ ভরে জমে ওঠে লালা
আমি শালা
ভিখিরিরও অধম ভিখারী
দিন শেষে এক
থালা ভাত জোটে যদি
রাজভোগ বলে
তাকে ভুল হয়ে যায় ভারি
পরমান্নে লোভ
নেই
এ কথা বলতে পারে কারা
লক্ষ্মীকে
ধরে বেধে , ঘরে রাখে যারা
দিন শেষে
পান্তা ভাতে
একটু লবন আর লঙ্কা জুটে গেলে
পরমান্ন বলে
হয়ে যায় ভুল,
বিলকুল
আনন্দে চোখ
দুটি,
ভরে ওঠে জলে।
আমার কবিতা
অনেকেই নিষেধ
করেছে
অথচ আমি তা
শুনিনি,
কবিতা হে
প্রেয়সী আমার
তোমাকেই
সর্বস্ব পণ করে
আমি এক জুয়ায়
মেতেছি।
অনাহারে কেটে
গেছে দিন
তবু আমি
তোমাকে ভুলিনি,
অথচ একদিন
যারা খুব
প্রিয়জন ছিল
তারা সব
আমার এই
দুর্মতি দেখে,
আমাকে পাগল
ভেবে
করুণা করেছে,আর সব
ধীরে ধীরে
সরে গেছে দূরে,
আমাকে মুক্তি দিয়ে
নির্জন করেছে।
যদি আমি
মৃত্যুরও
মুখোমুখি হই,
তোমার কারণে -
হে প্রেয়সী
কবিতা আমার,
তবুও, তোমার আনত বুকে
ঠোঁট রেখে
মরে যেতে
রাজী আছি আমি।